পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাই ভেঙে পড়ার শঙ্কা
নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকায় করোনার অতি সংক্রমণশীল ভারতীয় ধরন ডেল্টা আশঙ্কাজনক হারে ছড়িয়ে পড়লেও, এর প্রতিরোধে কোন মাথা ব্যথা নেই স্বাস্থ্য অধিদফতরের। গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআরবি বলছে, ঢাকায় করোনা সংক্রমণের ৬৮ শতাংশই ডেল্টা ধরনের।
এই সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে না পারলে তৃতীয় ঢেউয়ে পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাই ভেঙে পড়ার শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। ঢাকায় ভারতীয় ডেল্টা ধরন নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে জুলাইয়ে করোনার তৃতীয় ধাক্কার পাশাপাশি, পুরো চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার শঙ্কা জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বে-নজীর আহমেদ বলেন, ‘এই ভেরিয়েন্টটা এতো শক্তিশালী যে এটা বাকি ভেরিয়েন্টগুলোকে ঠেলে ফেলে দেয়। বাংলাদেশে যে আগের ভেরিয়েন্টগুলো ছিলো, আমাদের নিজেদের ভেরিয়ন্টেগুলো বলি, বা ইউকে ভেরিয়েন্ট যেটাই বলি ওগুলোকেও হটিয়ে দেবে।
প্রিভেনশনের কথায় আসি, স্বাস্থ্য বিভাগের বড় ধরনের উদ্যোগ এটা আমাদের চোখে পড়ে না। যেহেতু আমরা এটা প্রিভেন্ট করছিনা পরিকল্পনামাফিক, তাই এটা বেশি সংক্রমণ করবে।’
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. রিদওয়ান উর রহমান জানান, ‘আশেপাশের জেলার রোগীগুলো তো আসলে ঢাকায় চলে আসে, তাই আমরা আশঙ্কা করছি হাসপাতালগুলোতে চাপ সামনে আরো বৃদ্ধি পাবে। লকডাউন দিয়ে শুধু সংক্রমণ ঠেকানো যাবে না।
ঠেকাতে হলে টেস্ট আইসোলেশন করতে হবে অনেক বেশি পরিমাণে। যা আমরা করছি না, ব্যবস্থাও করা হচ্ছে না। ভবিষ্যতে করা হবে বলেও মনে হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে আমরা সংক্রমণ ঠেকাতে পারবো না।’ তবে অতি সংক্রমণশীল এই ভ্যারিয়েন্ট নিয়ন্ত্রণে এখনো কোন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেয়নি স্বাস্থ্য অধিদফতর।
করোনা প্রতিরোধ কারিগরি পরামর্শক কমিটিরও নেই কোন সিদ্ধান্ত। কোভিড-১৯ এর জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য ডা. নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমাদের সংক্রমণের হার আস্তে আস্তে বেড়েই যাচ্ছে। এ নিয়ে স্পেসিফিক কোন মিটিং হয়নি।
তবে আমরা শীঘ্রই মিটিংয়ে বসবো। সব জায়গায় আমরা কিন্তু অল্পবিস্তর ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছি।’ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার অন্যান্য ধরনের চেয়ে ভারতীয় ডেলটা ধরনটি বেশি সংক্রমণশীল। এ ধরণটিতে আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তির প্রবণতাও বেশি বলে উঠে এসেছে গবেষণায়।
দৈনিক প্রতিনিধি/ আইএইচ/ ১৮ জুন, ২০২১