২৩ সেপ্টেম্বর হল ‘পঞ্চম চীনা কৃষকের ফসল কাটার উৎসব’। ২০১৮ সাল থেকে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং প্রতি বছর এই উৎসব উপলক্ষ্যে ব্যাপক চীনা কৃষক ও কৃষি, গ্রাম ও কৃষকের কাজে ব্যস্ত কর্মীদের শুভেচ্ছা জানান।
চলতি বছরের ফসল কাটা উত্সব উপলক্ষ্যে তিনি সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, গ্রামীণ পুনরুদ্ধার কাজ জোরদার করতে হবে, যাতে গ্রামের মানুষ আরো বেশি ধনী ও সুখী জীবন কাটায় এবং আরো সুন্দর গ্রাম নির্মাণ করতে পারে।
কৃষি, গ্রাম ও কৃষকের সমস্যা সমাধান করা হলো চীনের কমিউনিস্ট পার্টির অষ্টাদশ কংগ্রেসের পর সিপিসি’র সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সি চিন পিং এই কাজের ওপর অনেক গুরুত্বারোপ করেছেন। দারিদ্র্য বিমোচন থেকে গ্রামীণ পুনরুদ্ধার কৌশল বাস্তবায়ন পর্যন্ত তিনি সবসময় কৃষি, গ্রাম ও কৃষকের কাজ উন্নয়নে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
২০১৮ সাল থেকে তিনি চান্দ্র পঞ্জিকার প্রতিবছরের শরৎ বিষুবকে চীনা কৃষকের ফসল কাটার উৎসব হিসেবে নির্ধারণ করেন। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রথম ফসল কাটা উৎসব শেষ হওয়া মাত্রই সি চিন পিং চীনের বৃহত্তম শস্য ঘাঁটি হেইলুংচিয়াং প্রদেশ পরিদর্শন করেন। তিনি স্থানীয় ক্ষেতে শস্য চাষ, উৎপাদন ও ফলনের অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেন।
আরও পড়ুন…শারীরিক অবস্থার উন্নতি, কেবিনে নেওয়া হয়েছে রনিকে
তিনি বলেন, হেইলুংচিয়াং প্রদেশের বেইতাহুয়াং এলাকাকে এই পর্যায়ে উন্নীত করা সহজ ব্যাপার নয়। এলাকাটি চীনাদের খাওয়া-পরার সমস্যা সমাধানে বিরাট ভূমিকা পালন করেছে। যান্ত্রিকায়ন, তথ্যায়ন, বুদ্ধিমত্তার উন্নয়ন অনেক উতৎসাহ ব্যঞ্জক। চীনাদের খাবারের বাটি নিজের হাতে রাখতে হবে; এতে নিজেদের চাষ করা শস্য থাকতে হবে।
খাদ্য নিরাপত্তা দেশের উন্নয়ন এবং জনগণের জীবিকার সঙ্গে জড়িত। সিপিসি’র অষ্টাদশ কংগ্রেসের পর তিনি বিভিন্ন পরিদর্শন এবং সম্মেলনে বার বার খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার গুরুত্ব উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা দেশের সব কাজের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্য নিরাপত্তার মনোবলকে অসাড় করা যাবে না। শিল্পায়ন শুরু হবার পর খাওয়ার সমস্যা গুরুত্বপূর্ণ নয়, এই চিন্তাধারা ভুল। আর আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভর করে খাওয়া-দাওয়ার সমস্যা সমাধান করা যাবে না। আমাদের উচিত সবসময় আত্মনির্ভরশীল হওয়া, দেশের অভ্যন্তরীণ অবস্থা অনুযায়ী উৎপাদনের সামর্থ্য বাড়ানো, উপযুক্ত পরিমাণে শস্য আমদানি করা এবং বৈজ্ঞানিক সমর্থন জোরদার করা।
খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১২ লাখ বর্গকিলোমিটারের আবাদি জমি রক্ষা করতে হবে। সি চিন পিং বলেছিলেন, আবাদি জমিতে শুধু চাষ শিল্প, বিশেষ করে শস্য উৎপাদন করা যাবে। সবচেয়ে কঠোর আবাদি জমি রক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে হয়।
খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোটি কোটি কৃষককে গুরুত্ব দিতে হবে। সি চিন পিং বার বার বলেছেন, কৃষকের চাষের আগ্রহ রক্ষা করতে হয়। তাদের আয় নিশ্চিত করতে হয়।
তিনি বলেন, গ্রামে গিয়ে তিনি সবসময় একটাই কথা বলেছেন, তোমাদের আর কি কি দরকার? সুন্দর জীবনের প্রতি জনগণের চাহিদা লক্ষ্য করে কাজ করতে হয়।
আরও পড়ুন…ইবিতে ওবিই কারিকুলাম বিষয়ক কর্মশালা
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সি চিন পিং ঘোষণা করেন যে, ৮ বছরের দারিদ্র্য বিমোচনের পর চীনে ৯ কোটিরও বেশি গ্রামীণ দরিদ্র মানুষ সম্পূর্ণ দারিদ্র্যমুক্ত হয়েছে। মহান এই সাফল্য অর্জন করা সহজ ব্যাপার নয়। গত কয়েক বছরে সি চিন পিং দেশের ১৪টি চরম দরিদ্র এলাকা পরিদর্শন করেছেন, ২০টিরও বেশি দরিদ্র গ্রাম পরিদর্শন করেছেন।
এখন চীনের কৃষি, গ্রাম ও কৃষকের কাজ সার্বিকভাবে গ্রামীণ পুনরুদ্ধারে রূপান্তর করা হয়েছে। যা আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ। সি চিন পিং বলেন, আরো কঠোর ব্যবস্থায়, আরো শক্তিশালী কৃষি ও গ্রামের আধুনিকায়ন দ্রুততর করতে হবে, কৃষি কাজের উচ্চ মানদণ্ড বৃদ্ধি, সুন্দর গ্রাম নির্মাণ এবং কৃষকের ধনী হওয়ার কাজ এগিয়ে নিতে হবে। সূত্র:সিএমজি।
ইবাংলা/জেএন/২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.