শহরের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী দেড়শতাধিক বাসের রুট পারমিট বাতিলের সুপারিশ করেছে বিআরটিএ। একাধিকবার অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের মতো অপরাধ করায় ১৬৫টি বাসের রুট পারমিট বাতিলের পাশাপাশি আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার এ সুপারিশ করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ।
বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, ২৫ কম্পানির অধীনে রাজধানীতে চলাচলকারী এসব বাসের রুট পারমিট বাতিলসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে এরই মধ্যে আঞ্চলিক পরিবহন কমিটির (আরটিসি) কাছে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে। রুট পারমিট বাতিলের সুপারিশ প্রসঙ্গে বিআরটিএর এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এর আগে শাস্তি হিসেবে কোনো বাসের রোড পারমিট বাতিলের সুপারিশ করা হয়নি। এবার আমরা চাই, এই শাস্তির মাধ্যমে দৃষ্টান্ত তৈরি হোক। প্রথমে বাস মালিক সংগঠনের নেতারা খুব বড় বড় কথা বলে অন্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন বললেও এখন অন্য কথা বলছেন।’
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ন কবির তপন বলেন, ‘যেসব বাস যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিয়েছে, তাদের জরিমানা করে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এক মুরগি কয়বার জবাই করা হবে? একজন মালিকের দু-একটা বাস থাকে। এভাবে রুট পারমিট বাতিল করলে কিভাবে চলবে। আমরা মালিক সমিতিতে সভা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’
৮ নভেম্বর থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা শুরু করে বিআরটিএ। অভিযানে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগের প্রমাণ মিললে সংশ্লিষ্ট বাসকে জরিমানা করা হচ্ছিল। একই অপরাধে কমপক্ষে তিনবার জরিমানা করা হয়েছে—অভিযানকালে এমন ২৫ কম্পানির প্রায় ১৬৫টি বাসের নাম পাওয়া গেছে।
বিআরটিএর বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা গেছে, যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে সবচেয়ে বেশি নিয়ম ভেঙেছে বসুমতি ১৬ বার, রাইদা ১৩ বার, পরিস্থান ১১ বার। এমএম লাভলী ও অনাবিল কম্পানি ১০ বার করে সরকারি নির্দেশনা লঙ্ঘন করেছে। এ ছাড়া আলিফ ৯ বার; লাব্বাইক আটবার; তুরাগ, বলাকা ও স্বাধীন সাতবার; প্রজাপতি, রজনীগন্ধা ও শিকড় ছয়বার; আকাশ, আজমেরী, মনজিল, প্রভাতি ও বনশ্রী পাঁচবার; আসমানী, প্রচেষ্টা, ভিক্টর, মিডলাইন, ডি লিংক, রাজধানী, গুলিস্তান-গাজীপুর পরিবহন, ভিআইপি বাস তিনবার করে নির্দেশনা লঙ্ঘন করেছে।
এর আগে বিআরটিএর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিআরটিএর পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি করা ২৫টি বাস কম্পানির বাসের তালিকা করা হয়েছে। তালিকায় গাড়ির নম্বর, অপরাধ সংঘটনের তারিখ ও জরিমানার তথ্য উল্লেখ করে রুট পারমিট বাতিলসহ আইনগত ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে। এরই মধ্যে আরটিসি কর্তৃপক্ষের কাছে তালিকা পাঠানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, অভিযানে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, রুট পারমিট না থাকাসহ নানা অপরাধে ৫৬টি বাসকে ডাম্পিংয়ে পাঠানো হয়েছে। বেপরোয়া গাড়ি চালানো ও সরকারি দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ায় পাঁচ বাসচালককে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
ইবাংলা /টিপি /১১ ডিসেম্বর ২০২১