দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে আয়কর দিয়ে জনগণকে উৎসাহিত করতে প্রতি বছর আয়কর দিবস উদযাপন করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ২০০৮ সাল থেকে প্রথম আয়কর দিবস পালন করা হয়। দেখতে দেখতে কেটে গেছে ১৪ বছর। বুধবার (৩০ নভেম্বর) ১৫তম জাতীয় আয়কর দিবস। ‘সবাই মিলে দেব কর, দেশ হবে স্বনির্ভর’ এমন স্লোগানকে সামনে রেখে সারা দেশে দিবসটি উদযাপন করবে প্রতিষ্ঠানটি।
যদিও ২০০৮ সাল থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর আয়কর দিবস হিসেবে উদযাপিত হতো। এরপর ২০১৬ সাল থেকে ৩০ নভেম্বর আয়কর দিবস পালন করছে এনবিআর। এদিন ব্যক্তি শ্রেণির আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমা দেওয়ারও শেষ দিন।
আরও পড়ুন…স্বাগতিক কাতারকে হারিয়ে নক-আউট পর্বে নেদারল্যান্ড
নির্ধারিত সময়ের পরে করদাতাকে দুই শতাংশ হারে বিলম্ব সুদ গুনতে হবে। তবে বিলম্ব সুদ পরিশোধ করে যৌক্তিক কারণ দেখিয়ে করদাতারা ইচ্ছে করলে রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় বাড়িয়ে নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম মেনে আবেদন করতে হবে। সংশ্লিষ্ট উপ-কর কমিশনার বরাবর আবেদন করা হলে তিনি করদাতাকে দুই মাস পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে দিতে পারেন।
আয়কর নির্দেশিকা ২০২২-২৩ অনুযায়ী ৪০ ধরনের সেবায় রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ দেখানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যে কারণে রিটার্ন দাখিলের বিকল্প নেই ই-টিআইএনধারীদের। তা না হলে পড়তে নানা জটিলতায়।
চলমান বৈশ্বিক মহামারি ও সংকট বিবেচনায় ১৫তম আয়কর দিবসেও র্যালি করছে না এনবিআর। তবে দিবসটি উপলক্ষে সব আয়কর অফিস সজ্জিত করা হয়েছে। বুধবার (৩০ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে দিবসটি উদযাপন করা হবে।
এরপর বেলা ১১টায় এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে ‘যথাযথ কর প্রদানের মাধ্যমে করদাতাদের রাষ্ট্রের উন্নয়নে অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মোহম্মদ মুসলিম চৌধুরী ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে এনবিআরের আয়কর বিভাগে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। জাতীয় আয়কর দিবসে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশের ব্যবস্থা করেছে। টেলিভিশন চ্যানেলগুলোও বিশেষ আয়োজন রেখেছে।
বর্তমানে দেশের ৮২ লাখের বেশি টিআইএনধারী রয়েছেন। এর মধ্যে ২৬ লাখের মতো টিআইএনধারী নিয়মিত আয়কর রিটার্ন দেন বলে জানা গেছে। এবারও করদাতাদের প্রত্যাশা পূরণে এক ছাদের নিচে আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে দেশের ৩১টি কর অফিসে গত ১ নভেম্বর থেকে মেলার পরিবেশে করদাতাদের সেবা দেওয়া হচ্ছে।
সাধারণত কোনো ব্যক্তি-করদাতার আয় যদি বছরে তিন লাখ টাকার বেশি হয়, তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তি, নারী ও ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সের করদাতার আয় যদি বছরে সাড়ে তিন লাখ টাকার বেশি হয়, গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা করদাতার আয় যদি বছরে চার লাখ ৭৫ হাজার টাকার বেশি হয় এবং প্রতিবন্ধী করদাতার আয় সাড়ে চার লাখ ৫০ হাজার টাকার বেশি হলে তার রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক।
আরও পড়ুন…১৩ বছরে প্রায় ৬ কোটি টাকা বেতন নিয়েছেন ওয়াসা এমডি তাকসিম
এ ছাড়া আরও অনেক কারণে ব্যক্তিকে আবশ্যিকভাবে রিটার্ন দাখিল করতে হয়। চলতি অর্থবছর থেকে শুধু রিটার্ন দাখিল করলেই হবে না, বিভিন্ন সরকারি সেবা পেতে হলে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্রও দেখাতে হবে।
ইবাংলা/জেএন/৩০নভেম্বর ২০২২
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.