কাবা শরিফ মহান আল্লাহ তায়ালার ঘর। একে বাইতুল্লাহও বলা হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বাইতুল্লাকে প্রথম ঘর হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন-এ ঘরের জেয়ারত ও ইবাদত সব কিছুই পূণ্যের কাজ ‘নিঃসন্দেহে সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্যে নির্ধারিত হয়েছে, সেটাই হচ্ছে এ ঘর, যা মক্কায় অবস্থিত এবং সারা জাহানের মানুষের জন্য হেদায়েত ও বরকতময়। -(সুরা ইমরান : আয়াত ৯৬)
আরও পড়ুন…বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়ীতে প্রেমিকার অনশন
কাবা শরিফ নিমার্ণের ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায়, হজরত আদম আলাইহিস সালাম পৃথিবীতে আগমন করার পূর্বেই ফেরেশতাদের দ্বারা আল্লাহ তাআলা কাবা ঘরের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। হজরত আদম আলাইহিস সালাম এবং তাঁর সন্তানদের জন্য এ ঘরকেই সর্ব প্রথম কিবলা সাব্যস্ত করা হয়েছে।আল্লাহ তাআলা শারীরিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের জন্য জীবনে একবার হজ ফরজ করেছেন।
হজরত নুহ আলাইহিস সালামের আমলে মহাপ্লাবনের সময় আল্লাহ তাআলা এ ঘরকে চতুর্থ আসমানে তুলে নেন এবং হাজরে আসওয়াদ পাথরটিকে হজরত জিব্রিল আলাইহিস সালাম আবু কুবাইস পাহাড়ে রাখেন।
হজরত নুহ আলাইহিস সালামের মহাপ্লাবনের সময় হতে হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের সময় পর্যন্ত এ স্থানটি খালি ছিল। অতঃপর আল্লাহ তাআলা হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামকে কাবা নির্মাণের হুকুম দিলেন। তিনি বাইতুল্লাহ নির্মাণে স্থান দেখিয়ে দেয়ার আবেদন করেন। তখন আল্লাহ তাআলা বাইতুল্লাহ নির্মাণের স্থান দেখিয়ে দেন এবং হাজরে আসওয়াদের সংবাদও জানিয়ে দেন।
এরপর বিভিন্ন আরবগোত্র তা নিমার্ণ ও সংস্কার করেন। সর্বশেষ উমাইয়া খেলাফতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফ একে নির্মাণ ও সংস্কার করেন। তার নির্মিত আদলেই এখনো রয়েছে কাবা শরিফ।
কাবার অভ্যন্তর, কাবার সীমানায় অবস্থিত মাকামে ইবরাহিম, মিজাবে রহমত, হাজরে আসওয়াদ চুম্বন, মুলতাজেমসহ বেশ কিছু জায়গায় দোয়া কবুল হয়। তাই এগুলোতে গুরুত্বে সাথে দোয়া করা প্রয়োজন। এসবের পাশাপাশি অনেকের ধারণা রয়েছে যে, কাবা শরিফ জীবনে প্রথমবার দেখে কোনও দোয়া করলেই তা কবুল হয়ে যায়।
তবে আলেমদের মতে, কাবা শরিফ প্রথমবার দেখার সাথেসাথে কোনও দোয়া করলেই তা কবুল হয়ে যায় এমন কোনও সহী হাদিস নেই। তবে মানুষ যখন জীবনে প্রথম কাবা শরিফ দেখে তখন রবের সামনে নিজেকে সঁপে দিয়ে আবেগে উদ্বেল হয়ে ওঠে হৃদয়, মন পুরোপুরি নরম হয়ে যায়।
আরও পড়ুন…ডেঙ্গুতে ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৭৬০
এসময় মানুষ একেবারে একনিষ্ঠ মনে দোয়া করে থাকে। মানুষ যখন একনিষ্ঠ মনে কায়মনোবাক্যে কোনও দোয়া করে আল্লাহ তা ফিরিয়ে দেন না। তাই এ সময় দোয়া কবুলের সমূহ সম্ভবনা থাকে, কিন্তু দোয়া করলেই তা কবুল হবে এমন ধারণা ঠিক নয় এবং একে সুন্নত মনে করা যাবে না। -(মুহাদ্দিস ফাতওয়া, ১৫৯০৮)
ইবাংলা/জেএন/১৪ নভেম্বর ২০২২
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.