খোলা বাজারে ডলারের দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে। এক দিনের ব্যবধানে ডলারের দাম খোলা বাজারে সর্বোচ্চ ৩ টাকা বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) শেষদিকে খোলা বাজারে প্রতি ডলার ১২৭ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। আগের দিন বুধবার খোলা বাজারে প্রতি ডলার ১২৪ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার ( ৯ নভেম্বর) রাজধানীর মতিঝিল, দিলকুশা, পুরানা পল্টন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চিকিৎসা, শিক্ষা বা ভ্রমণের জন্য বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতি ডলার ১২৭ টাকায় কেনা হয়েছে। অথচ, গত সপ্তাহে খোলা বাজারে প্রতি ডলার ছিল ১১৮ থেকে ১২০ টাকা। তাও ছিল নির্ধারিত দামের চেয়ে ৫-৭ টাকা বেশি।
আরও পড়ুন>> জনগণ ‘একতরফা’ নির্বাচন হতে দেবে না: রিজভী
মানি এক্সচেঞ্জ হাউজের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ মানি এক্সচেঞ্জের কাছে ডলার নেই। যাদের কাছে আছে, তারাও সরাসরি ডলার বিক্রি করছেন না। পরিচিত কারও মাধ্যমে ডলার বিক্রি করছেন।
পুরানা পল্টনের চকবাজার মানি এক্সচেঞ্জের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ডলারের অনেক সঙ্কট। দিনের ব্যবধানে রেট বাড়ছে ৩ থেকে ৪ টাকা। সঙ্কটের কারণে আমরাও চাহিদা থাকলেও ডলার সরবরাহ করতে পারছি না।
অপর এক মানি চেঞ্জারের কর্মকর্তা বলেন, বৃহস্পতিবার সর্বশেষ ১২৭ টাকায় ডলার বিক্রি করেছি। আগের দিন বুধবার ডলার ১২২ টাকা থেকে ১২২ টাকা ৫০ পয়সায় কিনে ১২৩ থকে ১২৪ টাকায় বিক্রি করেছি। খোলা বাজার থেকে চিকিৎসা, শিক্ষা বা ভ্রমণের জন্য বিদেশে যেতে যারা বৃহস্পতিবার ডলার সংগ্রহ করেছেন, তাদের প্রতি ডলার ১২৭ টাকায় কিনতে হয়েছে।
এদিকে, ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে রেমিট্যান্সের ডলারের সর্বোচ্চ দাম ১১৫ টাকা নির্ধারণ করেছে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা)। বুধবার জরুরি সভায় রেমিট্যান্সে ডলারের দাম নির্ধারণ করা হয়।
ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, ডলারের সঙ্কট কমাতে রেমিট্যান্স আহরণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। এমন পরিস্থিতিতে বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো রেমিট্যান্সের ডলারের দাম হঠাৎ করে ১২ থেকে ১৪ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে, অনেক ব্যাংককে বাধ্য হয়ে ১২২ থেকে ১২৩ টাকায় ডলার কিনতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে এবিবি ও বাফেদা জরুরি সভায় রেমিট্যান্সে ডলারের সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ব্যাংকগুলোর সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী প্রবাসী ও রপ্তানি আয় কেনার ক্ষেত্রে ডলারের দাম ১১০ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। এর সঙ্গে রেমিট্যান্সে ব্যাংকগুলো নিজেদের মতো করে প্রণোদনা দিতে পারবে বলে জানানো হয়। তবে, বেশিরভাগ ব্যাংক এ দরে ডলার পাচ্ছে না। তাই, অনেক ব্যাংক ১২২ টাকা থেকে ১২৪ পর্যন্ত দরে ডলার কিনছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আন্তঃব্যাংকে ডলার লেনদেন হচ্ছে ১১১ টাকায়।
উল্লেখ্য, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর দেশে ডলার সঙ্কট বাড়ে। এ সঙ্কট মোকাবিলায় শুরুতে ডলারের দাম বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু, তাতে সঙ্কট আরও প্রকট হয়। পরে গত বছরের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ায়। এ দায়িত্ব দেওয়া হয় এবিবি ও বাফেদাকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় তারা সভা করে ডলারের রেট নির্ধারণ করে আসছে।
ইবাংলা/এসআরএস
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.