বরগুনা জেলা প্রসাশকের চত্বরে তিন বোনের অনশন ভাঙালেন বরগুনা পুলিশ সুপার মোহম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন মল্লিক। এসময় তাদের খাবার খাইয়ে বিকেলে সরেজমিনে এসে তিনি তাদের একটি বসতঘরও উপহার দিলেন। বিরোধীয় জমির মেপেও দিয়েছেন।এছাড়াও তাদের পড়াশুনা,খাবার ও চিকিৎসার দেয়ার আশ্বাসত্ত করেছেন।
জানা যায়,বরগুনার বামনার গোলাঘাটায় দখল হয়ে যাওয়া নিজেদের জমি-জমা ও বশত ঘর ফিরে পেতে বরগুনা শহরে কাফনের কাপড় পড়ে অনশন কর্মসূচি পালন করেছে তিন বোন। নিজেদের বশত ঘর ও জমি ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।
এসময় প্রধানমন্ত্রী ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেন তারা। এরপরে বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে করেছেন বরগুনা পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর হোসেন মল্লিক।
সকাল থেকে বরগুনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের চত্বরে অনশনে বসেন তারা। এরা হলেন, বামনার গোলাঘাটা গ্রামের মৃত আবদুল রশীদের মেয়ে রুবি আক্তার (২৭) , জেসমিন আক্তার (১৮) ও মোসাঃ রোজিনা (১৬)।
জানা যায়, মা-বাবা মারা যাওয়ার পর ছোট দুই বোনকে নিয়ে চট্রগ্রামে চলে যান রুবি। সেখানে একটি পোষাক কারখানায় চাকরি করে দুই বোনকে লেখাপড়া করায় তিনি। এর কয়েক বছর পর ২০১৯ সালে নিজ বাড়িতে ফিরে দেখেন তাদের পৈতৃক সম্পত্তি দখল করে নিয়েছেন এলাকার প্রভাবশালীরা। এমনকি তাদেরকে বশত ঘর থেকেও বের করে দেয়া হয়। এরপর থেকে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা।
তিন বোনের মধ্যে বড় বোন রুপি আক্তার বলেন, মা বাবা মারা যাওয়ার পর একমাত্র ভাইও মারা যায়। আমার ছোট বোনেরা দুঃসম্পর্কের আত্মীয়ের বাসায় থেকে লেখাপড়া করত। তিন বছর আগে আমি বাড়িতে এসে দেখি আমাদের বাবার সকল সম্পত্তি আমার চাচারা এলাকার প্রভাবশালীদের জোগসাজসে দখল করে।
আমরা জমি বুঝে পেতে চাইলে তারা বলে আমাদের জমি নাকি নিলামে তারা কিনে নিয়েছেন। পরে উপজেলা ভুমি অফিসে গিয়ে জানতে পারি এজমির কোন নিলাম হয়নি।
রুবি আরও বলেন, বিষয়টি ইউএনও, উপজেলা চেয়ারম্যান, ও ডিসিকে জানালেও তারা আমাদের কোন সদুত্তর দিতে পারেনি৷ তাই বাধ্য হয়ে অনশনে বসতে হয়েছে। আমাদের দাবি ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ না পাওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চলবে। অবশেষে পুলিশ সুপার স্যার আমাদের বেদখল হওয়া জমি উদ্ধার করে দিলেন।
আর আমাদের বসবাস করার জন্য একটি ঘরও উপহার দিলেন। এছাড়াও সকল বিষয়ে খোজ খবর নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এবিষয়ে অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে বরগুনা পুলিশ সুপার মোহম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন মল্লিক বলেন, আমি তাদের তিন বোনের অনশনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের খাবার খাওয়াইয়ে তাদের নিয়ে সরেজমিনে এসে বেদখল হওয়া জমি উদ্ধার করে তাদের বুঝিয়ে দিয়ে। সেখানে তাদের বসবাস করার জন্য আমি একটি বসতঘর তুলে দেয়ার কাজ শুরু করেছি।
ইবাংলা/ ই/ ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২