চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে করা মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্রলীগ কর্মীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব ৭।
গতকাল শুক্রবার রাতে রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ওই ছাত্রীর মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে তিনজন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের কর্মী। বাকি দুজন বহিরাগত ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতির অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
আজ শনিবার সকালে বিষয়টি জানিয়েছেন র্যাব ৭ হাটহাজারী কোম্পানি কমান্ডার মাহফুজুর রহমান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. আজিম, নুর হোসেন শাওন, নুরুল আবছার বাবু, মেহেদী হাসান হৃদয়, মাসুদ রানা। তাদের মধ্যে মেহেদী, আজিম ও নুরুল আবছার বাবু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের কর্মী। মেহেদী ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ, আজিম ইতিহাস বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও নুরুল আবছার বাবু নৃবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
এ ছাড়া বাহিরাগত শাওন হাটহাজারী কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী ও মাসুদ হাটহাজারী কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
চবির সহকারী প্রক্টর শহীদুল ইসলাম জানান, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে তারা পলাতক ছিল।
এর আগে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী হেনস্তার ঘটনায় জড়িত আসামিদের ধরতে শুক্রবার রাত ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত শাহ আমানত হলে অভিযান চালানো হয়। এ অভিযানে ৮০ জনের মতো পুলিশ সদস্য অংশ নিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, ১৭ জুলাই (রোববার) রাত সাড়ে ৯টায় ক্যাম্পাসে পাঁচ তরুণের হাতে এক ছাত্রী যৌন নিপীড়ন ও মারধরের শিকার হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় পাঁচ তরুণ ওই ছাত্রীকে বেঁধে বিবস্ত্র করে মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করেন।
এ সময় তার সঙ্গে থাকা এক বন্ধু প্রতিবাদ করলে তাকেও মারধর করা হয়। ছিনিয়ে নেওয়া হয় মোবাইল ফোন।
পরে এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দিলে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ছাড়া জড়িত পাঁচজনকে আসামি করে থানায় মামলাও করেন ওই শিক্ষার্থী।
এদিকে, যৌন নিপীড়নের এ ঘটনার জেরে ছাত্রীদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এরই মাঝে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্রীদের হলে প্রবেশের ব্যাপারে সময়সীমা বেঁধে দেয়। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন করে ক্ষোভ দেখা দেয়। ছাত্রী হেনস্তা এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে বৃহস্পতিবার দিনভর শিক্ষক, সাধারণ শিক্ষার্থী, ছাত্রলীগ এবং প্রগতিশীল ছাত্রজোট মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল করে।