মাদক ব্যবসায়ি আনোয়ার গ্রেফতার খবরে স্বস্তিতে স্থানীয়রা

পলাশে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার খবরে এলাকায় স্বস্তি। বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দাজালে ইয়াবাসহ গ্রেফতার হয়ে নরসিংদির পলাশ থানার মাদক মামলায় জেলহাজতে আছেন মাদক ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন। যদিও পলাশ থানার কর্মকর্তাদের রহস্যজনক আচরনে হতাশ এলাকাবাসী।

সুত্রে জানা যায়, গত ৩০ জুলাই নরসিংদির পলাশ থানা এলাকার দাপুটে শ্রমিক নেতা আনোয়ারকে গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক সাদিকুর রহমান ৩০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার করে থানায় সোপর্দ করে। পরে আনোয়ারকে মাদক মামলায় জেলহাজতে প্রেরণ করলেও অজ্ঞাত কারনে রিমান্ড চায়নি থানা পুলিশ।এ বিষয়ে কথা বলতে পলাশ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ ইলিয়াসের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে,‌ তিনি বলেন, অনেকদিন আগের ঘটনা । একথা বলেই তিনি মুঠোফোনের লাইন কেটে দেন। এরপর বারংবার কল দিলেও তিনি রীসিভ করেননি।

আরও পড়ুন…বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় এক সন্তানের জননীকে এসিড নিক্ষেপ

অনুসন্ধানে জানা যায়, পলাশ থানা এলাকার শ্রমিক নেতা আনোয়ার এর পিতা মৃত আফসার উদ্দিন ছিলেন জুটমিলের শ্রমিকবান্ধব একজন নেতা। আফসার উদ্দিনের মৃত্যুর পর জুট মিলের শত শত শ্রমিক তাঁর ছেলে আনোয়ারকে নিজেদের নেতা নির্বাচিত করে। শ্রমিকদের বিশ্বাস ছিলো আনোয়ারর পিতা আফসার উদ্দিনের পথ অনুসরণ করে শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করবে। কিন্তু আনোয়ার শ্রমিকদের স্বার্থের চাইতে নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতে মিল মালিকের বিরুদ্ধে ভুয়া আন্দোলন গড়ে তোলো।

কিছুদিন পর জুটমিলটি বন্ধ হয়ে গেলে চরম বিপাকে পড়ে মিল শ্রমিকরা। আয় রোজগার না থাকায় মিল শ্রমিকরা চরম দুর্দশায় দিন কাটালেও শ্রমিক নেতা আনোয়ারের দিনকাল ভালোই চলছে। বন্ধ জুটমিলের শ্রমিক ইউনিয়ন অফিসকে আনোয়ার সুকৌশলে বানিয়ে তোলে মাদকসেবীদের আখড়ায়।

সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ইউনিয়ন অফিসে চলতো মাদকের আড্ডা। এলাকার শত শত তরুন-যুবককে এই মাদকের আখড়ায় নেশা করার সুযোগ করে দেয় সে। আর ইয়াবা গাঁজা মদসহ সবধরনের মাদকের যোগান দিতো আনোয়ার।

শিল্পনগরী এলাকার স্কুল কলেজ মসজিদ-মাদ্রাসার সকলের চোখের সামনেই অবাধে মাদক বেচাকেনা ও সরবরাহ করতো আনোয়ার। মাদক ব্যাবসা করে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে এলাকার বালুচর পাড়ায় স্থায়ী পাকা বাড়ী নির্মাণ করেছেন

এ প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় আনোয়ারের বিশ্বস্ত সেলসম্যান খায়রুলের সাথে। খায়রুল জানায়, প্রতিদিন আমাকে ১৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট দিতেন ২৫০ টাকা দাম ধরে। আমি বিক্রি করতাম ৩০০ টাকায়। খায়রুলের সাথে এই প্রতিবেদকের কথোপকথনের ভয়েস রেকর্ড রয়েছে ই- বাংলা ডট প্রেস কর্তৃপক্ষের হাতে।

আরও পড়ুন…চীনে চলতি বছরে বৈদেশিক বাণিজ্য বৃদ্ধি

আনোয়ারের গ্রেফতারে গোয়েন্দা পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছে এলাকার সুশীল সমাজ। তারা বলেন, থানা-পুলিশের নাকের ডগায় আনোয়ারের মাদক ব্যাবসা চলতো বলে ভয়ে কেউ কিছু বলতনা। গোয়েন্দা পুলিশের হাতে সে গ্রেফতার হওয়ায় জুটমিলের ইউনিয়ন অফিসের মাদকের আখড়া আপাতত বন্ধ হলো। তবে গ্রেফতারের পরপরই তার সাঙ্গপাঙ্গরা গা ঢাঁকা দিয়েছে। তাদেরও গ্রেফতার করতে আনোয়ারকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ কেন করছেনা পলাশ থানার পুলিশ? প্রশ্ন পলাশবাসীর ।

ইবাংলা/জেএন/৮আগস্ট,২০২২

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us