আইইবি ঢাকা সেন্টার এবং ইআরসি-এর যৌথ উদ্যোগে আইইবি মিলনায়তনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান,বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ও ১৫ আগষ্টের সকল শহিদদের স্মরণে ‘আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি মন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক বলেন,’১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ রাত ১২.২০ টায় বঙ্গবন্ধুই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন যা সারা বিশ্বে ২৭ মার্চ পৌঁছে গিয়েছিল।
জিয়াউর রহমানই বাঙালি জাতিকে বিভক্ত করেছে। জয় বাংলা স্লোগান জিয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। বাংলাদেশ জন্ম, ইতিহাস, স্বাধীনতার ঘোষণা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে তথ্য বিভ্রান্ত তৈরি করেছেন জিয়া। জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের যে ক্ষতি করেছেন তা অবিশ্বাস্য’।
আরও পড়ুন…তারেক কানেকশন : আওয়ামী লীগে ভর করে হাশেম রেজার অস্বাভাবিক উত্থান
কৃষি মন্ত্রী বলেন, মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যা সাথে জড়িত ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর পরিকল্পনা কমিশনের নুরুল ইসলামের সাথেও জিয়াউর রহমানের সাথে গভীর সম্পর্ক ছিল। বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বলতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ছন্দের যাদুকর ছিলেন। ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা, তোমার আমার ঠিকানা, পিন্ডি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’ এই স্লোগানের পৃষ্ঠপোষকতায় বঙ্গবন্ধু ছিলেন।
তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গসহ পদ্মা, মেঘনা, যমুনা বিধৌত দেশের মানুষ কখনোই স্বাধীন ও সার্বভৌম ছিল না। ১৯৪৭ সালে অনেক কষ্টের বিনিময়ে আমরা পেয়েছিলাম পূর্ব পাকিস্তান, নতুন শোষকের হাতে পড়ে গিয়েছিল বাঙালি। সেই শোষক থেকে মুক্তি হলো ১৯৭১ সালে আন্দোলনের মাধ্যমে যার নেতৃত্বে ছিল বঙ্গবন্ধু।
মন্ত্রী আরও বলেন, আওয়ামী লীগ থেকে মুসলিম শব্দ বাদ দেওয়াই ছিল বঙ্গবন্ধুর দুরদর্শিতার প্রমান। বঙ্গবন্ধু আপাদমস্তক ছিল অসাম্প্রদায়িক। প্রীতিলতা এবং সূর্যসেনের চট্টগ্রাম থেকেই স্বাধীনতার সংগ্রাম শুরু হবে বঙ্গবন্ধু ভবিষ্যৎ বানী দিয়েছিলেন।
বহিঃবিশ্বে এখনো বঙ্গবন্ধুর জনপ্রিয়তা কমেনি। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর বাংলাদেশ জন্মের বিরোধী হেনরী কিসিঞ্জারও বলেছেন, আমি অনেক প্রেসিডেন্টের সাক্ষাত পেয়েছি কিন্ত আমি এখনো বাংলাদেশের জন্মদাতা বঙ্গবন্ধুকে মিস করি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইইবির সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর বলেন, যোগাযোগ, কৃষি,পানি, বিদ্যুৎ, পারমানবিক সেক্টরের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু অবগত ছিলেন। বঙ্গবন্ধু মাস্টার প্ল্যান করেছিলেন বলেই এখনো বাংলাদেশ সচ্ছ ও সফল ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, যতদিন শেখ হাসিনার হাতে বাংলাদেশ থাকবে ততদিন বাংলাদেশ নিরাপদ৷ আগামীর যেকোন বিপদে প্রকৌশলীরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বিশ্বাস রাখবে৷
অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, বঙ্গমাতাকে ছাড়া বঙ্গবন্ধুর আলোচনা করা ঠিক না। অল্প বয়সেই বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামের সাথী হয়েছিল বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। বঙ্গবন্ধুর সাথেই তিনি পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। ভাসানীর সাথে বঙ্গবন্ধুর মিষ্টি সম্পর্ক ছিল। আদর করে শেখ মুজিবুর রহমানকে বলতেন, ‘মজিবর’।বঙ্গবন্ধুর সাথে মোস্তাকের সম্পর্ক নিয়ে ভাসানীই ভবিষ্যৎ বানী দিয়েছিলেন, ‘মজিবর মোস্তাক হল শাপের মতো, সাবধানে থেকো’।
আরও পড়ুন…কিশোর অপরাধ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে’
রাজনীতির সংগ্রামের জন্য বঙ্গবন্ধু অবদানের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সাইকেল দিয়ে সারা ঢাকা শহর বেড়িয়েছেন৷ আর এখন ছাত্রনেতাদের গাড়ির বহর দেখলে অবাক লাগে৷তারুন্যের বিষয়ে বলতে গিয়ে বঙ্গমাতার নির্দেশনা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বলেন, বঙ্গমাতা জানতেন ‘তারুন্যের আন্দোলন ছাড়া কোন সংগ্রামই সফল হবে না’। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু কারাগার পুরো সময়টাই কাটিয়েছেন৷স্রষ্টা বঙ্গবন্ধুকে ভালবাসেন বলেই ওনাকে অনেক দিয়েছেন, অমর করেছেন৷ এই দেশ সংগ্রামের মাধ্যমেই স্বাধীনতা অর্জন করতে হবে বঙ্গবন্ধু তা জানতেন।
ড. সৈয়দ আনোয়ার আরও বলেন, ১৫ আগষ্ট, ৩রা নভেম্বর এবং ২১ আগষ্ট তিনটি ঘটনাই একই সুতায় গাঁথা এবং তিনটিই ‘গণহত্যা’। যে কোন আইনেই খুনীদের ‘মৃত্যদন্ড’ হওয়ার কথা। তৎকালীন সময়ে মেজর জিয়াউর রহমানের নিরবতা প্রমান করে তিনিও বঙ্গবন্ধুর হত্যার সাথে জড়িত ছিলেন৷
আইইবির প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. নূরুল হুদার সভাপতিত্বে এবং আইইবির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী শাহাদাৎ হোসেন শীবলুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আইইবির ভাইস-প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. নুরুজ্জামান, আইইবি ঢাকা সেন্টারের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোল্লা মোহাম্মাদ আবুল হোসেন, ইআরসির নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান প্রকৌ. গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর।
ইবাংলা/জেএন/২৩ আগস্ট,২০২২
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.