বাগেরহাট জেলার চিতলমারি থানাধীন রহমতপুর ফাজিল মাদ্রাসায় জাল জালিয়াতির মাধ্যমে মোহাম্মাদুল্লার বিরুদ্ধে অধ্যক্ষ হওয়ার অভিযোগ এসেছে। সরকারি নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে স্থানীয় এমপি শেখ হেলালের প্রভাব খাটিয়ে, সম্পুর্ণ নিয়ম নীতির ব্যত্য়য় ঘটিয়ে সভাপতি স্বাক্ষরের জ্বাল করে অনিয়ম তান্ত্রিক ভাবে তিনি অধ্যক্ষ হয়েছেন।
এ বিষয় রহমতপুর ফাজিল মাদ্রাসার সাবেক সভাপতি আমিনুল হক মাহমুদ বলেন- “মাদ্রাসার সাবেক প্রিন্সিপাল ইন্তিকালের ফলে অধ্যক্ষ পদটি যখন শুণ্য হয়ে যায়, ঠিক তখন থেকেই এই মোহাম্মাদুল্লাহ প্রিন্সিপাল হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেন। আমাকে না জানিয়ে আমার নাম দিয়ে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন এবং ৩১শে আগষ্ট ২০১৪ তারিখে ভুয়া রেজুলেশন করেন, এমনকি আমার নাম দিয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি বাছাই কমিটি করেন। কিন্তু সেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে অধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য কিছুই উল্লেখ্য ছিলো না।
আমিনুল হক ইবাংলা প্রতিনিধির কাছে আরো বলেন, আমাকে না জানিয়েই বাগেরহাট পি.সি কলেজে ৫ই অক্টোবর নিয়োগ পরিক্ষার ব্যবস্থা করেন। এ সবের কিছুই তিনি আমাকে জানাননি এবং আমি জানতে পেরে তাকে এই সকল দুর্নিতির বিষয় প্রশ্ন করলে তিনি কোন উত্তর দেন নি। নিয়ম অনুযায়ী তিনি অধ্যক্ষ হওয়ার উপযুগি নয়। আমি এই সকল দুর্নিতি নিয়ে গত ১৮ই অক্টোবর ২০১৪ তারিখ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার বরাবর দরখাস্ত দাখিল করেছিলাম কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাব খাটিয়ে এটির কোন তদন্ত হয়নি।
এ বিষয় রহমতপুর ফাজিল মাদ্রাসার সাবেক উপ-অধ্যক্ষ আ:সত্তার বলেন: মোহাম্মাদুল্লাহ এতটাই দুর্নীতির চাদরে মোড়ানো যে, যখন তিনি অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেছেন, তার প্রায় কয়েক মাস পরে আমাকে বাংলাদেশ মাদ্রাসা বোর্ড থেকে অফিসিয়াল স্বারক নং সহ পত্র পাঠানো হয় এবং তাতে লেখা ছিলো- ‘উপ-অধ্যক্ষ আ: সাত্তারকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করে আগামি ৬ মাসের মধ্যে অধ্যক্ষ নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হোক, আদেশ ক্রমে অনুরোধ করা হইলো।’ তবে দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এই চিঠি আমার হাতে পৌছানোর কয়েক মাস পুর্বেই মোহাম্মাদুল্লাহ নিয়ম বহির্ভুত অধ্যক্ষের চেয়ারটি দখল করে রেখেছেন।
এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, রহমতপুর ফাজিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মারা যাওয়ার পরে তারই আপন ভাই মোহাম্মাদুল্লাহ অধ্যক্ষ হওয়ার কোন অভিজ্ঞতা না থাকলেও সরকারি নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে স্থানীয় এমপি শেখ হেলালের প্রভাব খাটিয়ে, সম্পুর্ণ নিয়ম নীতির ব্যত্য়য় ঘটিয়ে সভাপতি স্বাক্ষরের জাল করে অনিয়ম তান্ত্রিকভাবে তিনি অধ্যক্ষ হয়েছেন।
জানা যায় মোহাম্মাদুল্লাহ শেখ হেলালের মাকে ঝার ফূকের/ পানি পড়া দিয়ে চিকিতসা করতেন। কাকতলীয়ভাবে মোহাম্মাদুল্লাহর পানি পড়া, তাবিজ কবজের ওপরে বিশ্বাস স্থাপন করেন শেখ হেলালের মা। আর এসব চিকিতসার জন্য মোহাম্মাদুল্লাহকে কোন টাকা পয়সা দিলে তিনি নিতেন না। বলতে আমি আমার প্রাপ্য আপনার কাছ থেকে চেয়ে নিব।
এভাবে বলে বলে ঝার ফূকের চিকিতসা করে আওয়ামী লীগের অন্যতম ক্ষমতাধর স্থানীয় এমপি শেখ হেলালের মাকে এক ধরণের ব্ল্যাকমেইল করে রহমতপুর ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ’র চেয়ার বাগিয়ে নেন এখনো বহাল তাবিয়তে অধ্যক্ষের পদে থাকা মোহাম্মদুল্লাহ।
এসব বিষয়ে অধ্যক্ষ মোহাম্মাদুল্লাহর মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি ইবাংলাকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো ব্যক্তি শত্রুতা। আমি নিয়ম মেনেই অধ্যক্ষ হয়েছি।
চলবে…
ইবাংলা/ বা এ বা
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.