প্রথম শ্রেণির পৌরসভা চুয়াডাঙ্গা। ২৭ বছর এ ক্যাটাগরিতে পা রাখলেও এখন প্রায় অর্ধেক রাস্তাই কাঁচা। বাকী যে টুকু সড়ক পাঁকা তার অবস্থা নাজুক। কোথাও পিচঢালাই আর ইট-খোয়া উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আবার কোথাও কোথও নতুন ড্রেন(৫বছর পূর্বে) করায় রাস্তার বিলিন হয়ে খানাখন্দে অবস্থায় রয়েছে।
দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলও এসব সড়ক সংস্কার করা হয়নি । একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তা পানিতে তলিয়ে যায়। সৃষ্টি হয় জলবদ্ধতার । এতে পাড়া- মহল্লার সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। পৌরবাসীর অভিযোগ একদিকে ভাঙাচোরা খানাখন্দে ভরপুর সড়ক অন্যদিকে নিয়মিত ড্রেনগুলো পরিস্কার না করায় এই বেহাল অবস্থার সৃষ্টি।
আরও পড়ুন…প্রথমবারের মতো জবিতে হতে যাচ্ছে অ্যাপ শোকেসিং কম্পিটিশন
তবে পৌর মেয়রের দাবি দ্রত এ সমস্যার সমাধান করা হবে। জানা গেছে, ৫১ বছরের পা রাখা চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় । ১৯৯৫ সালে পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণীর মর্জদা পায়। ৩৭.৩৯ বর্গ কিলোমিটার আয়তনে ওয়ার্ড রয়েছে ৯টি। পৌরসভায় বর্তমানে প্রায় ২ লাখ ২৫ হাজার মানুষের বসবাস। মোট রাস্তা রয়েছে ২৬৩ কিলোমিটার। এর মধ্যে কাঁচা রাস্তা রয়েছে ১১৮.৯৬ কিলোমিটার ।
অবশিষ্ট যেটুকু পাকা, আধা-পাকা (এইচবিপি বা ইট বিছানো) রয়েছে তার অর্ধেকেই ভাঙ্গাচোরা। পৌরসভার ২০টি প্রধান সড়কসহ পাড়া- মহল্লার ভেতর দিয়ে আরও প্রায় শতাধিক সড়ক রয়েছে। এগুলোর অধিকাংশ পিচ কার্পেটিং ওঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। ধুলা বালি আর খানাখন্দে ভরা এ সকল সড়ক দিয়ে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
আর বৃষ্টি হলে তৈরী হয় আরো দূর্বিসহ অবস্থা। প্রতিদিন পৌরসভার রাস্তা দিয়ে কয়েক হাজার ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও ভ্যান রিকসাসহ ভারি যানবহন চলাচল করে। কিন্তু পৌরসভার অধিকাংশ রাস্তা ভাঙা থাকায় এসব রাস্তায় বিভিন্ন যানবাহনে চলাচল করতে মানুষের খুবই ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এ অবস্থায় নাগরিক সুবিধা না বাড়লেও, বেড়েছে দফায় দফায় ট্যাক্স ।
আরও পড়ুন…শিল্পী সমিতির ‘পরিচয়পত্রে’ নিপুণের স্বাক্ষর!
সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল সড়ক, কোর্ট পাড়া, , কাঠপট্টি, হাজরাহাটি, সাতগাড়ী, কুলচারা, জোয়াদ্দারপাড়া মসজিদপাড়া, মুক্তিপাড়া, সাতগাড়ী -কুলচারা সড়ক, কোটপাড়া সড়ক, ঈদগা সড়ক,আরামপাড়া রাস্তা, দক্ষিণ গোরস্থান পাড়া রাস্তা,গুলশান পাড়া রাস্তাসহ প্রায় সব রাস্তাই ভাঙাচোরা। এসব রাস্তায় প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটে। এলাকার বাসিন্দারা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, রাস্তাগুলো দেখলে মনে হয় যেন দেখভালের কেউ নেই।
আমরা কোনো শহরে না গ্রামে বসবাস করছি। দক্ষিণ গোরস্থান পাড়ার বাসিন্দা হাসানুজ্জামান বলেন, দীর্ঘ দিন রাস্তা ও ড্রেন সংস্কার না হওয়ায় অধিকাংশ রাস্তা ও ড্রেন ভেঙ্গে গেছে। যে কারণে অল্প বৃষ্টিতে আমাদের পানি বন্ধি থাকতে হয়।
আরামপাড়ার বাসিন্দা মিলন আলি বলেন, পৌর এলাকার অনেক পাড়া মহল্লায় পানি নিস্কাষন ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তায় পানি জমে দ্রুত রাস্তা নষ্ট হচ্ছে । আবার যেখানে ড্রেন আছে পরিস্কারের অভাবে ময়লা আবর্জনায় ভর্তি হয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতে ড্রেনের পানি রাস্তায় চলে আসে।
আরও পড়ুন…গান নকলের অভিযোগে যা বললেন অর্ণব
এতে দুগন্ধযুক্ত পানি ও ভাঙ্গাচোরা রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয় পৌরসভার লাখো মানুষকে। চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র, জাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকন বলেন- আয়তনের দিক থেকে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পৌরসভা চুয়াডাঙ্গা। বেশিরভাগ এলাকায় দরিদ্র পীড়িত মানুষের বসবাস।
ফলে কর আদায়ের হারও খুব কম। এই সামান্য অর্থ দিয়ে বৃহৎ এলাকার উন্নয়ন করা দুঃসাধ্য। সেই কারণে পৌরবাসী দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন বলে স্বীকার করেন পৌরমেয়র। অর্থ বরাদ্দ পেলে দ্রুত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা-ড্রেন নির্মাণ করা হবে।চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার এই বেহাল দশার অবসান ঘটিয়ে নির্বিঘে চলাচলের জন্য পৌরকর্তৃপক্ষ দ্রুতরাস্তা নির্মান ও সংস্কার করার উদ্যোগ নেবে এমনটাই প্রত্যাশা পৌরবাসীর ।
ইবাংলা/জেএন/ ৫আগস্ট,২০২২
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.