ম্যাচের রুদ্ধশ্বাস মুহূর্তে ছয় মেরে জয় এনে দেওয়ার কাজটি টি-টোয়েন্টিতে দেখা যায় প্রায়ই। যেমনটা গত রাতের এশিয়া কাপের ম্যাচে আফগানদের বিপক্ষে করে দেখিয়েছেন পাকিস্তানের নাসিম শাহ।
তবে মারকাটারি কুড়ি-ওভার যুগের আগেও পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা এমন ব্যাটিং করেছেন একাধিকবার। সংবাদ সংস্থা ফিরে দেখেছে শেষ মুহূর্তে ছয় হাঁকানো পাকিস্তানের এমন ৫ ম্যাচে।
আরও পড়ুন…বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে ছাড় দেওয়া হবে না : আইনমন্ত্রী
পাকিস্তানের ক্রিকেটীয় ইতিহাসে পাঁচটি স্মরণীয় ছক্কা মারার মুহূর্ত জাভেদ মিঁয়াদাদ:- শারজাহতে অনুষ্ঠিত ১৯৮৬ অস্ট্রাল-এশিয়া কাপের ফাইনালে ইনিংসের শেষ বলে ভারতের চেতন শর্মাকে জাভেদ মিঁয়াদাদের ছক্কা এখনো ভারতীয় সমর্থকদের কাঁদায়।
জয়ের জন্য ২৪৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামে পাকিস্তান। কিন্তু ৬১ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে পাকিস্তান। এমন অবস্থায় মিঁয়াদাদ ১১৪ বলে অপরাজিত ১১৬ রান করে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন।
ম্যাচ জয়ের জন্য শেষ বলে পাকিস্তানের ৪ রান দরকার, ভারতীয় ফাস্ট বোলার চেতন শর্মা ফুল টস বল করলে লেগ সাইড দিয়ে ছক্কা হাকিয়ে দর্শক গ্যালারিতে বল পাঠিয়ে মিঁয়াদদ বুনো উদ্যাপনে মেতে ওঠেন। -ম্যাচ টাই করা মুজতবা-
আরও পড়ুন…দিনাজপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশী কিশোর নিহত
১৯৯২ সালে ওয়ার্ল্ড সিরিজে ৫০ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে স্টিভ ওয়াহর করা ওভারের শেষ বলে ছক্কা হাকান পাকিস্তানের মিডল অর্ডার ব্যটার আসিফ মুজতবা। শেষ বলে তার ছক্কায় নাটকীয়ভাবে ম্যাচটি টাই হয়।
হোবার্টে অনুষ্ঠিত ম্যাচে জয়ের জন্য ২২৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে পাকিস্তান ১৯৭ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে। তবে এক প্রান্তে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন মুজতবা। ম্যাচ জিততে শেষ ওভারে পাকিস্তানের দরকার পড়ে ১৭ রানের।
এমন অবস্থায় াসি অধিনায়ক বল তুলে দেন পার্ট টাইম সিমার ওয়াহর হাতে। মুজতবা মাঠের চার দিক দিয়েই রানের ব্যন্যা বইয়ে দেন। ফুল টসে করা শেষ বলে মিড উইকেটের ওপড় দিয়ে ছক্কা হাকিয়ে ম্যাচটি টাই করেন মুজতবা।
-বুম বুম আফ্রিদি- চিত্তাকর্ষক ও ধুমধারাক্কা ব্যাটিং দিয়ে পাকিস্তানকে অনেক ম্যাচ জিতিয়েছেন শহিদ আফ্রিদি। তবে ৫০ ওভার ফর্মেটে অনুষ্ঠিত ২০১৪ সালের এশিয়া কাপে ভারতীয় স্পিনার রবীচন্দ্রন অশ্বিনের করা বলে দুই ছক্কা আজও বিশেষ কিছু।
জয়ের জন্য ২৪৬ রান চেজ করতে নেমে শেষ ওভারে পাকিস্তানের ১০ রান দরকার।১ উইকেট শিকারের মাধ্যমে ৫০তম ওভারটি শুরু করেন অশ্বিন। তবে তারকা এ স্পিনারকে পর পর দু’টি স্ট্রেইট ছক্কা হাকিয়ে দলকে দুই বল বাকি থাকতে ১ উইকেটে জয় এনে দেন। এই ইনিংসের সুবাদে আফ্রিদি ‘বুম বুম নামে পরিচিতি লাভ করেন।
-আসিফের আগমন- গত বছর সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আফগানিস্তানে বিপক্ষে ম্যাচে করিম জানাতের ওভারে পর পর চারটি ছক্কা হাকানো আসিফ আলীর পরিচিতি তুলনামুলক কমই ছিল।
আসিফ যখন ব্যাট করতে নামেন তখন জয়ের জন্য পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১৮ বলে ২৬ রান। ১৮তম ওভারে নন স্ট্রাইক প্রান্ত থেকে বেশ ভালভাবে বোলারকে পর্যবেক্ষন করেন আসিফ। এরপর জানাতকে পর পর চারটি ছক্কা মেরে এক ওভার হাতে রেখেই পাকিস্তানকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন আসিফ।
নাসিমের নায়কোচিত ইনিংস-পাকিস্তান দলের হয়ে ছক্কা হাকানো নতুন নায়ক নাসিম শাহ। চলমান এশিয়া কাপে গতকাল(বুধবার) আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১৩০ রান তাড়া করতে নেমে পাকিস্তানের শেষ ১০ বলে ২০ রানের প্রয়োজন পড়ে। এমন অবস্থায় ১০ নম্বরে ব্যাট হাতে নেমে নাসিম শাহ পাকিস্তানের ছক্কা মারার নতুন নায়কে পরিনত হন।
আরও পড়ুন…অসুস্থ রানি এলিজাবেথ, চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে
ইনিংসের শেষ বলের আগপর্যন্তও ভারতের দিকে হেলে ছিল ম্যাচ। শেষ বলে পাকিস্তানের দরকার ছিল ৪ রান। ভারতের পেসার চেতন শর্মা ইয়র্কার দিতে চেয়েছিলেন। আগে থেকে বোলারের মতিগতি অনুমান করে কিছুটা সামনে এগিয়ে বলটি ফুলটস বানিয়ে নেন মিয়াঁদাদ। লেগ সাইড দিয়ে বল আছড়ে ফেলেন গ্যালারিতে। শারজার গ্যালারিতে শুরু হয় বুনো উল্লাস। মাঠেও বুনো উল্লাস করেছিলেন মিয়াঁদাদ।
ইবাংলা/জেএন/ ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.