সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সদ্য প্রয়াত সংসদ সদস্য, চলচ্চিত্র অভিনেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ মে) বেলা ১১টার পর তার মরদে শহীদ মিনারে নেওয়া হয়। দুপুর একটা পর্যন্ত মরদেহ সেখানে রাখা হবে। এরপর এফডিসিতে জানাজার পর মরদেহ নেওয়া হবে গুলশান আজাদ মসজিদে। সেখানে আরেক দফা জানাজার পর দাফনের জন্য মরদেহ নেওয়া হবে গাজীপুরের কালীগঞ্জে।
ফারুকের ইচ্ছানুযায়ী পারিবারিক কবরস্থানে বাবার কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হবে।
আরও পড়ুন>> দেশের সব বিভাগে বৃষ্টির সম্ভাবনা
কিংবদন্তি এই অভিনেতার মরদেহ আসার খবরে ১১টার আগেই বহু মানুষ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হন। হাতে ফুল দিয়ে মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্সের অপেক্ষায় থাকেন তারা। অ্যাম্বুলেন্সটি আসা মাত্রই সেটিতে ঘিরে ধরেন। পরে মরদেহ নামিয়ে আনা হলে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে মরদেহে শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে।
সিঙ্গাপুরের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে নায়ক ফারুকের মরদেহ নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয় ইউএস-বাংলার বিএস-৩০৮ ফ্লাইট। মঙ্গলবার (১৬ মে) সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে মরদেহ দেশে পৌঁছায়। এরপর মরদেহ তার উত্তরার বাসায় নেওয়া হয়।
গতকাল সোমবার (১৫ মে) সিঙ্গাপুরের স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নায়ক ফারুক। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আট বছর ধরে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন এই অভিনয়শিল্পী।
অভিনেতা ফারুক সর্বশেষ ২০২১ সালের মার্চ মাসের প্রথম দিকে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সিঙ্গাপুরে যান। পরীক্ষায় রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর থেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থতা অনুভব করছিলেন তিনি।
৫০ বছরের বেশি সময় ধরে চলচ্চিত্রে অভিনয় করা ফারুক একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-১৭ আসনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
ফারুকের নিকটাত্মীয় (ভাতিজি জামাতা) মাজাহারুল কবির বলেন, শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর পর দুপুর ২টায় মরদেহ নেওয়া হবে এফডিসিতে। বাদ আসর গুলশান আজাদ মসজিদে জানাজা শেষে গাজীপুরের কালীগঞ্জে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
আরও পড়ুন>> বাবার কবরের পাশে শায়িত হবেন নায়ক ফারুক
১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন ফারুক। এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে ঢাকাই সিনেমার তার অভিষেক হয়। প্রথম সিনেমায় তার বিপরীতে ছিলেন কবরী। এরপর ১৯৭৩ সালে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র খান আতাউর রহমানের পরিচালনায় ‘আবার তোরা মানুষ হ’ ও ১৯৭৪ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতার ‘আলোর মিছিল’ এ দুটি সিনেমায় পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
পাঁচ দশকের বেশি সময়ের অভিনয় ক্যারিয়ারে অভিনয় করেন বহু দর্শকপ্রিয় চলচ্চিত্রে। ‘মিয়াভাই’ চলচ্চিত্রের সাফল্যের পর তিনি চলচ্চিত্রাঙ্গনে ‘মিয়াভাই’ হিসেবে খ্যাতি পান। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ নানা সম্মাননায় ভূষিত হন এই নন্দিত চিত্রনায়ক। অভিনয় থেকে অবসর নেওয়ার পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-১৭ আসনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
ইবাংলা/এসআরএস
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.