চুলে ভাগ্য খুলেছে হাজারো নারীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘একটা ছিল সোনার কন্যা/মেঘ বরণ কেশ’ ‘আলগা করো গো খোপার বাধন’ অথবা ‘চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা’। হাজারো গান-কবিতার সমাহার রয়েছে চুল নিয়ে। বিশেষত নারী সৌন্দর্যের বর্ণনায় বারবার সামনে আসে লম্বা ঘন কালো চুল।

সৃষ্টির আদিকাল থেকে নারীর পাশাপাশি পুরুষের সৌন্দর্যেরও বিশেষ অংশজুড়ে রয়েছে এই চুল। এখন শুধু নারীর সৌন্দর্যের প্রতীক নয়, ফ্যাশন সচেতন ছেলেদের কাছেও চুল সাজগোজের অংশ। সেজন্য এককালে মেয়েরাই কেবল চুলের যত্ন-আত্তি করলেও এখন ছেলেরাও নজর দিচ্ছে চুলে।

ময়মনসিংহ জেলাজুড়ে সম্ভাবনাময় এই ক্ষুদ্র শিল্পের প্রসার ঘটেছে । জেলার বিভিন্ন উপজেলার গ্রাম ঘুরে এই ক্ষুদ্র শিল্পের কাজ করতে দেখা গেছে গৃহিণী, কিশোরীসহ বেকার নারীদের। পরচুলা তৈরি করে দারিদ্রতা দূর করেছেন অনেক নারী। বেকার নারীরা পরচুলা শিল্পে কাজ করে মাসে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা আয় করছেন। কেউ আবার নেতৃত্ব দিয়ে ২০-২২ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মানুষের মাথার চুল বড় হলে কেটে ফেলা হয়। এই চুল আগে আবর্জনার আকারে ফেলে দেওয়া হতো। এখন সেই চুল রপ্তানিতে সম্ভাবনার দুয়ার খুলছে। দিন দিন বিদেশের বাজারে চুলের চাহিদাও বাড়ছে। মানুষের কেটে ফেলা চুল দিয়েই এই শিল্পের প্রসার ঘটেছে।

চাহিদা অনুসারে তিন প্রকারের পরচুলা তৈরি হচ্ছে দেশে। বড় পরচুলা তৈরি করতে তিন থেকে চার দিন সময় লাগে। আকারভেদে এ ধরনের প্রতিটি পরচুলা তৈরির মজুরি ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা। তবে করোনা মহামারির কারণে পরচুলা তৈরির মজুরি কমেছে।

গফরগাঁও বড়াইল এলাকায় এক গ্রামের প্রায় তিনশ নারী এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত। সেখানকারই পরচুলা শিল্পী আকলিমা আক্তার (২৯)। স্বামী দিনমজুর নিজাম উদ্দিন। টানাপোড়েনের সংসারে স্বামীর একার আয়ে নুন আনতে পানতা ফুরায় দশা। সংসারের অভাব অনটন দূর করতে তাই এক বছর আগে পরচুলা তৈরির কাজ শেখেন আকলিমা। এখন পরচুলা শিল্পী বনে গেছেন তিনি।

ইবাংলা/ আমিনুল/ নাঈম/ ১৬ নভেম্বর, ২০২১

Contact Us