‘জবিয়ান’ শব্দটির মধ্যে সংগ্রাম,অপূর্ণতা,হতাশা,সম্মান আর ভালোবাসা; সবই যেন একই সুত্রে গাঁথা। উচ্চশিক্ষার সূতিকাগার, বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে দীর্ঘ ১৭ বছরের পথ চলায় হাজারো শিক্ষার্থী পেয়েছে জবি। সব শিক্ষার্থীর কাছেই জবি যেমন ভালোবাসা আর আবেগের জায়গা, তেমনিভাবে একরাশ অভিমানেরও জায়গা।
একটি বিশ্ববিদ্যালয় সুপ্রতিষ্ঠিত হবার জন্যে যেসব সুযোগ সুবিধা থাকা দরকার তার সিংহ ভাগ থেকেই বঞ্চিত জবিয়ানরা। আবাসিক হল, স্বাস্থ্যকর ও সমুন্নত ক্যাফেটারিয়া, পর্যাপ্ত জায়গা, খেলার মাঠ, ডিপার্টমেন্টাল সেমিনার রুম, লাইব্রেরিতে পর্যাপ্ত জায়গা ইত্যাদির কিছুই পাচ্ছে না ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বেশি যে সমস্যা সেটা হলো – আবাসন। দীর্ঘ দেড় যুগের কাছাকাছি হতে চললেও, মেয়েদের একটি মাত্র আবাসিক হল ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি আবাসন সংকট কাটানোর জন্য। ফলে শিক্ষার্থীদের বাইরে বাসা ভাড়া করে থাকতে হয়। এজন্য গুনতে হয় অতিরিক্ত টাকা। সেই টাকার সংস্থান করতে টিকে থাকার লড়াইয়ে সংগ্রাম বেড়ে যায় কয়েক গুণ।
এসব সমস্যার মধ্য দিয়েই ১৭ বছর হলো চলছে জবি। আসছে ২০ই অক্টোবর অত্র প্রতিষ্ঠানের ১৮ বছর পুর্তি। ওইদিন, অর্থাৎ ১৭তম ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে’ দেশের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় দিবস খুব সাধারণ ভাবেই পালন করা হবে। থাকবেনা কোনো বিনোদন মুখর বিষয়বস্ত, কিংবা থাকলেও সেটা অতি নগন্য।
শিক্ষার্থীরা এভাবে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালন করতে নারাজ। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতই জাঁকজমকপূর্ণ ভাবেই দিসবটি পালন করতে চায়। প্রশাসন সব অপূর্ণতাকে পেছনে ফেলে শিক্ষার্থীদের কথা ভেবে বিনোদন মুলক আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় দিসব উদযাপনের জন্য। দেশের অন্যতম সেরা ‘ওয়ারফেজ’ ব্যন্ড দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে জবি দিবসে।
জবির একজন ছাত্র হয়ে, শিক্ষার্থীদের কথা ভেবে এমন আয়োজন করার জন্য ধন্যবাদ জানাই প্রশাসনকে। এখান থেকে আশা নিয়ে বলতে পারি- শিক্ষার্থীদের সব সংকটের কথা ভেবে প্রশাসন উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবেন সবসময়। বন্ধু, সিনিয়র, জুনিয়র, শিক্ষক মন্ডলী সহ সকলের উপস্থিতিতে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে ২০ই অক্টোবর ‘১৭তম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ সাফল্যমন্ডিত হয়ে উঠবে। শত বাধা বিপত্তি, অপূর্ণতা আর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গিয়েও দিনশেষে জবিয়ানেরাই হয়ে উঠবে বিশ্বসেরা। সুন্দর আগামীর অপেক্ষায় ক্ষুদ্র এক জবিয়ান।
ইবাংলা/আরএস/১৯অক্টোবর, ২০২২
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.