কৌসুলিদের অবহেলার কারণে মামলার জট দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন (স্টেক হোল্ডার) হিসেবে দেওয়ানী ও ফৌজদারি উভয় বিষয়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় জিপি ও পিপিদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এমপি বলেছেন, বিচারক, জিপি, পিপি, আইনজীবী, আদালতের কর্মচারীসহ বিচার প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বপালনরত সকলকে নিয়েই কিন্তু বিচার বিভাগ। জিপি ও পিপিদের উদ্দেশে আনিসুল হক আরও বলেন, যে কোন পরিস্থিতিতে আদালতের নির্দেশনা পালন করে মামলা ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়াকে সর্বাত্মক সহায়তা করতে হবে।
আরও বলেন, ‘কোন কোন জিপি এবং পিপি বিভিন্ন অজুহাতে আদালতে সময়ের দরখাস্ত দাখিল করে থাকেন। সরকারি আইন কর্মকর্তা হিসেবে মামলা দ্রুত নিস্পত্তি করতে হলে আপনাদেরকে অবশ্যই আদালতের সময় ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সকল নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। আদালতে সঠিক সময়ে সাক্ষী হাজিরসহ নির্ধারিত তারিখে সাক্ষী পরীক্ষা করার ক্ষেত্রে আপনাদেরকে সচেষ্ট হতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোন ঢিলেঢালা বা গড়িমসি মনোভাব কাম্য নয়।’
আনিসুল হক বলেন, বিদ্যমান মামলা জট কমাতে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতির ওপর জোর দিতে হবে। তিনি বলেন, বিচার প্রার্থী জনগণসহ আইনজীবীদের বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতি ব্যবহারে উৎসাহ দিতে হবে। রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট কর্তৃক সরকারি কৌসুলী এবং পাবলিক প্রসিকিউটরগণের জন্য ভার্চ্যুয়ালি আয়োজিত ২৩ তম বিশেষ প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনকালে এ সব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্বে ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার এবং ইনস্টিটিউটের পরিচালক গোলাম কিবরিয়া বক্তৃতা করেন।
আইনমন্ত্রী আরো বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতাকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য ও শোষণ হতে মুক্তি এবং সার্বিক উন্নয়নের সোপান হিসেবে দেখতে চাইলে সর্বক্ষেত্রে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা অপরিহার্য।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্বাস করতেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ছাড়া ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। সে কারণেই তাঁর দেয়া সংবিধানে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা সুস্পষ্টভাবে বিধৃত করা হয়েছে। তবে, বঙ্গবন্ধু এমন এক স্বাধীন বিচার বিভাগের স্বপ্ন দেখেছিলেন, যেখানে বিচার প্রার্থী মানুষ স্বল্প খরচে, সহজে ও দ্রুত ন্যায় বিচার পাবেন।
আনিসুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে স্বাধীন ও বিশ্ব মানের বিচার বিভাগ গড়ে তোলার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, রাষ্ট্রের পক্ষে ওকালতি করার জন্যই সরকারি কৌসুলিদের নিয়োগ দেয়া হয়।
তাই সরকারি কৌঁসুলিদের দ্বারা যদি রাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষা না হয়, তারা যদি ঠিকমতো কাজ না করেন, বিচার প্রার্থীরা যদি ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হন, বিচার যদি বিলম্বিত হয়, তবে তা হবে দুঃখজনক।
ইবাংলা/ জেএন/ ৭ মার্চ, ২০২২