এতোদিন বাংলাদেশে ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত সরবরাহ করে আসছে ভারেত আদানি গ্রুপ। এবার সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে বাংলাদেশের কাছে বকেয়া পাওনার কারনে এখন থেকে ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত সরবরাহ করছে আদানি গ্রুপ।
বাংলাদেশের কাছে আদানি গ্রুপের বকেয়া পাওনা রয়েছে ৮৮৬ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ১০ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা)। এ কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দুটি ইউনিটের একটি বন্ধ রাখা হয়েছে। পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশ পিএলসির তথ্য বলছে, বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে আদানি অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে।
জানা গেছে, সময়মতো বকেয়া বিল না পেয়ে এই পদক্ষেপ নিয়েছে এপিজেএল। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বকেয়া পরিশোধের জন্য চাপ দিয়ে আসছে তারা।
১ হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বর্তমানে একটি ইউনিট থেকে প্রায় ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে, যা জাতীয় উৎপাদনকে প্রভাবিত করেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং হয়েছে।
এর আগে বিদ্যুৎ সচিবকে চিঠি দিয়ে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (পিডিবি) ৩০ অক্টোবরের মধ্যে বকেয়া বিল পরিশোধ করতে বলেছিল এপিজেএল। গত ২৭ অক্টোবর পাঠানো ওই চিঠিতে এপিজেএল জানিয়েছিল, নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে বিল পরিশোধ না করলে তারা ৩১ অক্টোবর বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির (পিপিএ) আওতায় প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, আপনি (সচিব) জানেন যে, নির্ধারিত সময়সীমা দ্রুত এগিয়ে আসছে এবং এখন পর্যন্ত পিডিবি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে ১৭০ দশমিক ০৩ মিলিয়ন ডলারের ঋণপত্র দেওয়া হয়নি ও বকেয়া ৮৪৬ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেনি।
তবে পিডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, তারা এর আগের বকেয়ার একটি অংশ পরিশোধ করেছিলেন। তবে জুলাই থেকে আগের মাসগুলোর চেয়ে বেশি চার্জ নিচ্ছে আদানি। পিডিবি সপ্তাহে ১৭ থেকে ১৮ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করছে, যেখানে চার্জ হচ্ছে ২২ মিলিয়ন ডলারের বেশি। এ কারণেই বকেয়া বিল আবার বেড়েছে।
এ ছাড়া কৃষি ব্যাংককে গত সপ্তাহের পেমেন্ট জমা দেওয়া হয়েছে বলেও জানায় পিডিবি। কিন্তু ডলার সংকটের কারণে ব্যাংক পেমেন্টের বিপরীতে ঋণপত্র খুলতে পারেনি- এমন তথ্য দেন পিডিবির ওই কর্মকর্তা।
বাংলাদেশের মোট বিদ্যুতের চাহিদার ১২ শতাংশ (বা তার সামান্য কমবেশি) ভারত থেকে সরবরাহ করা হয় বলে এ সেক্টরের সঙ্গে জড়িতরা জানিয়েছেন।
ভারতের যে সংস্থাটির বাংলাদেশ থেকে প্রাপ্য অর্থের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, সেই আদানি পাওয়ার ইতোমধ্যে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের বরাবরে চিঠি লিখে তাদের পাওনা ৮০০ মিলিয়ন বা ৮০ কোটি ডলার মিটিয়ে দেওয়ার জন্য তার ‘হস্তক্ষেপ’ চেয়েছে। ড. ইউনূসকে চিঠি দিয়েছিলেন গৌতম আদানি নিজেই।
ইবাংলা/ বা এ
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.