খাদ্যশস্য রপ্তানি চুক্তি থেকে রাশিয়ার সরে আসার সিদ্ধান্ত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

কৃষ্ণসাগর দিয়ে ইউক্রেনের শস্যবাহী জাহাজ নিরাপদে চলাচলের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল রাশিয়া, তা থেকে দেশটি সরে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এ সংক্রান্ত চুক্তির অন্যতম অংশীদার দেশ তুরস্ক। সোমবার (৩১ অক্টোবর) তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হালুসি আকার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানি চুক্তি থেকে রাশিয়ার সরে আসার সিদ্ধান্ত উদ্বেগজনক।

কারণ এটা এমন এক পদক্ষেপ, যার ফলে কেউই লাভবান হবে না।’ এতে করে খাদ্যসংকটের ঝুঁকিতে পড়তে পারে অনেক দেশ।রাশিয়াকে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়ে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুর সঙ্গে টেলিফোনে বৈঠক করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন…তান্ত্রিক ভাড়া করে ‘কালোজাদু’! অভিযোগ তনুশ্রীর

রাশিয়া ও ইউক্রেন— উভয়ই বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় খাদ্যশস্য ও ভোজ্যতেল রপ্তানিকারী দেশ। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ বাহিনী ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর পর দেশটির বিভিন্ন গুদামে আটকা পড়ে আড়াই কোটি টনেরও বেশি গম-ভুট্টা ও সূর্যমুখী তেলের তেলবীজ।

কৃষ্ণ সাগরে রুশ নৌবাহিনী টহল দিতে থাকায় ইউক্রেনের বন্দর দিয়ে এসব খাদ্যশস্য ও তেলবীজ আন্তর্জাতিক বাজারে যাওয়ার কোনো পথ ছিল না। এতে একদিকে যেমন ইউরোপ মহাদেশসহ দেশে দেশে খাদ্য ও ভোজ্যতেলের দাম বাড়তে থাকে, অন্যদিকে বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ইউক্রেনের শস্য রাখারও জায়গা ছিল না। কারণ খাদ্যগুদামগুলো ভর্তি ছিল বিগত মৌসুমের শস্য ও তেলবীজে।

অবশেষে জাতিসংঘের প্রচেষ্টা এবং রাশিয়া ও ইউক্রেন— উভয়েরই মিত্র রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত তুরস্কের কয়েক মাসের দূতিয়ালিতে অবশেষে গত ২২ জুলাই জাতিসংঘ-তুরস্ক-রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, কৃষ্ণসাগর দিয়ে ইউক্রেনের শস্যবাহী যেসব বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল করবে, সেগুলোতে হামলা চালানো হবে না।

সেই অনুযায়ী আগস্ট থেকে এতদিন পর্যন্ত নিরাপদই কৃষ্ণসাগর দিয়ে চলাচল করতে পেরেছে ইউক্রেনের শস্যবাহী জাহাজগুলো। ইতোমধ্যে দেশটির বিভিন্ন গুদামে জমে থাকা প্রায় সব শস্য আন্তর্জাতিক বাজারে পৌঁছেছে। তবে এসব শস্যের ৯০ শতাংশই গেছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। এতে গত মাসেই অসন্তোষ জানিয়েছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। কারণ পুতিনের মতে, মস্কো আশা করেছিল— খাদ্য সংকটে ভুগতে থাকা বিশ্বের উন্নয়নশীল ও অনুন্নত বিভিন্ন দেশও পাবে ইউক্রেনের গমের হিস্যা।

আরও পড়ুন…ডেঙ্গুতে মৃত্যু ৫, হাসপাতালে ৮৭৩

তারপর গত শনিবার কৃষ্ণ সাগরে ক্রিমিয়া দ্বীপের সেভাস্তোপল বন্দরে রুশ বাহিনীর নৌবহরে ইউক্রেনীয় বাহিনী ড্রোন হামলা চালানোর পর রোববার ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেয় মস্কো। রাশিয়ার এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়াই ইতোমধ্যে উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউয়নিয়ন।

ইবাংলা/জেএন/৩১ অক্টোবর ২০২২

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us