স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশ যেতে হলে আইনি প্রক্রিয়া মোকাবিলা করতে হবে। সেজন্যই তার পরিবারের আবেদন আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে।
শনিবার রাজধানীর আইডিইবির এক সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়াকে মানবিক কারণে নির্বাহী আদেশে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে সাজা হয়েছে, যা আইনি প্রক্রিয়ায় হয়েছে। এখন তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে হলে অবশ্যই আদালত কিংবা আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে যেতে হবে।
আরও পড়ুন>> জাহাজ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা, সেন্টমার্টিনে আটকা দেড় শতাধিক পর্যটক
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া কয়েকটি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশে বাসায় থেকে চিকিৎসা নেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন তিনি।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, তাকে (খালেদা জিয়া) বিদেশে নিতে তার ভাই একটি আবেদন করেছিলেন। কিন্তু এখানে আইনি জটিলতা রয়েছে। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে আবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। এরপর কিছু করতে হলে আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থায় যেতে হবে। প্রধানমন্ত্রীও গতকাল (শুক্রবার) এটা নিয়ে ব্রিফ করেছেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা শঙ্কার বিষয়ে প্রশ্ন করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের বাসভবন খুবই সুরক্ষিত। তার নিরাপত্তার কোনও ঘাটতি নেই।
এদিকে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে বিদেশ পাঠানোর ব্যবস্থা করতে সরকারের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে। আইনমন্ত্রী আজ (শনিবার) জানিয়েছেন আগামীকাল রোববার এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারের অবস্থান জানানো হবে।
উল্লেখ্য, দেড় মাসের বেশি সময় ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন খালেদা জিয়া। গত ৯ আগস্ট শারীরিক অসুস্থতার কারণে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। এরপর থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। এর আগেও অবশ্য খালেদা জিয়াকে বেশ কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, আর্থাইটিস, রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্রে জটিলতা, ফুসফুস, চোখ ও দাঁতের নানা সমস্যায় ভুগছেন। এ ছাড়া তার মেরুদণ্ড, হাত ও হাঁটুতে বাতের সমস্যাসহ আরও কিছু শারীরিক জটিলতা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার সাজা হয়। সেদিন থেকে প্রায় দুই বছর কারাবন্দি ছিলেন তিনি। এ ছাড়া জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আরও সাত বছরের সাজা হয় খালেদা জিয়ার। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ করোনা মহামারির শুরুতে তার পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দিয়েছিল সরকার। এরপর থেকে তার মুক্তির মেয়াদ ছয় মাস করে বাড়ানো হচ্ছে।
ইবাংলা/এসআরএস
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.