‘আওয়ামী লীগকে ধাক্কা দিল আর পড়ে গেল’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটানো সম্ভব নয়, কেননা দলটি জনগণের জন্য কাজ করে। সরকার পতনের চেষ্টার অংশ হিসেবে ১১ জানুয়ারি বিএনপি-জামায়াত চক্রের দেশব্যাপী অবস্থান কর্মসূচির প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, “এখন আবার বলে ১১ তারিখ থেকে তারা আন্দোলন করবে।

আবার তাদের সাথে জুটে গেছে অতি বাম, অতি ডান- সব এক জায়গায় হয়ে ক্ষমতা থেকে নাকি আমাদের উৎখাত করবে।” তিনি বলেন, “একটা কথা আমি বলে দিতে চাই যে আওয়ামী লীগ জনগণের জন্য কাজ করে, জনগণের কল্যাণে কাজ করে, আওয়ামী লীগকে ধাক্কা দিল আর আওয়ামী লীগ পড়ে গেল, এত সহজ নয়।”

                       আরও পড়ুন…বাংলাদেশের পাসপোর্ট শক্তিশালী সূচকে ৩ ধাপ উন্নতি

প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে এসব কথা বলেন।

বিএনপি’র উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বারবার যারা জনগণ দ্বারা বিতাড়িত ও প্রত্যাখ্যাত হয়েছে, তারা আবার গণতন্ত্রের চর্চা করলো কবে। তাদের নিজেদের মধ্যেই তো গণতন্ত্র নেই। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার অধীনে দুটি নির্বাচন, একটি ’৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন, আর একটি ২০০৬ সালের ৬ জানুয়ারির নির্বাচন। দুটি নির্বাচনই তারা বাতিল করতে বাধ্য হয়। কারণ জনগণের ভোট চুরি করার ফলে জনগণই তাদের বিতাড়িত করে।

তিনি বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, তাদের কিছু ভাড়াটে লোক আছে দেশে-বিদেশে, যারা সোশ্যাল মিডিয়াতে বসে সারাদিন আমাদের বিরূদ্ধে কূৎসা রটায়, আর মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। এভাবে খুব একটা আতংক সৃষ্টি করেছিল ১০ তারিখ নিয়ে।

এত ঢাক ঢোল পিটিয়ে শেষ পর্যন্ত সেই ১০ তারিখ চলে গেল গোলাপবাগে।’ তিনি বলেন, ‘তবে অবৈধ ভাবে ক্ষমতা দখল ঠেকাতে পারে আওয়ামী লীগ। কেউ যদি ভোট চুরি করে, তাকে ক্ষমতার থেকে হঠাতে আওয়ামী লীগই পারে, সেটা আমরা প্রমাণ করেছি। এটা আমরা প্রমাণ করেছি বারবার’।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘গণতন্ত্রের চর্চা আমরা নিজের দলে যেমন করি, দেশেও গণতন্ত্রের চর্চা করি। আজকের নির্বাচনে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ছবিসহ ভোটার তালিকা, আইডি কাডর্, ইভিএম- এই সবই তো আমরা চালু করেছি, যাতে মানুষ স্বাধীনভাবে তার ভোটটা দিতে পারে। স্বাধীনভাবে ভোট দিয়ে যেটা রেজাল্ট আসবে সেটাই আসল নির্বাচন’। তিনি বলেন, এটা সকলের মনে রাখা উচিত যে ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে কেউ কোন প্রশ্ন উঠায় না, প্রশ্ন উঠাতে পারেনা।

বিএনপিকে জিজ্ঞেস করলেই হয়- ২০০৮ সালের নির্বাচনে তারা কয়টা আসন পেয়েছিল? ৩শ’ আসনের মধ্যে ২৯টি, আর উপনির্বাচনে একটি মিলিয়ে ৩০টি আসন। ঐ নির্বাচন নিয়েতো কোন প্রশ্ন নেই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরপর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে জনগণের স্বার্থে এবং তাদের কল্যাণে কাজ করে দেশের আর্থসামাজিক উন্নতি করে, জনগণের কল্যাণ সাধন করেছে বলেই আজ জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়। কাজেই আওয়ামী লীগের এই উন্নয়নের অগ্রযাত্রা ইনশাল্লাহ অব্যাহত থাকবে।

                          আরও পড়ুন…সরকারি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ সবচেয়ে নিরাপদ

জাতির পিতা এদেশ স্বাধীন করেন এবং ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি শক্রুর বন্দিখানা থেকে এই দেশের মাটিতে ফিরে আসেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাঁকে ’৭৫ এর ১৫ আগষ্ট হত্যা করা হলেও তাঁর দেওয়া নীতি ও আদর্শ অনুযায়ী, আমরা রাষ্ট্রপরিচালনা করে আজ বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা এনে দিয়েছি। ইনশাল্লাহ এই বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ এবং স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে আমরা গড়ে তুলবো। পিতার কাছে এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।

দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আলোচনা সভায় প্রারম্ভিক বক্তৃতা করেন। আরো বক্তৃতা করেন- কেন্দ্রিয় সদস্য অধ্যাপক মো. আলী আরাফাত ও এডভোকেট তারানা হালিম, দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মান্নাফি ও উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কোচি। দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ আলোচনা সভাটি সঞ্চালনা করেন।

বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা এবং দেশের মুক্তিযুদ্ধের সর্বোচ্চ সেনাপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৯০ দিন পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী থাকার পর, ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি লন্ডন ও নয়াদিল্লি হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পবিত্র মাটিতে ফিরে আসেন।

সেই থেকে দিনটিকে জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস হিসেবে পালন করছে জাতি।শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ মানুষের কাছে যে ওয়াদা দেয় সেই ওয়াদা রাখে। কেননা ২০০৮ এর নির্বাচনী ইশতেহারে রূপকল্প ২০২১ ঘোষণা করেছিল সে অনুযায়ী দেশকে তাঁরা উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করতে পেরেছে। ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে জাতি যখন স্বাধীনতার সুবর্ণ জযন্তী উদযাপন করছে তখনই বাংলাদেশ এই উন্নয়নশীল দেশে  হবার গৌরব অর্জন করে।

ইবাংলা/টিএইচকে

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us