জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা অভিযোগ করে বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রাজনৈতিক ঐক্যের পরিবর্তে দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি শোডাউনে ব্যস্ত।সোমবার (৩১ অক্টোবর) জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে অংশ নিয়ে তিনি এ অভিযোগ করেন।
বাবলা বলেন, প্রধানমন্ত্রী দুর্ভিক্ষের কথা বলেছেন। দেশের এই মহা সংকটের মধ্যে রাজনৈতিক দলের মধ্যে যখন ঐক্য দরকার, তখন আমাদের দেশের প্রধান দুই দল (আওয়ামী লীগ, বিএনপি) ব্যস্ত হয়েছে শোডাউনের রাজনীতিতে। কার দলের মিটিংয়ে কত লোক হয়েছে, সেই হিসাব নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা মহাব্যস্ত রয়েছেন।
আরও পড়ুন…টাঙ্গাইল মধুপুরে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার
দুই দলের নেতারা একে অন্যের বিরুদ্ধে কাঁদা ছোড়াছুড়ি করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই মহা সংকটের মধ্যে দলের নেতাদের উচিত দায়িত্বশীল হয়ে কীভাবে সংকটময় পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণ হওয়া যায় তা নিয়ে আলাপ-আলোচনা করা। সরকারি দল হিসেবে মূল দায়িত্ব আওয়ামী লীগের ওপর বার্তায় বলে দাবি তার।
বাবলা বলেন, কাঁদা ছোড়াছুড়ি ও দলাদলি বাদ দিয়ে দেশ ও মানুষের স্বার্থে সব রাজনৈতিক দল দায়িত্বশীল হয়ে মানবতার জন্য রাজনীতি করবে।
তিনি বলেন, শীত আসার আগেই রাজধানীতে গ্যাসের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এতে নগরবাসী ভোগান্তিতে পড়েছেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে উল্লেখ করে জাপা এমপি বলেন, গত ১৫-১৬ বছরে আমাদের দেশ থেকে যে লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে, এটাতো আর মিথ্যা না। দেশের অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার জন্য এ টাকা পাচার অন্যতম কারণ।
তিনি বলেন, পাচার হওয়া টাকাতো ফিরিয়ে আনা যাচ্ছে না, বরং এখনো যে টাকা পাচার বন্ধ হচ্ছে সেই গ্যারান্টি সরকার দিতে পারছে না।
গ্যাস, বিদ্যুৎ সংকটের পাশাপাশি দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ায় মানুষ দিশেহারা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে কোনো পণ্যের দাম একবার বাড়লে আর সহজে কমে না। আমরা কথায় কথায় বৈশ্বিক কারণে দাম বাড়ছে বলে প্রচার করি। দ্রব্যমূল্য বাড়ার পেছনে অসাধু ব্যবসায়ীরা দায়ী বলে উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বারবার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও অদৃশ্য কারণে মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলে দাবি তার। তিনি বলেন, যার মাশুল দিতে হচ্ছে সাধারণ জনগণকে।
দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ উল্লেখ করে দলটির আরেক সংসদ সদস্য পীর ফজলুল রহমান বলেন, ঢাকা শহরের এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে আমার মনে হয়। কারণ অক্টোবর মাসে যেখানে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমার কথা, সেখানে বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন নিয়ন্ত্রণে না আসলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
তিনি বলেন, বলা হচ্ছে এডিস মশা বিদেশ থেকে প্লেনে করে চলে আসছে। কোথাও থেকে প্লেনে করে না, রকেটে করে কোথাও থেকে আসছে, সেটা বড় কথা না, বড় কথা হল দেশের মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। তিনি নিজেও ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন বলে উল্লেখ করেন এসময়।
আরও পড়ুন…বামনায় জমি নিয়ে বিরোধ : ১ জনকে কুপিয়ে হত্যা
এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, মশা মারার ওষুধ কার্যকর না। অকার্যকর ওষুধ স্প্রে করার জন্য এডিস মশা মারছে না। এতে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। সরকারি হাসপাতালে রোগীর ঠাঁই হচ্ছে না। আর বেসরকারি হাসপাতালেও এ চিকিৎসা ব্যয়বহুল। বিদেশ থেকে প্লেনে করা মশা আসছে, এই কথা না বলে মানুষের জীবন রক্ষার্থে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে।
ইবাংলা/জেএন/৩১ অক্টোবর ২০২২
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.