টানা ভারী বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে দেশের বিভিন্ন জেলা এখন বন্যার পানিতে ভাসছে। দেশেম ইত্তর-পূবাঞ্চল সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
এ বন্যার মূলত, ভারতের বৃষ্টির পানি ও দেশে টানা বর্ষণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। তবে এখনো রয়েছে দুই দেশেই ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস। যে কারণে সারা দেশেই বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহতার দিকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রোববার (১৯ জুন) সকালে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, রোববার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পাঁচ দিন আসাম ও মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টিপাত চলবে। এ ছাড়া বাংলাদেশেও আগামী ২৪ ঘণ্টা সিলেটসহ অধিকাংশ জায়গায় বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। এমন অবস্থায় বিশেষ করে সিলেট-সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতিকে আরও খারাপের দিকে নিয়ে যাওয়ার শঙ্কা বাড়িয়েছে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, সিলেট, সুনামগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় যে বন্যা চলছে, তা শুধু দেশের বৃষ্টিপাতের ওপরই নির্ভর করছে না। কারণ, বৃষ্টি ছাড়াও পাহাড়ি ঢলের পানিও প্রবেশ করছে। এই ঢল নেমে আসছে আসাম ও মেঘালয় থেকে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সহকারী প্রকৌশলী প্রীতম কুমার বলেন, কিছুদিন ধরেই বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অনেক বেশি। বৃষ্টি কমে গেলে পানিও কমে যাবে। তাছাড়া, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে এ বছর ইতোমধ্যে প্রায় চার হাজার ৪০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, মাস কিন্তু এখনও শেষ হয়নি।
তিনি বলেন, আসামে বৃষ্টি হচ্ছে, বন্যাও হচ্ছে। আসামের এই পানি আমাদের ব্রহ্মপুত্র নদী হয়ে বিভিন্ন নদীতে আসে। আগামী কয়েকদিন বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হবে। উত্তরাঞ্চলে আরও সাত দিন বন্যা থাকতে পারে। তারপর ধীরে ধীরে বৃষ্টিপাত কমে যাবে। এরপর বন্যার পানিও নেমে যাবে।
এর আগে শনিবার (১৮ জুন) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলেছে, ভারতের বৃষ্টির পানি দেশের কুড়িগ্রাম, সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলা থেকে প্রবেশে করে আরও এগিয়ে আসছে। এর ফলে নতুন করে জামালপুর, বগুড়া, শেরপুর, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, লালমনিরহাট, নীলফামারি, পাবনা, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভিবাজার, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, শরীয়তপুর প্রভৃতি এলাকা প্লাবিত হওয়ার ম্ভাবনা রয়েছে।
মেঘালয় ও আসামে বৃষ্টি না কমা পর্যন্ত এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির আশা দেখছেন না আবহাওয়াবিদ সংশ্লিষ্টরা।
ইবাংলা/টিএইচকে/১৯জুন,২০২২