পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন ডা. মুরাদ
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান সচিবালয়ে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার পর তিনি এই পদত্যাগপত্র পাঠান। কিছুক্ষণের মধ্যে তা মন্ত্রপরিষদ বিভাগে জমা দেয়া হবে।
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর দফতরের ওই কর্মকর্তা বলেন, সোমবার (৬ ডিসেম্বর) মুরাদ হাসান চট্টগ্রামে গেছেন। এরপর থেকে তাঁর সঙ্গে আর কোনো কথা হয়নি। মুরাদ হাসান এখন কোথায় আছেন, তা তিনি জানেন না।
অশালীন, শিষ্টাচারবহির্ভূত ও নারীর প্রতি চরম অবমাননাকর বক্তব্য দেওয়ায় মুরাদ হাসানকে মধ্যে মঙ্গবার (৭ ডিসেম্বর) পদত্যাগ করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনিকে নিয়ে প্রতিমন্ত্রীর করা অশ্লীল মন্তব্যকে ঘিরে কয়েক দিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র সমালোচনা হচ্ছিল। এর মধ্যেই সোমবার (৬ ডিসেম্বর) ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রতিমন্ত্রীর ফোনালাপের একটি অডিও ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে একজন চিত্রনায়িকার সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি নোংরা ও অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করেন। একই সঙ্গে তাঁকে হুমকিও দেন। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
সরকার ও দলের একাধিক সূত্র বলছে, ফাঁস হওয়া ফোনালাপ ও খালেদা জিয়ার নাতনি জাইমা রহমান সম্পর্কে দেওয়া বক্তব্য মুরাদ হাসানের কি না, তা খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিকেলেই প্রধানমন্ত্রী নিশ্চিত হন ফাঁস হওয়া ফোনালাপ ও জাইমা রহমান সম্পর্কে দেওয়া বক্তব্য মুরাদ হাসানেরই।
এরপর সোমবার (০৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফোন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে। ফোনে ওবায়দুল কাদেরকে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দেন মুরাদ হাসানকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে নতুবা তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়া হবে—এই বার্তা পৌঁছে দিতে। রাত আটটার দিকে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা মুরাদ হাসানকে পৌঁছে দেন ওবায়দুল কাদের।
সংবিধানের ৫৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ‘প্রধানমন্ত্রী যেকোনো সময় কোনো মন্ত্রীকে পদত্যাগ করিতে অনুরোধ করিতে পারিবেন এবং উক্ত মন্ত্রী অনুরূপ অনুরোধ পালনে অসমর্থ হইলে তিনি রাষ্ট্রপতিকে উক্ত মন্ত্রীর নিয়োগের অবসান ঘটাইবার পরামর্শ দান করিতে পারিবেন।’
সরকার ও আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, মন্ত্রিত্ব হারানোর পাশাপাশি দল থেকেও বাদ পড়তে পারেন মুরাদ হাসান।
২০১৯ সালের মে মাসে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে মুরাদ হাসানকে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী উপজেলা) আসনের সাংসদ। তাঁর বাবা প্রয়াত মতিউর রহমান তালুকদার জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।
ইবাংলা /টিআর/ ৭ ডিসেম্বর ২০২১