ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা তুলে নিয়ে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী আইন-২০২১ সংশোধন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
প্রধান উপদেষ্টার যমুনা কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে বলা হয়, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পটভূমিতে প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্যান্য উপদেষ্টাদের সমন্বয়ে গত ৮ আগস্ট গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বৈষম্যমূলক সব আইন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আরও পড়ুন…প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ৩ দেশের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
এতে আরও বলা হয়েছে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায় বিদ্যমান আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবার’ সংক্রান্ত বিধান বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। বিবৃতিতে বলা হয়, নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার জন্য নিরাপত্তা প্রয়োজন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এটি অনুভূত হয়েছে যে, কিছু বিধান বাতিল করা প্রয়োজন এবং তাই উপদেষ্টা পরিষদ সর্বসম্মতভাবে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (এসএসএফ) আইন, ২০২১ সংশোধন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উপদেষ্টা পরিষদ আইন ও সংসদীয় বিষয়ক বিভাগ দ্বারা যাচাই সাপেক্ষে ‘জাতির পিতার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ, ২০২৪’’ খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হচ্ছে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ফল”।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিজওয়ানা বলেন, উপদেষ্টা পরিষদ এটিকে “বৈষম্যমূলক” বিবেচনা করে আইন সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি বলেন, জোরপূর্বক গুম করা থেকে সকল ব্যক্তির সুরক্ষা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কনভেনশন বিষয়ক দলিলে বাংলাদেশ স্বাক্ষর করেছে যাতে জোরপূর্বক গুমের প্রতিটি ঘটনা তদন্ত করার বিষয়ে দেশের অঙ্গীকার প্রতিফলিত হচ্ছে।’ তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা এই দলিলে স্বাক্ষর করেছেন। প্রায় ৭০০ জন এখনও জোরপূর্বক গুমের কারণে নিখোঁজ রয়েছেন। ‘মায়ের ডাক’সহ বিভিন্ন সংগঠন এই বিষয়ে কাজ করছে।”
তিনি এমন একটি ব্যবস্থা প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন যাতে কেউ ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে আইন প্রয়োগকারী ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করে জোরপূর্বক কাউকে গুম করতে না পারে। রেজওয়ানা বলেন, “আমাদের মধ্যে অনেকেই বলপূর্বক গুমের শিকার হয়েছে। আমরা কনভেনশনে স্বাক্ষর করেছি, যাতে কেউ সরকার বিরোধী কার্যকলাপ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং জাতীয় নিরাপত্তার নামে অভিযোগ করে কোনো বাহিনী বা অন্য যে কোনো উপায়ে কোনো নাগরিককে জোরপূর্বক গুম করতে না পারে।” গুম হওয়া থেকে সকল ব্যক্তির সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক এই কনভেনশন ২০০৬ সালের ২০ ডিসেম্বর নিউইয়র্কে গৃহীত হয়।
রিজওয়ানা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিভিন্ন খাতে সংস্কারের অংশ হিসেবে কালো টাকা সাদা করার বিধান বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়ে বলেছে, কালো টাকা সাদা করার বিধানের বিরুদ্ধে একটি সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কারণ সরকার বিষয়টির সাথে সম্পর্কিত নৈতিকতাকে গুরুত্ব দিয়েছে।
ইবাংলা/ বা এ
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.