কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের পূর্বাঞ্চলে বাস্তুচ্যুত লোকজনের একটি শিবিরে মিলিশিয়াদের হামলায় কমপক্ষে ৬০ জন নিহত হয়েছেন। বুধবার ভোররাতে হামলাটি চালানো হয়। স্থানীয় একটি মানবাধিকার গোষ্ঠীর প্রধান ও শিবিরটির একজন বাসিন্দা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ কথা জানান।
তারা দুজনই জানান, ইতুরি প্রদেশের বুলের কাছে সাভো শিবিরে স্থানীয় সময় ভোররাত ৩টার দিকে হামলাটি চালানো হয়। এ হামলার জন্য সিওডিইসিও মিলিশিয়াদের দায় দিয়েছেন তারা। ইতুরি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জুলস নগোঙ্গো হামলাটি সিওডিইসিও চালিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন এবং প্রায় ২০ জন নিহত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার রাতে কঙ্গোর সেনারা ওই মিলিয়াদের খোঁজ পেয়েছিল, কিন্তু হামলাকারীরা ওই শিবিরে পৌঁছতে দিক পরিবর্তন করে তাদের পাশ কাটিয়ে যায়।
সাভো শিবিরের বাসিন্দা লোকানা বালে লুসা বলেন, প্রথম যখন চিৎকার শুনলাম তখনো আমি বিছানায়। বেশ কয়েক মিনিট ধরে গুলি চলল। আমি পালিয়ে গিয়ে দেখলাম অনেক টর্চের আলো আর লোকজন সাহায্যের জন্য চিৎকার করছে। তখন আমি বুঝতে পারলাম সিওডিইসিও মিলিশিয়ারা আমাদের শিবির আক্রমণ করেছে। আমরা ৬০ এরও বেশি মৃত ও গুরুতর আহতকে গুনেছি। আমাদের সত্যিই নিরাপত্তা দরকার কারণ আমরা আমাদের খামারে যেতে পারছি না এবং এখন আমাদের শিবিরেও আমাদের অনুসরণ করা হচ্ছে।
বাহেমা-নর্থ এলাকার মানবাধিকার গোষ্ঠীর সভাপতি চারিতে বানজা বাভি মৃতের সংখ্যা ৬৩ জন বলে জানিয়েছেন। নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল (এনআরসি) এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রাথমিক প্রতিবেদনগুলো থেকে প্রায় ৫৯ জন বেসামরিক নিহত ও ৪০ জন আহত হয়েছেন বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
নিহতদের মধ্যে ওই অঞ্চলে এনআরসির পরিচালিত একটি স্কুলের দুই শিক্ষার্থীও রয়েছে এবং হামলাকারীরা বন্দুক ও চাপাতি ব্যবহার করেছে বলে জানিয়েছে তারা। কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলের ভূমি ও প্রাকৃতিক সম্পদ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা চলছে। এখানে তৎপর বেশ কয়েকটি মিলিশিয়া গোষ্ঠীর মধ্যে সিওডিইসিও অন্যতম।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এই গোষ্ঠীটির যোদ্ধারা ইতুরিতে শত শত বেসামরিককে হত্যা করেছে এবং কয়েক হাজার বাসিন্দাকে তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য করেছে। তাদের আগের হামলায় বাস্তুচ্যুত লোকজন এসে যেসব উদ্বাস্তু শিবিরে আশ্রয় নিয়ে বসবাস করছে সম্প্রতি তারা সেই শিবিরগুলোকে লক্ষ্যস্থল করতে শুরু করেছে।
ইবাংলা/ টিপি/ ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২