নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মেয়র পদে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীকে নৌকা এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তৈমুর আলম খন্দকারকে হাতি প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহফুজা আক্তার প্রার্থীদের হাতে এসব প্রতীক তুলে দেন। এ ছাড়া মেয়র পদে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাসুম বিল্লাহ ‘হাতপাখা’, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির রাশেদ ফেরদৌস ‘হাতঘড়ি’, খেলাফত মজলিসের এ বি এম সিরাজুল মামুন ‘দেয়াল ঘড়ি’, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের জসীম উদ্দীন ‘বটগাছ’ প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন। তবে বেলা তিনটা পর্যন্ত অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল ইসলাম প্রতীক নিতে আসেননি।
প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, প্রতিটি নির্বাচনই ‘চ্যালেঞ্জিং’। এ নির্বাচনও এর বাইরে নয়। তিনি সব নির্বাচনকে গুরুত্বের সঙ্গে নেন। আগামী নির্বাচনে আপনার প্রতিপক্ষ শামীম ওসমান নাকি তৈমুর—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাঁর প্রতিপক্ষ সবাই।
১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হয়েছে নৌকাকে সামনে রেখে। সুতরাং এই নৌকা বিজয়ের প্রতীক। তাঁর সঙ্গে জনগণ আছে, জেলা আওয়ামী লীগসহ সবাই আছে। যাঁরা নৌকায় ভর করে বিগত দিনে নির্বাচনী বৈতরণী পাড়ি দিয়ে এসেছেন, তাঁরা কখনো নৌকার বাইরে যেতে পারবেন না। তাঁরা ঠিকই নৌকায় উঠে আসবেন।
আইভী আরও বলেন, গত তিনটি নির্বাচন সুষ্ঠু, সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচনও কোনো ঝামেলা ছাড়াই অনুষ্ঠিত হবে। এবারও কোনো ঝামেলা হবে না। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। জনগণ যাকে ভোট দেবে, সেই বিজয়ী হয়ে আসবে। তিনি তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘১৬ জানুয়ারি নির্বাচন শেষ হয়ে যাবে, তারপরও আমাদের এ শহরেই বসবাস করতে হবে। সুতরাং আমরা এমন কিছু করব না, যাতে নারায়ণগঞ্জের মান ক্ষুণ্ন হয়। আমরা উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন করব, আমরা সহনশীলতার সঙ্গে নির্বাচন করব।’
শামীম ওসমানের সহযোগিতা চাইবেন কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইভী বলেন, তিনি তাঁর বড় ভাই, সাংসদ। তিনি এমনিতেই সরাসরি প্রচারনায় আসতে পারবেন না। কিন্তু তিনিও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মী। মান অভিমান থাকতেই পারে। একটা দলের মধ্যে নেতৃত্ব নিয়ে প্রতিযোগিতা থাকতেই পারে। তবে তিনি নৌকার বাইরে যাবেন না বলে আশা করেন।
এদিকে প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, ২০১১ সালের নির্বাচনে দলের নির্দেশে প্রার্থী হন। এবারও নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। দলের সব নেতা-কর্মী তাঁর সঙ্গে রয়েছেন। তাঁর শক্তি জনগণ। জনগণ কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন পায়নি বলেই তিনি এবার প্রার্থী হয়েছেন।
তৈমুর আলম অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগ ও সরকারদলীয় প্রার্থীকে নিয়ে সাংসদেরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করে সমাবেশ করছেন। আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতাদের উপস্থিতিতে ওই সমাবেশে মাইক ব্যবহার করা হয়েছে। অনুমতি নেওয়া ছাড়া মাঠে সমাবেশ করা হয়েছে। প্রশাসন এ ক্ষেত্রে নীরব ভূমিকা পালন করছে।
তৈমুর আলম আরও বলেন, তাঁর শরীরে গুলির আঘাত রয়েছে। তাঁর বাড়িঘরে হামলা চালানো হয়েছে। তাঁর চেম্বার জ্বালানো হয়েছে। কিন্তু তিনি কোথাও কারো সঙ্গে কোনো আপস করেননি।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মতিয়ুর রহমান বলেন, সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে ১৪৮ জন এবং সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদে ৩৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ইবাংলা /টিআর/ ২৮ ডিসেম্বর