ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতারকৃত আসামি থানা থেকে মুক্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক
ফরিদপুর শহরের সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেনীর ছাত্রী বিথীকা সাহার বাড়ি ফরিদপুর সদর উপজেলার ঈশানগোপালপুর গ্রামে। বিথীকা সাহা জানান, গত দুই বছর ধরে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক একই গ্রামের প্রভাবশালী ঘরের সন্তান উজ্জল সরকার লোটনের সঙ্গে। তিন মাস আগে উজ্জল সরকার বিথীকা সাহাকে নিয়ে রাজধানীর গোলাপবাগের একটি ভাড়ার বাসায় বসবাস শুরু করে।
উজ্জল বিথীকাকে বলে গ্রামে থাকতে গোপনে বিয়ে করা সম্ভব নয়, ঢাকায় গিয়ে তারা বিয়ে করবে। ঢাকায় এসে বিথীকা বিয়ের চাপ দিলে গত ৫ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে উজ্জল সরকার তার বন্ধু রাব্বী,জামান ও বেলায়েত মিলে বিথীকাকে গণধর্ষন করে। পরের দিন বিথীকা ধর্ষনকারীদের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ি থানায় মামলা দায়ের করে মামলা নম্বর ২০/২২ তারিখ ৬/১২/২০২২।
ফরিদপুর থেকে আসামী ধরে আনার খরচ বাবদ যাত্রাবাড়ি থানার ওসি জাকির হোসেন তার ব্যাক্তিগত মোবাইলের বিকাশ একাউন্টে বাদীর কাছ থেকে ১২ হাজার টাকা নেন এবং ফরিদপুর থেকে আসামী উজ্জল সরকার ও বেলায়েতকে গ্রেফতার করে যাত্রাবাড়ি থানায় নিয়ে আসে। পরের দিন একটি মোবাইল ফুটেজে দেখা যায় গ্রেফতারকৃত ধর্ষন মামলার আসামী উজ্জল সরকার ফুলের মালা গলায় পরে যাত্রাবাড়ি থানা থেকে বের হয়ে যাচ্ছেন।
ধর্ষন মামলায় গ্রেফতার করা আসামীকে ছেড়ে দেয় যাত্রাবাড়ি থানা পুলিশ। একই দিনে যাত্রাবাড়ি থানার ওসি অপারেশন জাকির হোসেন মোবাইল ফোনে মামলার বাদী বিথীকা সাহাকে থানায় ডেকে আনেন। এ সময়ে বিথীকার সাথে তার মুন্নী নামের এক বান্ধবীও ছিলেন। সন্ধ্যার পর পুলিশ বিথীকার বান্ধবী মুন্নীকে ছেড়ে দেয়।
ধর্ষণমামলার বাদী কলেজ ছাত্রী বিথীকাকে রাতভর থানায় আটকে রেখে নির্যাতন করে ওসি অপারেশন জাকির হোসেন,তার চোখ বেধে লাঠি দিয়ে পেঠানো হয় এবং বারবার মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। রাতভর থানায় পুলিশী নির্যাতনের পর গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বিথীকা সাহাকে পুলিশের ওয়ারী জোনের ডিসির অফিসে নেওঢা হয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। ইতিমধ্যে মিটফোর্ট হাসপাতালে বিথীকার ধর্ষণের ফরেনসিক পরীক্ষা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে যাত্রাবাড়ি থানার ওসি অপারেশন জাকির হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
যাত্রা বাড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ মাযহার ইসলামের কাছে এ বিষয়ে জানতে তার সরকারি মুঠোফোনে ফোনে যোগাযোগ হলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, সবারই ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার আছে। আসামির ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার আছে এবং বাদীরও ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার আছে এতটুকুই আমি বললাম এখন আপনারা (সাংবাদিকরা) মনের মাধূরী দিয়ে লিখতে পারেন বলেই ফোন কেটে দেন।
ওয়ারী জোনের উপ পুলিশ কমিশনার বলেন, এ মfমলায় যাদেরকে আসামি করা হয়েছে তদের এখন পর্যন্ত কোন দোষ পাওয়া যায়নি। ধর্ষণ মামলার আসামিকে গ্রেফাতার করে থানা থেকে ছেড়ে দেয়া যায় কিনা? এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের সন্দেহ আছে এ বিষয়ে তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষে এ বিষয়ে আপনাদের (সাংবাদিকদের ) বিস্তারিত জানানো হবে।
এর আগে যাত্রাবড়ী থানার পুলিশ একাধিক সাংবাদিকদের নিকট বলেন, মামলাটা মিথ্যা হতে পারে বলে আমরা বাদীকে ডেকে এনেছি। তবে কোন আসামীকে গ্রেফতারের বিষয় তিনি অস্কীকার কারেন যদিও ভিডিও ফুটেছে দেখা যায় গ্রেফতার করা আসামী উজ্জল ফুলের মালা গলায় দিয়ে বিজয়ীর বেশে যাত্রাবাড়ি থানা থেকে বের হচ্ছেন।
ইবাংলা/টিএইচকে
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.