ঈদুল আজহার ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরছে মানুষ। ফলে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। সড়কের কালিহাতীর উপজেলার এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব পর্যন্ত প্রায় ১৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
শুক্রবার (১৫ জুলাই) সকালে বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকায় আমবোঝাই ট্রাক উল্টে গিয়ে প্রায় একঘণ্টা যানচলাচল বন্ধ থাকে এবং ঢাকামুখী যানবাহনের অতিরিক্ত চাপের ফলে এ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ। এদিকে যানজটের কারণে গন্তব্যে যেতে মানুষদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব পাড় থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার যেতেই সময় লেগে যাচ্ছে ৫-৬ ঘণ্টা। এ ছাড়াও সড়কের বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব পাড়, এলেঙ্গা, রাবনা বাইপাস, টাঙ্গাইল বাইপাস এলাকায় যাত্রীদের ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে। গন্তব্যে যেতে গুনতে হচ্ছে দুই থেকে তিনগুণ বেশি ভাড়া।
আরও পড়ুন… এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের ফের সময় বাড়ল
এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আতাউর রহমান জানান, বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকার তিন নম্বর ব্রিজের কাছে ট্রাক উল্টে যাওয়ায় এবং ঢাকাগামী যানবাহনের চাপ বেড়ে যাওয়ায় এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও থেমে থেমে আবার কোথাও ধীরগতিতে চলছে যানবাহন। যানজট নিরসনে মহাসড়কে কাজ করছে পুলিশ।
অপরদিকে, রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে বেড়েছে ঢাকামুখী যাত্রীর চাপ। তবে ঘাট এলাকায় যানবাহনের তেমন চাপ না থাকায় স্বস্তিতে ফেরি পার হতে পারছে ঘাটে আসা যাত্রীরা। শুক্রবার (১৫ জুলাই) সকাল থেকেই দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় এমন চিত্র দেখা যায়। অন্যান্য বছর ঈদ পরবর্তী যানবাহনের যেমন ভিড় থাকত, তা এবার দেখা যায়নি।
ঘাট সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে থাকা ২১টি ফেরির মধ্যে সচল রয়েছে ১৬ ফেরি। গত ২৪ ঘণ্টায় দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে পাটুরিয়া গেছে ৩ হাজার ৪২৯টি যানবাহন। এর মধ্যে যাত্রীবাহী বাস ৭২১টি, ট্রাক ৫০৫টি, ছোট গাড়ি ১ হাজার ৪২১টি ও মোটরসাইকেল ৭৮২টি।
সরেজমিনে দেখা যায়, পরিবারের সঙ্গে ঈদ শেষ করে কর্মস্থলে ফিরতে মানুষজন দৌলতদিয়া ঘাটে ভিড় করছেন। তারা ঘাটে এসে ভোগান্তি ছাড়াই ফেরি অথবা লঞ্চে নদী পার হচ্ছেন। ঘাট এলাকায় ঢাকামুখী যাত্রীর চাপ থাকলেও ঘাটের চিরচেনা সেই যানবাহনের দীর্ঘ সারি আর নেই। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা বাস ও পণ্যবাহী ট্রাক ঘাটে এসেই সরাসরি ফেরির দেখা পাচ্ছে। এ ছাড়া ব্যস্ততম ঢাকা-খুলনা মহাসড়কেও যানবাহনে চাপ নেই।
আরও পড়ুন… শিশুদের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মেধা বিকাশে গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর
রাজবাড়ী থেকে পরিবারের সঙ্গে ঈদ শেষ করে ঢাকা ফিরছেন মীর আফরোজ জামান। তিনি বলেন, প্রতি বছরই আমি পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়িতে যাই। ঘাট পার হতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। কিন্তু এবারই প্রথম কোনো ভোগান্তি ছাড়া নদী পার হতে পেরেছিলাম। আবার ঈদ শেষ করে ঢাকায় ফিরছি। ফিরতি পথেও কোনো ভোগান্তি নেই। এবারের ঈদযাত্রা অনেক আরামদায়ক হয়েছে। পদ্মা সেতু চালুর সুফল পেতে শুরু করেছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. শিহাব উদ্দিন বলেন, ঘাটে ঢাকামুখী যাত্রীর চাপ থাকলেও যানবাহনের সিরিয়াল নেই। যাত্রীরা ভোগান্তি ছাড়াই ফেরি পার হতে পারছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ঘাটের চিরচেনা রূপ এখন পাল্টে গেছে। মানুষ এখন ভোগান্তি ছাড়াই নদী পার হতে পারে।
ইবাংলা/টিএইচকে/১৫জুলাই,২০২২