ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া দুই প্রকৌশলী ও এক কর্মকর্তাকে কেন স্থায়ীভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে না, সে বিষয়ে কারণ দর্শাতে হবে। এর আগে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম কেনা-স্থাপনে অনিয়ম ও অফিস শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাদেরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাময়িক বরখাস্ত তিনজনকে কেন স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে না, এই মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে।
গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের এক নিয়মিত সভায় ঢাবির প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ জোন-১) মো. লুৎফর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) খালেদুর রহমান চৌধুরী ও সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আবদুল হাইকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত হয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) মুহাম্মদ সামাদকে প্রধান করে গঠিত নতুন তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন সিন্ডিকেট সদস্য মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, এস এম বাহালুল মজনুন ও আবুল মনসুর আহাম্মদ এবং ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক এ এইচ এম আসাদুল হক।
গত ৩০ আগস্ট ‘ঢাবিতে সাড়ে ১৭ লাখ টাকার কাজে অনিয়মের অভিযোগ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি হল ও আবাসিক ভবনে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম লোড ব্রেক সুইচ (এলবিএস) স্থাপনের প্রায় সাড়ে ১৭ লাখ টাকার কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কাজটি শেষ না হতেই ঠিকাদারকে তড়িঘড়ি করে চূড়ান্ত বিল পরিশোধের চেষ্টা চলছে। কাজ শেষ না হওয়া সত্ত্বেও গত জুনে এ-সংক্রান্ত বিলটি ‘পাস করা যায়’ বলে মতামত দেন তত্ত্বাবধায়ক ও নির্বাহী প্রকৌশলী মো. লুৎফর রহমান।
প্রতিবেদনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বলা হয়, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. লুৎফর রহমান ‘সিন্ডিকেট’ করে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের সাবেক-বর্তমান নেতা ও পছন্দের ব্যক্তিদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রকৌশলের কাজ দিয়ে থাকেন। কাজের মানের সুষ্ঠু তদারকির দায়িত্বে থাকলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তিনি বিষয়টি উপেক্ষা করেন। লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে কাজ পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে অনৈতিক আর্থিক লেনদেনের অভিযোগও রয়েছে।