ইরানের একাধিক পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

সূত্র: আলজাজিরা

Islami Bank

ইরানের একাধিক পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় ইসরায়েলের বিমান বাহিনী ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

শুক্রবার (১৩ জুন) ভোররাত ৩টার দিকে দেশটির রাজধানী তেহরানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলসহ বিভিন্ন জায়গায় বেশ শক্তিশালী বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এর জেরে সব ফ্লাইট বাতিল করে তেহরানের ইমাম খোমেনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে ইরানি সরকারি সংবাদ সংস্থা, নূর নিউজ।

ইরানে বিপ্লবী গার্ডের সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশি সংবাদমাধ্যম বিবিসি।ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, তেহরানে বিপ্লবী গার্ডের সদর দপ্তর ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আগুন এবং ধোঁয়া বের হচ্ছে।

এ ছাড়া, মার্কিন সংবাদ সংস্থা অ্যাক্সিওস এক প্রতিবেদনে জানায়, দুটি অজ্ঞাত সূত্রের দাবি অনুযায়ী ইরানে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী হামলা চালিয়েছে। এ কারণে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।

ইসরাইলি সেনাবাহিনী নিশ্চিত করেছে, তারা ‘নেশন অফ লায়ন্স’ নামে একটি পূর্বপরিকল্পিত সামরিক অভিযানে ইরানে আঘাত হেনেছে। তবে ইরানের সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল প্রেস টিভি অভিযোগ করেছে, ইসরাইলি হামলায় আবাসিক ভবনকেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

যদিও এই অভিযোগ ইসরায়েল অস্বীকার করেছে।টাইমস অফ ইসরাইল জানিয়েছে, এই হামলায় ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলো সরাসরি লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

ইসরাইলি সামরিক মুখপাত্র জানিয়েছেন, এই হামলাটি উচ্চমানের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়েছে এবং এর মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করা।

one pherma

দুই ডজনেরও বেশি জেট বিমানের সমন্বয়ে পরিচালিত এই অভিযান ছিল নিখুঁতভাবে পরিকল্পিত এবং সুনির্দিষ্ট। বিষয়টি নিশ্চিত করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কার্তজ বলেন, ইসরায়েলের পক্ষ থেকে ইরানে ‘আগাম প্রতিরোধমূলক’ হামলা চালানো হয়েছে।

আরও পড়ুন…ইরানে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল

সেই সঙ্গে ইসরায়েলজুড়ে ‘বিশেষ জরুরি অবস্থা’ জারির ঘোষণা দিয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার জানিয়েছে, অদূর ভবিষ্যতে ইসরায়েল রাষ্ট্র ও এর বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র আর ড্রোন হামলার আশঙ্কা থেকে ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় আগাম প্রতিরোধমূলক হামলা চালানো হয়েছে।

আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরাইল নিজের ভূখণ্ডেও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। দেশটির সামরিক মুখপাত্রের দফতর থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় ভোর ৩টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সারাদেশে সব ধরনের শিক্ষামূলক কার্যক্রম, সমাবেশ এবং কর্মক্ষেত্রের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে-প্রয়োজনীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ব্যতীত।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেন, এই হামলার লক্ষ্য ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করা।তিনি আরও বলেন, আমাদের মিশন শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত যতদিন প্রয়োজন এ অভিযান চলবে।

এ ছাড়া, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুজন মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, ইসরায়েল ইরানে একটি হামলা চালিয়েছে। তবে ওয়াশিংটন এই হামলায় সহায়তা করেনি এবং এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানান তারা।

এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, ইরানে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সম্পৃক্ত নয়। ওয়াশিংটনের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হলো ওই অঞ্চলে মার্কিন বাহিনীর সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

ইবাংলা বাএ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us