পবিত্র কোরআনের একাধিক স্থানে আল্লাহ ‘উলুল আলবাব’ তথা বুদ্ধিমান ও বিচক্ষণদের সম্বোধন করেছেন। আল্লাহর এই সম্বোধন ইতিবাচক ও প্রশংসাসূচক। কোরআনের এসব সম্বোধনের দ্বারা প্রমাণিত হয়, ‘উলুল আলবাবরা’ আসমানি হেদায়েত ও কল্যাণের অধিক নিকটবর্তী। যেমন মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে বোধসম্পন্ন ব্যক্তিরা! আল্লাহকে ভয় কোরো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।
বুদ্ধিমান এবং বোধসম্পন্ন ব্যক্তিদের কদর সব জায়গাতেই রয়েছে। জ্ঞান নেই, ভালো মন্দের পার্থক্য করতে পারেন না এমন মানুষদের বোকা আবার অনেককে পাগল বলা হয়।
কেউ নিজেকে জ্ঞান-বোধহীন প্রকাশ করতে চায় না, প্রত্যেকেই নিজেকে বুদ্ধিমান হিসেবে উপস্থাপন করতে চায়। স্বাভাবিক দৃষ্টিতে অঢেল ধনসম্পদ ও ক্ষমতা আছে এমন মানুষদের সফল ও বুদ্ধিমান মনে করা হয়। মনে করা হয়, বুদ্ধি ও কূটকৌশলের জোরে মানুষ এই সফলতা অর্জন করেছে ভাবা হয়। কিন্তু ঢালাওভাবে এমন মনে করা কোরআন-হাদিসের শিক্ষা পরিপন্থী কাজ।
হাদিসে বুদ্ধিমান প্রসঙ্গে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘একদা আমি হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে ছিলাম। এমতাবস্থায় একজন আনসারি সাহাবি এসে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে সালাম দিলেন এবং বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! মুমিনদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা উত্তম কে? তিনি বললেন, স্বভাব-চরিত্রে তাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অধিক উত্তম।
তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, মুমিনদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা বুদ্ধিমান কে? তিনি বললেন, তাদের মধ্যে যারা মৃত্যুকে অধিক স্মরণ করে এবং মৃত্যু-পরবর্তী জীবনের জন্য উত্তমরূপে প্রস্তুতি গ্রহণ করে, তারাই সর্বাধিক বুদ্ধিমান।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ : ৩৫৯১)
কোরআনে আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করা মানুষদের বুদ্ধিমান বলে সম্বোধন করা হয়েছে। বর্ণিত হয়েছে, ‘তোমরা পাথেয় সংগ্রহ কোরো, আত্মসংযমই শ্রেষ্ঠ পাথেয়। হে বোধসম্পন্ন ব্যক্তিরা! তোমরা আমাকে ভয় কোরো।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৯৭)। অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে বুদ্ধিমানরা! আল্লাহকে ভয় কোরো। (সুরা : তালাক, আয়াত : ১০)
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.