ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর অন্যান্য পশ্চিমা দেশের মতো জার্মানি যথেষ্ট সহায়তা করছে না, এমন অভিযোগ উঠেছিল। কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক সহায়তার ক্ষেত্রে জার্মানির ‘ঘাটতি’ নিয়েও ইউক্রেনের সরকারের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছিল।
মঙ্গলবার অঘোষিত সফরে ইউক্রেনে পৌঁছেছেন জার্মান প্রেসিডেন্ট৷ এদিকে বার্লিনে ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সে দেশের পুনর্গঠন সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজিত হচ্ছে৷
আরও পড়ুন…আগস্ট ও সেপ্টেম্বরের মূল্যস্ফীতি জানাল বিবিএস
তবে গত কয়েক মাসে সেই ক্ষত অনেকটাই দূর হয়েছে। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ সফর করেছেন। এবার জার্মানির প্রেসিডেন্ট ফ্রাংক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার কিয়েভে পৌঁছেছেন। অতীতে অবশ্য নানা কারণে এর আগে দুইবার সেই সফর বাতিল করতে হয়েছিল। এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি পোল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া, এস্তোনিয়া ও লাটভিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে স্টাইনমায়ারেরও কিয়েভ যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও ইউক্রেনের সরকার সফরের ঠিক আগে তাকে না আসার অনুরোধ করে।
রাশিয়ার সঙ্গে তার অতীতের ‘ঘনিষ্ঠতাকে’ কেন্দ্র করে ইউক্রেনে যে ক্ষোভ দেখা গিয়েছিল, অবশেষে তা কাটিয়ে তুলে সে দেশের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার সঙ্গে মঙ্গলবার আলোচনায় বসছেন। এদিকে সোমবার এক লবি গ্রুপের উদ্যোগে জার্মানির রাজধানী বার্লিনে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের পুনর্গঠনের রূপরেখা নিয়ে আলোচনার পর মঙ্গলবার আরও বড় আকারে সে বিষয়ে এক সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে।
জি-সেভেন গোষ্ঠীর বর্তমান সভাপতি দেশ হিসেবে জার্মানি এবং ইউরোপীয় কমিশনের যৌথ উদ্যোগে রাজনৈতিক নেতা ও বিশেষজ্ঞরা ইউক্রেনের পুনর্গঠনের লক্ষ্যে এক ‘মার্শাল প্ল্যান’ নিয়ে আলোচনা করছেন।
উল্লেখ্য, জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস ও ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন সপ্তাহান্তে এক সংবাদপত্রের যৌথ প্রবন্ধে এ বিষয়ে নিজেদের ভাবনাচিন্তা তুলে ধরেছেন। ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্মিহালও সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন সেখানে। এছাড়া ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি কিয়েভ থেকে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে সম্মেলনের অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখবেন।
সোমবারের সম্মেলনে শলৎস বলেন, জার্মানি কোনো এক দিন ইউক্রেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হিসেবে দেখতে চায়। দাতা দেশগুলোকে সেই বিষয়টি মনে রেখে ইউক্রেনের পুনর্গঠনের জন্য আর্থিক অঙ্গীকার করা উচিত বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, ‘রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের যুদ্ধ আমাদের দেশগুলোকে পরস্পরের আরও কাছে নিয়ে এসেছে।’
আরও পড়ুন…গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও স্বৈরাচার মুক্ত দেশ গড়ার অঙ্গীকার
ইউক্রেনের পুনর্গঠনের বিশাল কর্মযজ্ঞ শুধু সরকারি উদ্যোগের মাধ্যমে সম্ভব নয়, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। বেসরকারি বিশেষজ্ঞ এবং শিল্পবাণিজ্য জগতেরও বিশাল অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বার্লিনে দুই ক্ষেত্রের অনেক শীর্ষ প্রতিনিধিও উপস্থিত থাকছেন। তবে ইউক্রেনের পুনর্গঠনের লক্ষ্যে যে প্রায় ৭৬ হাজার কোটি ইউরো প্রয়োজন হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মঙ্গলবারের সম্মেলনে সেই লক্ষ্যে কোনো অঙ্গীকারের আশা করা হচ্ছে না।
ইবাংলা/জেএন/২৫ অক্টোবর ২০২২
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.