‘বঙ্গবন্ধু সেতুর নাম আবু সাঈদ সেতু রাখা হবে’, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এমন মন্তব্য করেছেন বলে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে। দাবিটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার।সংস্থাটি জানায়, ‘বঙ্গবন্ধু সেতুর নাম আবু সাঈদ সেতু রাখা হবে’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম করেননি।
প্রকৃতপক্ষে, কোনো রকমের নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য-প্রমাণের উল্লেখ পাওয়া যায়নি।
তাছাড়া, ওই দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডে কোনো গণমাধ্যমের লোগো বা নামেরও উল্লেখ পাওয়া যায়নি। সাধারণত কোনো গণমাধ্যম কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করে থাকলে, প্রচারিত ফটোকার্ডে গণমাধ্যমটির নাম বা লোগোর সংযুক্তি থাকে৷ তবে, প্রচারিত ওই ফটোকার্ডটিতে এমন কোনো গণমাধ্যমের নাম বা লোগোর উল্লেখ পাওয়া যায়নি, যা থেকে ধারণা করা যায় যে আলোচিত ফটোকার্ডটি গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়নি।
পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে আলোচিত দাবিটির সপক্ষে গণমাধ্যম বা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রেও কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। নাহিদ ইসলাম তার অফিশিয়াল ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে নানা তথ্য, মতামত জানিয়ে থাকেন। তবে, নাহিদ ইসলামের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করলেও আলোচিত দাবিটির সপক্ষে কোনো পোস্ট পাওয়া যায়নি।
তবে গত ১৬ নভেম্বর ইত্তেফাকের ওয়েবসাইটে ‘যমুনা সেতুকে ‘শহীদ আবু সাঈদ সেতু’ নামকরণ করা হোক: মাহমুদুর রহমান’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ওই প্রতিবেদনে জানা যায়, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান রংপুরে আবু সাঈদের কবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ কালে বলেছেন, ‘আমি মনে করি, রংপুরবাসীর জন্যে সবচেয়ে বেশি গৌরবের নাম আবু সাঈদ। সরকারের কাছে আবারও দাবি করতে চাই দ্রুত যমুনা সেতুর নামকরণ পরিবর্তন করে ‘শহীদ আবু সাঈদ সেতু’ নামকরণ করা হোক।’
এছাড়াও অনলাইন সংবাদমাধ্যম ঢাকা পোস্ট এর ওয়েবসাইটে গতবছরের ১২ আগস্ট প্রকাশিত ‘আবু সাঈদের নামে যমুনা সেতুর নামকরণ করতে হবে : হারুনুর রশীদ’ শিরোনামের একটি সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
ওই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১২ আগস্ট বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেছেন, ‘কোটা আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদের নামে যমুনা সেতুর নামকরণ করতে হবে। একই সঙ্গে এই গণআন্দোলনে নিহত ও আহতদের মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’
অর্থাৎ, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন সময় সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ যমুনা সেতুর নাম আবু সাঈদ সেতু রাখার দাবি করলেও উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এমন কোনো মন্তব্য করেননি। সুতরাং, বঙ্গবন্ধু সেতুর নাম আবু সাঈদ সেতু রাখা হবে শীর্ষক মন্তব্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম করেছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.