এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাব, জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলব

নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাব, জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলব।শুক্রবার (১১ নভেম্বর) যুবলীগের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত যুব মহাসমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

যুবলীগ নেতাকর্মীদের অনুরোধ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেহেতু ইউক্রেন যুদ্ধ, স্যাংশন আর স্যাংশন, আমাদের আমদানি সকল পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। যুবলীগের নেতারা গ্রামে যান, নিজের জমি চাষ করতে হবে এবং অনাবাদি জমিতে চাষাবাদ করতে হবে।

বিএনপির নেতাদের কাছে প্রশ্ন রেখে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির নেতারা কখনো ভেবেছিল বাংলাদেশের স্যাটেলাইট আকাশে উড়বে? আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে তা করে দিয়েছে।

আরও পড়ুন…নোয়াখালীতে যুবদলের কমিটি বাতিলের দাবিতে ঝাড়ু মিছিল

সরকারপ্রধান বলেন, আজকের যুবলীগের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অর্থাৎ সুবর্ণজয়ন্তী। সকল যুবলীগ নেতাকে আমি অভিনন্দন জানাই। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে ১১ নভেম্বর যুবলীগ প্রতিষ্ঠিত করেন। জাতির পিতার নির্দেশে যে যুবলীগকে পরিচালনা করেছিলেন সেই শেখ মণিকে ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

আমি আজ যে মাঠে ভাষণ দিচ্ছি সেই ঐতিহাসিক মাঠে ১৯৭১ সালে ৭ মার্চ মুক্তিযুদ্ধের ডাক দিয়েছিলেন জাতি পিতা। সেই ভাষণ বিএনপি নিষিদ্ধ করেছিল। এখন জাতির পিতার সেই ভাষণ ঐতিহাসিক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুবলীগ আমাদের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিয়েছে। যুবক থাকলে কাজ করার অনেক সুবিধা। উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে যুবকদের সম্পৃক্ত করতে যুবলীগ গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তরুণরাই পারে দেশকে গড়ে তুলতে।

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন নাকি তারা চোখেই দেখে না। এখন চোখ থাকতে যদি কেউ অন্ধ হয় তাহলে তো কিছু করার নেই। তারা উন্নয়ন চোখে দেখে না। অথচ ব্যবহার ঠিকই করছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের সব সুফল তারা ভোগ করছে। বিএনপির আমলে তারা কী করেছে? তারা ক্ষমতায় থাকতে লুটপাট করেছে, দেশের কোনো উন্নয়ন তারা করেনি। খালেদা জিয়া ২০০১ সালে এসে হাজার হাজার নেতাকে অপারেশন ক্লিন হার্টের নামে হত্যা করেছেন।

আরও পড়ুন…নোয়াখালীতে তরুণের মরদেহ উদ্ধার

শেখ হাসিনা বলেন, যাদের নেতৃত্বে আজ বিএনপি চলে তারা কারা? খালেদা জিয়া এতিমের টাকা মেরে খেয়েছেন। একটি টাকাও এতিমরা পায়নি। এক পয়সা না দিয়ে সমস্ত টাকা তারা মেরে খেয়েছে। সে কারণে খালেদা জিয়ার ১০ বছরের সাজা হয়েছে। তারপর যাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সে তো আরও এক ধাপ এগিয়ে।

মানি লন্ডারিং মামলায় তারেক জিয়ার ৭ বছরের সাজা হয়েছে। এছাড়া গ্রেনেড হামলা মামলায় তিনি যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত। যাদের নেতাই খুনি-আসামি তাদের মুখে আওয়ামী লীগের সমালোচনা মানায় না।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বিএনপি কখনও কল্পনাও করতে পারেনি বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ হবে। আজকে অনলাইনে কেনাকাটা হচ্ছে, ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে। আমরা ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিয়েছি। পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংক যখন দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিল আমরা চ্যালেঞ্জ করেছিলাম। পরে সেই অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।

সরকারপ্রধান বলেন, বিএনপির অনেক নেতা মানি লন্ডারিং, লুটপাট, দুর্নীতির কথা বলেন। তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআই এসে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে। মানি লন্ডারিং মামলায় তিনি সাত বছরের সাজাপ্রাপ্ত। অস্ত্র মামলার আসামি। তাদের মুখে এ সমালোচনা মানায় না।

আরও পড়ুন…আশ্রয়ণের ঘর দেয়ার কথা বলে নারীকে ধর্ষণরে অভিযোগ

ব্যাংক, বিমা, বিদ্যুৎ, টেলিভিশন, পুরো বাংলাদেশে সড়ক নেটওয়ার্কসহ নানা উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ১০০টা অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিয়েছি। এছাড়া কৃষি জমির ব্যবহার করতে হবে। এসব সুযোগকে কাজে লাগাতে যুব সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।

যুবলীগ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, দেশের সেবা করতে হবে, মানুষের সেবা করতে হবে। প্রত্যেক নেতা-কর্মীকে বলব, নিজের গ্রামে যান, নিজের জমি চাষ করেন। অন্যের জমিতে যাতে উৎপাদন হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। যে কোনো চাষ, সবজি, গাছপালা লাগাতে হবে। সন্ত্রাস রুখতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বিএনপি নেতাদের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, এইট পাস দিয়ে, মেট্রিক ফেল দিয়ে দেশ চললে উন্নয়ন হয় না। আমরা ক্ষমতায় আসার আগে সরকারে ছিল বিএনপি। ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ ছিল বিএনপির সময়। আমরা ৪৮ বিলিয়ন পর্যন্ত নিয়েছিলাম। কোভিড টিকা কিনেছি, বিনিয়োগ করেছি, বিমান কিনেছি, পায়রা বন্দর নিজস্ব অর্থায়নে করেছি। এভাবে রিজার্ভ থেকে খরচ হয়েছে। ঘরের টাকা ঘরে থাকছে। দেশের জনগণের উন্নয়নে এই টাকা ব্যবহার করছি। আমাদের এই অগ্রযাত্রা কেউ রুখতে পারবে না।

যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামশ পারশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রমুখ। যুব মহাসমাবেশটি পরিচালনা করেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল।

আরও পড়ুন…দেউলিয়া হতে পারে টুইটার, সতর্ক করলেন মাস্ক

বেলা আড়াইটার পর প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হয়। সভা মঞ্চের সামনে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ উত্তোলন করেন দলীয় পতাকা। এরপর বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে, জাতীয় সংগীত গেয়ে ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠনের সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়।

ইবাংলা/জেএন/১১নভেম্বর ২০২২

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us