বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশের কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সবার মাঝে একটা উদ্বেগ, ২০২৩ সালে দুর্ভিক্ষ-খাদ্যমন্দা দেখা দিতে পারে। বাংলাদেশে যেন এটা না হয়। আমাদের খাদ্য উৎপাদন করতে হবে। এই যুদ্ধ তাড়াতাড়ি বন্ধ হবে বলে মনে হয় না। যুদ্ধ বন্ধ করেন, আমি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এই আবেদনটাই জানিয়েছি।
বুধবার (১২ অক্টোবর) বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার বিরতণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে পুরস্কার বিতরণ আনুষ্ঠানে যুক্ত হন।
আরও পড়ুন…রাত ৮টার পর দোকানপাট, খোলা রাখার বিরুদ্ধে অভিযানে নামছে ডিএসসিসি
এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদী না রাখার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, যে যা পারেন উৎপাদন করেন। এক ইঞ্চি জমিও নষ্ট করবেন না। বাড়ির আঙিনায়, খোলা জায়গায় উৎপাদন করেন। সরকার বিভিন্নভাবে চাষাবাদকে উৎসাহিত করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খাদ্যের চাহিদা কখনও কমবে না। বরং বাড়বে। সামনে অর্থনৈতিক মন্দার কারণে অনেকেই খাদ্য সংকটে পড়বে। আমাদের যাতে সেরকম পরিস্থিতি না হয়। হয়তো অনেক দেশে আমাদেরই খাদ্য সহায়তা পাঠাতে হবে। সেদিক চিন্তা করে আমাদের কাজ করতে হবে।
জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখন বাংলাদেশ খাদ্য আমদানির ওপর নির্ভরশীল ছিল বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল আমরা কৃষিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবো। কিন্তু আমাদের আগে যতগুলো সরকার ছিল তাদের সবার একটা বিষয় ছিল যে এটা না করে কিছু লোককে দিয়ে ব্যবসা করাবে, আমদানি করবে, সাহায্য নেবে। জিয়ার সরকার, এরশাদের সরকার, খালেদা জিয়ার সরকার সবার কথাই আমি বলছি। ৯৬ এ ক্ষমতায় এসে লক্ষ্য নিলাম আমাদের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১০০টা শিল্পাঞ্চল করে দিয়েছি, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। কৃষিজমিটা যেন নষ্ট না হয়। কৃষিপণ্য বা খাদ্যপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা করতে পারি এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে। অঞ্চলভিত্তিক কৃষিপণ্য সংরক্ষণে কথা ভাবছি। যে অঞ্চলে যে ফসলটা সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হচ্ছে, সেভাবেই সংরক্ষণাগার গড়ে তুলতে হবে। শিল্পাঞ্চলে আলাদা প্লট নিয়ে আলাদা সংরক্ষণাগার করা যাবে। এর ফান্ড আমি দেবো।
তিনি বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও স্যাংকশানের কারণে বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। আমাদের অনেক কিছু বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়। তবে অনেক দেশের সঙ্গে পণ্য আনার চুক্তি করেছি। পণ্যের দাম যেমন বেড়েছে, পরিবহনের খরচ বেড়েছে। তবু কৃষকের ভর্তুকি আমরা দিয়ে যাচ্ছি।
সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফরের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবার মাঝে একটা উদ্বেগ, ২০২৩ সালে দুর্ভিক্ষ-খাদ্যমন্দা দেখা দিতে পারে। বাংলাদেশে যেন এটা না হয়। আমাদের খাদ্য উৎপাদন করতে হবে। এই যুদ্ধ তাড়াতাড়ি বন্ধ হবে বলে মনে হয় না। যুদ্ধ বন্ধ করেন, আমি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এই আবেদনটাই জানিয়েছি।
আরও পড়ুন…নোয়াখালীতে ৫ বছরের সাজা প্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার
জনগণকে করোনার টিকা নেওয়ার উৎসাহ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী শীত মৌসুম আসলে আবার যাতে করোনার প্রাদুর্ভাব না হয়। সবাই টিকাটা নিয়ে নেবেন। শিশুদেরও আমরা টিকা দিচ্ছি। সবাইকে আবারও বলছি।
এ সময় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মতিয়া চৌধুরী।
ইবাংলা/জেএন/১২ অক্টোবর ২০২২
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.