ইবির ফার্মেসি বিভাগে তালা, শিক্ষক নিয়োগের দাবি

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক:

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফার্মেসী বিভাগের শিক্ষার্থীরা শিক্ষক নিয়োগ, শ্রেণিকক্ষ সংকট ও ল্যাব স্থাপনের দাবিতে বিভাগে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন । শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেলা একটায় এ কর্মসূচি পালন করে তারা। এর আগে সকাল ১০টায় একই দাবিতে প্রশাসন ভবনের সামনে মানববন্ধন করেন। মানববন্ধন শেষে ‘মৃত্যুঞ্জুয়ী মুজিব’ ম্যুরালের সামনে প্রেস ব্রিফিং করেন এবং দাবি আদায়ের আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন।

Islami Bank

আরও পড়ুন…প্রথম পরীক্ষা দিয়েই বিয়ে দুই পরীক্ষার্থীর প্রশাসনের হস্তক্ষেপে একটি বাল্য বিয়ে বন্ধ অপরটি স্থগিত

ক্যাম্পাস সূত্রে, মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা ‘পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ ছাড়া আমরা সবাই দিশেহারা এই সমস্যার সমাধান চাই’, ‘সুষ্ঠু নিয়োগ, যোগ্য শিক্ষক, শিক্ষিত জাতি, উন্নত দেশ’, ‘দাবি মোদের একটাই পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ চাই’, ‘প্রশাসনের উদাসীনতা মানি না মানবো না’, ‘প্রায়োগিক শিক্ষা হোক আমাদের দীক্ষা’, ‘ফার্মেসী বিভাগের জন্য ল্যাব চাই’, ‘নামমাত্র শিক্ষা নয়, মানসম্মত শিক্ষা চাই’ ইত্যাদি লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের বিভাগে চারটা ব্যাচে দুই শত শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র দুইজন শিক্ষক আছেন। এছাড়া শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাস করতে হয় মেঝেতে। নেই পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ। ঔষধ শিল্পের সহযোগী এই বিভাগের জন্য এখন পর্যন্ত কোনো ল্যাব নাই। ফলে পর্যন্ত পর্যাপ্ত গবেষণার সুযোগ পাচ্ছি না। আমরা সব ধরণের একাডেমিক সুবিধা থেকেই বঞ্চিত হচ্ছি বলা যায়।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আজ বিভাগে তালা দিয়েছি। প্রশাসনের থেকে সদুত্তর না পাওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি অব্যহত থাকবে। আজ যদি প্রশাসন দাবির বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত না দেন আগামীকাল প্রশাসন ভবনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবো।

জানা যায়, বিভাগটিতে নিয়োগপ্রাপ্ত চারজন শিক্ষক থাকলেও গত ছয় মাস ধরে দুইজন শিক্ষক শিক্ষা ছুটিতে আছেন। এ ছাড়া ল্যাব ভিত্তিক বিষয় হলেও বিভাগটির জন্য কোন ল্যাব স্থাপন করা হয়নি। দুইজন শিক্ষকই বিভাগটি পরিচালনা করছিলেন। গত মাসে একজন রেজিস্ট্রার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী নেই। একাডেমিক ভবনের ঊর্ধমুখী সম্প্রসারণের পর কক্ষ বরাদ্দ দিলেও পর্যাপ্ত টেবিল-চেয়ার না থাকায় মেঝেতে বসেও ক্লাস করতে হচ্ছিল শিক্ষার্থীদের।

one pherma

প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের জানান, দুইজন শিক্ষকের পক্ষে ৪টি শিক্ষাবর্ষের সকল তত্ত্বীয় কোর্সের উপর পাঠদান করা সম্ভব হচ্ছে না। বিধায় বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রাখতে প্রতিনিয়ত অন্যান্য বিভাগের শিক্ষকদের দারস্থ হতে হচ্ছে । যার ফলে আমরা মানসম্মত শিক্ষা হতে বঞ্চিত হচ্ছি।

অপরদিকে দুইশতাধিক শিক্ষার্থীর জন্য পর্যাপ্ত চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ না থাকায় চরম ভোগান্তির সাথে আমাদের মেঝেতে বসে ক্লাস করতে হচ্ছে । যতদিন পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে দক্ষ শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা না হয় এবং বাকি সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে লিখিত কোনো বিবৃতি প্রদান করা না হয়, ততদিন পর্যন্ত আমাদের সকল ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করার মাধ্যমে এই আন্দোলন কর্মসূচি চলমান থাকবে।

আরও পড়ুন…দেশের প্রথম ৬ লেনের কালনা সেতু উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত

বিভাগটির সভাপতি সহকারী অধ্যাপক অর্ঘ্য প্রসূন সরকার বলেন, বিভাগে কোনো ল্যাব সহায়ক না থাকায় দুইজন শিক্ষককেই তত্ত্বীয় কোর্সের পাশাপাশি ল্যাব কোর্সের সকল দায়িত্ব পালন করতে হয় । যা আমাদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বিভাগের শিক্ষকেরা প্রতিনিয়ত এই সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে প্রসাশনকে অবগত করেছেন। কিন্তু প্রসাশন বারবার আশ্বস্ত করার পরও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দৃশ্যমান হয়নি।

ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া আছে। সামনে আমাদের মিটিং আছে, আমরা প্রস্তাব পাঠিয়েছি। এটা একটা প্রক্রিয়ার ব্যাপার। একটু সময় দিন। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।

ইবাংলা/জেএন/১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us