প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে ছাড়াই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল অসুস্থ থাকায় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন কমিশনার আহসান হাবিব খান।
বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে তিনি বলেন, রোডম্যাপ অনুযায়ী ২০২৩ সালের ডিসেম্বর কিংবা ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ইসি থেকে জানানো হয়, সিইসি শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকার কারণে মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি। ফলে সিইসির অনুপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, রোডম্যাপের একমাত্র উদ্দেশ্য হলো একটি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন আয়োজন করা।
আরও পড়ুন…ঘুষের টাকাসহ গ্রেফতার:কাস্টমস কর্মকর্তার ৫ বছরের কারাদন্ড
আহসান হাবিব খান তার বক্তব্যে আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন, আস্থাশীলতার ঘাটতি আছে। তবুও কমিশন শতভাগ আন্তরিকতা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে নির্বাচন সুষ্ঠু করবে। এবার নির্বাচনি এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা হবে। এজন্য আগের নীতিমালা পর্যালোচনা করে আগামী বছরের জানুয়ারিতে নতুন নীতিমালা তৈরি করা হবে।
নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব আরও জানিয়েছেন, বর্তমানে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ চলমান রয়েছে। ২০২৩ সালের ২ মার্চ হালনাগাদ তালিকা প্রকাশ করা হবে। আর সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সঙ্গে প্রকাশ করা হবে ৩০০ আসনের ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা।
এর আগে সিইসি জানিয়েছেন, এবার সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইভিএম আর ১৫০ আসনে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একজন নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, সম্ভব হলে সব কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের ইচ্ছে রয়েছে ইসির; বাজেটে সংকট হলে অন্তত ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোয় সিসি ক্যামেরা রাখার ইচ্ছে রয়েছে।
২০০৭ সালে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন হলে ভোটের সময়সূচি নিয়ে আলোচনার মধ্যে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন, সংলাপ, সীমানা পুনর্নির্ধারণ, আইন সংস্কার, দল নিবন্ধনসহ ভোটের ক্ষণ গণনা শুরু, তফসিল ঘোষণা, ফল গেজেটে প্রকাশ পর্যন্ত নানা কর্মকৌশল তুলে ধরে ‘রোডম্যাপ’ তুলে ধরে তৎকালীন এটিএম শামসুল হুদা কমিশন। ওই কমিশন স্থানীয় নির্বাচনে ইভিএমে ভোটের প্রচলনও শুরু করেছিল। বিদায়ের আগে ওই কমিশন পঞ্চবার্ষিক কর্মকৌশলও প্রণয়ন করেছিল।
আরও পড়ুন…তারেক কানেকশন : আওয়ামী লীগে ভর করে হাশেম রেজার অস্বাভাবিক উত্থান
এটিএম শামসুল হুদা কমিশনের পদাঙ্ক অনুসরণ করেই নানা মহলের আগ্রহের মধ্যে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, কে এম নূরুল হুদা কমিশনও এক ধরনের কর্মপরিকল্পনা ধরে এগিয়ে নিয়ে যায় ইসি সচিবালয়। সবশেষ কমিশন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম চালু করে যায়; ছয়টি আসনে ভোটও হয়। কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনও ‘দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কর্মপরিকল্পনা’ প্রকাশ করল।
২০১৯ সালের ৩০ জানুয়রি একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। সেক্ষেত্রে ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে পরের বছর জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন শেষ করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
ইবাংলা/টিএইচকে
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.