জামালপুরের সরিষাবাড়ী যমুনা সারকারখানার ৩০ কোটি টাকার সমপরিমাণ ইউরিয়া সার আত্মসাতের অভিযোগে ব্যবস্থাপক সহ ৩ জন বরখাস্ত।
বিসিআইসি’র চেয়ারম্যান শাহ মো. ইমদাদুল হক স্বাক্ষরিত আলাদা আলাদা অভিযোগ পত্রের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ওয়ায়েছুর রহমান (বাণিজ্যিক), সাবেক মহা-ব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক) খোকন চন্দ্র দাস ও রসায়নবিদ নজরুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিসিআইসি।
জানা যায়, জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার তারাকান্দিতে অবস্থিত যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানী লিমিটেডের বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক ওয়ায়েছুর রহমানের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে অবহেলা, স্টাফদের সাথে অসদাচরণ, চুরি, আত্মসাৎ, তহবিল তছরুপ এবং প্রতারণার দায়ে অভিযুক্তসহ প্রায় ৩০ কোটি ২৬ লক্ষ ২৯ হাজার ৬৩৬ টাকার সমপরিমাণ সার আত্মসাতের অভিযোগ পান বিসিআইসি।
এর প্রেক্ষিতে গত ০৯/০৯/২০২১ তারিখের স্বারক নং ৩৬.০০.০০০০.০৬২.৯৯.০৫৬.২০.৩০১ মুলে যমুনা সারকার খানায় অভিযোগের তদন্তের নির্দেশনা প্রদান করে বিসিআইসি। এর প্রেক্ষিতে গত ২৬/০৯/২০২১ তারিখ স্বারক নং ৩৬.০১.০২৭.০১ ০২.৪৫৪২.২০২১/১৮২ দ্বারা বিসিআইসি প্রধান কার্যালয় হতে ৬ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে। বিসিআইসির তদন্ত কমিটি সরেজমিন তদন্ত শেষে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবর রিপোর্ট দাখিল করেন।
বিসিআইসির তদন্ত কমিটি ২৯ /০৯ /২০২১ তারিখে জেএফসিএল এর উৎপাদিত সারের পরিসংখ্যান/ মজুত হিসাব সংগ্রহ করে। তথ্য অনুযায়ী ২৯-০৯-২০২১ তারিখে জেএফসিএল এর উৎপাদিত ব্যাগ সারের মজুদের পরিমাণ ছিলো ৩৭,৫৭৪.৭০ মেট্রিক টন ও লুজ সারের পরিমাণ ছিলো ৫১,৮৬৬.৬০ মেট্রিক টন।
কিন্তু বিসিআইসি তদন্ত কমিটি ২৯/০৯/২০২১ তারিখে সরেজমিনে জেএফসিএল এর উৎপাদিত ব্যাগ সারের মজুদের পরিমাণ পান ২১,৩১০.৩৫ মেট্রিক টন এবং লুজ সারের পরিমাণ পান ৫১,৬৪৯.৯২ মেট্রিক টন। হিসেব অনুযায়ী ব্যাগ সার ১৬,২৬৪.৩৫ মেট্রিক টন, এস এফ সি এল এর সার ১২১.১০ মেট্রিক টন এবং লুজ সার ২১৬.৬৮ মেট্রিক টন সহ মোট ১৬,৬০২.১৩ মেট্রিক টন সার কম পান তদন্ত কমিট। যার অনুমান মূল্য প্রায় তেইশ কোটি চব্বিশ লক্ষ উনত্রিশ হাজার আটশত বিশ টাকা।
২৯/০৯/২০২১ তারিখে তার স্বাক্ষরকৃত লিখিত তথ্য অনুযায়ী, জেএফ সিএল এর ০২ নং গোডাউনে রক্ষিত কাফফো সার ১,১১৩.০০ মেট্রিক টন এস এফ সি এল এর সার ১২১.১০ মেট্রিক টন এবং আমদানি সার ২,৭০৮.০০ মেট্রিক টন মজুত রয়েছে। তার প্রদত্ত তথ্যের সাথে বাস্তব গণনায় মিল পাননি তদন্ত কমিটি ।
তদন্ত কমিটি জেএফসিএল এর রক্ষিত আমদানী সার ১,৫০৮,০০ মে,টন ও কাফকো সার ১,০২৩,০০ মে, টন সহ সর্বমোট ২৫৩১,০০ মে.টন সারের হদিশ পাননি। জেএফসিএল এর ১৯,১৩৩.১৩. মেট্রিক টন সার আত্মসাতের দায়ে যমুনা সারকারখানার বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক ওয়ায়েছুর রহমানকে অভিযুক্ত করেছে তদারকি কমিটি।
ফলে যমুনা সারকারখানার ৩০ কোটি টাকার সমপরিমাণ ইউরিয়া সার আত্মসাতের অভিযোগে বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক ওয়ায়েছুর রহমান,সাবেক মহা-ব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক) খোকন চন্দ্র দাস ও রসায়নবিদ নজরুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাষ্ট্রিজ কর্পোরেশন বি সি আই সি।
অভিযোগের বিষয়ে ওয়ায়েছুর রহমান জানান, যমুনা সার কারখানা থেকে সার আত্মসাতের কোনো সুযোগ নেই। কারখানায় গোডাউন না থাকায় বিভিন্ন সময়ে রোদ-বৃষ্টিতে বিপুল পরিমাণ সার নষ্ট হওয়াতে প্রকৃত হিসেবে গড়মিল হয়েছে। যথা সময়ে আমি কর্তৃপক্ষের কাছে আমার বক্তব্য প্রদান করবো।
ইবাংলা /টিআর /২ ডিসেম্বর ২০২১