সীসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ শিশু

ইবাংলা ডেস্ক

লিড অ্যাসিড ব্যাটারি রিসাইক্লিং, টার্মারিক ও রং কারখানা এবং প্রয়োজনীয় দ্রব্য পেন্সিল, কালি, খেলনা বা গহনাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যে ব্যবহৃত সিসা থেকে ছড়াচ্ছে এ বিষক্রিয়া।

গবেষণা বলছে, বড়দের তুলনায় শিশুদের শরীরে সিসার প্রভাব বেশি। শিশুদের রক্তে সিসা মিশে গিয়ে সারা জীবনের জন্য স্নায়ুবিক, মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হচ্ছে। মস্তিষ্ক আক্রান্ত হচ্ছে, স্মরণশক্তি কমছে, অনেক ক্ষেত্রে কোমায় চলে যাচ্ছে শিশুরা।

সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের চারটি জেলার শিশুদের রক্তে সিসার উপস্থিতি এবং তার মধ্যে ৬৫ শতাংশের রক্তে সিসার পরিমাণ যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসির নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বেশি।

আরও পড়ুন…‘এমন কিছু এর আগে দেখেনি কেউ!

ইউনিসেফের উদ্যোগে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইডিসিআর, আন্তর্জাতিক উদারাময় গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিডিআরবি) সম্প্রতি এ গবেষণা পরিচালনা করে।

(২৫ অক্টোবর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।আইডিসিআর- এর গবেষক নওরোজ আফরিন গবেষণার তথ্য তুলে ধরে বলেন, টাঙ্গাইল, খুলনা, সিলেট, পটুয়াখালী এ চার জেলায় পরীক্ষা করা হয়েছে। এ চার জেলার পরীক্ষিত ৯৮০ শিশুর সবারই রক্তে সিসার উপস্থিতি মিলেছে। এর মধ্যে ৬৫ শতাংশ শিশুরই রক্তে সিসার মাত্রা যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসি নির্ধারিত মাত্রা থেকে ৩ দশমিক ৫ মাইক্রো গ্রাম বেশি।

আরও পড়ুন…বৃষ্টিতে মাদারীপুর পৌর শহরে জলাবদ্ধতা

এর মধ্যে ২৪ মাস থেকে ৪৮ মাস বয়সী শিশুদের শতভাগের শরীরেই সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।আইসিডিডিআরবির করা গবেষণার তথ্য বলছে, ঢাকার ৫০০ শিশুর রক্ত পরীক্ষায় সবার শরীরেই সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

গবেষকরা বলছেন, ছোটবেলায় সিসার প্রভাব বুদ্ধিমত্তা কমায়, মনোযোগের ঘাটতি তৈরি করে, লেখাপড়ায় দুর্বল হয়, যা ভবিষ্যতে অনেক আগ্রাসী করে তোলে।

এছাড়া বাজারের ৩৬৭টি পণ্যের মধ্যে ৯৬টি পণ্যে সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। চারটি শহরে স্থানীয়ভাবে তৈরি খেলনা, রং, অ্যালুমিনিয়াম ও সিলভারের হাঁড়ি-পাতিল, সবজি, চাল এবং মসলার নমুনায় সিসার উপস্থিতি পাওয়া যায়। চারটি শহরের মধ্যে আছে ঢাকা, বরিশাল, রাজশাহী ও খুলনা। এছাড়া মাটি, ছাই, পোড়া মাটি ও হলুদের গুঁড়ায় সিসার উপস্থিতি দেখা গেছে।

আরও পড়ুন…সুবর্ণচরে গাছের চাপায় শিশুর মৃত্যু

গবেষণার তথ্য বলছে, সিসা দ্বারা দূষিত হলুদের গুঁড়া গর্ভবতী নারীর শরীরে উচ্চ মাত্রার সিসার উপস্থিতির কারণ। পল্লী এলাকায় পরীক্ষা করা ৩০ শতাংশ গর্ভবতী নারীর শরীরে সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

সেমিনারে উপস্থিত আছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রী মো.শাহাব উদ্দিন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শফিকুজ্জামান, বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট প্রমুখ।

ইবাংলা/জেএন/২৫ অক্টোবর ২০২২

 

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us