মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে এতটাই বিমর্ষ দেখাচ্ছিল, মুখের দিকে তাকালে যে কারও মায়া হবে। বিস্তর মরুভূমি পাড়ি দেওয়া বিষণ্ণ পথিক মনে হচ্ছিল তাকে। বিশ্বকাপযাত্রায় স্কটল্যান্ড এমনই হাল করে ছেড়েছে বাংলাদেশ দলপতিকে। এক দিন আগেও যে চোখে জয়ের স্বপ্ন ছিল, গতকাল সেই চোখজুড়ে ছিল মরীচিকার ছবি।
পরাজয়ের দায় কাঁধে নিয়ে কুঁজো হয়ে চেয়ার টেনে হাইব্রিড সংবাদ সম্মেলন কক্ষে বসেছিলেন ব্যর্থতার ব্যবচ্ছেদ করতে। সাংবাদিকদের প্রশ্নবাণে জর্জরিত হওয়ার চেয়ে আত্মসমর্পণের পথ বেছে নেন টাইগার দলপতি। স্বীকার করে নেন, তারা ভালো খেলেননি। ব্যাটসম্যানরা ভুল শট খেলে উইকেট বিসর্জন দিয়েছেন আল আমেরাতের পাশের বালিয়ারিতে।
বোলিংটা ভালোই করেছিলেন মুস্তাফিজরা। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে স্কটল্যান্ডকে ১৪০ রানে বেঁধে ফেলে ব্যাটসম্যানদের কাজটা সহজ করে দিয়েছিলেন সাকিবরা। মাঝারি মানের এ স্কোরও তাড়া করা সম্ভব হয়নি ব্যাটসম্যানরা হেয়ালি-খেয়ালি শট খেলে উইকেট ছুড়ে দেওয়ায়। মাহমুদউল্লাহ ব্যাখ্যা দিলেন এভাবে, ‘ব্যাটিংয়ে প্রথম ছয় ওভারে আমরা ওই রকম রান করতে পারিনি।
এটা এমন একটা জায়গা, আমরা চেয়েছিলাম যেন পাওয়ার প্লেটা কাজে লাগাতে পারি। ১৪০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে হলে ভালো একটা শুরু প্রয়োজন। পরে মুশফিক, সাকিব কিছুটা রিকভারি করেছিল। কিন্তু মাঝের ওভারগুলোতে আমরা ভালো করতে পারিনি। উইকেট ভালো ছিল, কিন্তু আমরা ভালো ব্যাটিং করতে পারিনি।’
পাওয়ার প্লেতে ২৫ রান তোলে বাংলাদেশ। সাকিব-মুশফিক জুটি করে পরের চার ওভারে যোগ করেন ৩৪ রান। অভিজ্ঞ এ দুই ব্যাটসম্যানের আউটের মধ্য দিয়ে দলের পরাজয় লেখা হতে থাকে স্কোরবোর্ডে। শেষ দুই ওভারে ৩২ রানের অসম্ভব এক টার্গেটের মুখে পড়ে দল। শেষ ওভারে ১৭ রান তোলা সম্ভব হলেও পরাজয় এড়ানো যায়নি।
ললাটে পরাজয়ের তিলক পরা মাহমুদউল্লাহ হতাশ কণ্ঠে বললেন, ‘এই ভাবনাটা ছিল যে, আমরা যদি স্পিনারদের অ্যাটাক করতে পারি, কিছু বড় ওভার যদি নিতে পারি, তাহলে হয়তো রানরেটটা আমাদের নাগালের ভেতরেই থাকত। কিন্তু মাঝখানে আমরা উইকেট হারিয়েছি।
বড় রানের ওভারগুলো আমরা সংগ্রহ করতে পারিনি। এ কারণে আমরা আস্তে আস্তে ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছি। আমার মনে হয়, ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে আমরা হতাশ করেছি। এটা খুব বড় চিন্তার ব্যাপার। আমরা একের অধিক ভুল করেছি। পরের ম্যাচে আমাদের এ বিষয়ে নজর রাখতে হবে।’
ভুলে নজর না দিয়ে মাহমুদউল্লাহদের ফলস কনফিডেন্স থেকে বেরোতে হবে জিততে হলে।