কাতার বিশ্বকাপের তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে পর্তুগালকে এক গোলে হারিয়ে প্রথম আফ্রিকার দেশ হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পা রাখলো মরক্কো। শনিবার (১০ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় আল থুমামা স্টেডিয়ামে মাঠে নামে দু’দল।
প্রাথমার্ধে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে খেলতে থাকে পর্তুগাল ও মরক্কো। ম্যাচের ৪২ মিনিটে গোল করে মরক্কোকে এগিয়ে দেন এন-নেসিরি। তার দেওয়া গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় মরক্কো। বিরতি থেকে ফিরে গোলের লখ্যে মরিয়া হয়ে আক্রমণ চালায় পর্তুগাল। তবে আর কোন গোল না হলে ইতিহাস রচনা করে শেষ চারে পা রাখে মরক্কো।
আরও পড়ুন…সিরিজের শেষ ম্যাচে ৪১০’র টার্গেটে ১৮২ রান বাংলাদেশের
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্নক খেলতে থাকে পর্তুগাল। ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে ডান দিক থেকে ফ্রি কিক পায় পর্তুগাল। ফ্রি কিক থেকে বাড়ানো বলে জোও ফেলিক্স হেড করলেও তা অসাধারণ সেভ দেন মরক্কোর গোলরক্ষক ইয়াসিন বাউনু। এরপর ম্যাচের ৫ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাকে যায় মরক্কো। সেখান থেকে কর্নার পায় তারা। কর্নার থেকে ভেসে আসা বলে হেড করেন ইউসুফ এনসার। তবে তা চলে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে।
এরপর ম্যাচের ১২ মিনিটে ফ্রি কিক পায় পর্তুগাল। তবে তা থেকে গোল করতে পারেনি তারা। ম্যাচের ১৮ মিনিটে আক্রমণে ওঠে মরক্কো। ডি বক্সের বাইরে থেকে শট করেন হাকিম জিয়েচ। তবে তা চলে যায় পোস্টের বাইর দিয়ে। ম্যাচের ২১ মিনিটে কর্নার পায় মরক্কো। সেখান থেকে আবারও কর্নার পায় তারা। তবে তা থেকে সুবিধা করতে পারেনি মরক্কো।
ম্যাচের ২৫ মিনিটে ফ্রি কিক পায় মরক্কো। ফ্রি কিক থেকে বাড়ানো বলে হেড করেন আজেদিন ওনাহি। তবে তা চলে যায় পোস্টের বাইর দিয়ে। ম্যাচের ৩০ মিনিটে আক্রমণ থেকে বল পেয়ে ডি বক্সের বাইরে থেকে শট করেন জোও ফেলিক্স। তবে তা ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে চলে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে। কর্নার পেলেও তা কাজে লাগাতে পারেনি পর্তুগাল।
ম্যাচের ৩৪ মিনিটে বাম দিক থেকে বাড়ানো বলে ডি বক্সের ভেতর থেকে শট করেন সেলিম আমাল্লাহ। তবে তা চলে যায় ক্রসবারের অনেক ওপর দিয়ে। ম্যাচের ৩৮ মিনিটে ডি বক্সের ভেতর থেকে আবারও শট করেন ফেলিক্স। তবে আবারও তা চলে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে। উল্টো ম্যাচের ৪২ মিনিটে গোলের দেখা পায় মরক্কো। বাম দিক থেকে বাড়ানো বলে লাফিয়ে উঠে হেড করে বল জালে জড়ান এন-নেসিরি। তার গোলে ম্যাচে লিড পায় মরক্কো।
আরও পড়ুন…কাতার থেকে বিদায় ব্রাজিল, সেমিতে ক্রোয়েশিয়া
ম্যাচের পিছিয়ে পড়ে গোল শোধে মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে পর্তুগাল। ম্যাচের ৪৪ মিনিটে ব্রুনো ফার্নান্দেজের নেওয়া শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। এরপর আরও কিছু আক্রমণ করলেও গোল পেতে ব্যর্থ হয় তারা। শেষ পর্যন্ত আর কোন গোল না হলে এক গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় মররক্কো।
বিরতি থেকে ফিরেই কর্নার পায় পর্তুগাল। তবে তা কাজে লাগাতে পারেনি তারা। ম্যাচের ৪৮ মিনিটে একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে এগিয়ে যায় আশরাফ হাকিমি। ফাউলের স্বীকার হলে ফ্রি কিক পায় মরক্কো। ফ্রি কিক থেকে সরাসরি পোস্টে শট করেন জিয়েচ। তবে তা রুখে দেন পর্তুগালের গোলরক্ষক ডিওগো কোস্টা।
ম্যাচের ৫১ মিনিটে মাঠে নামেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। মাঠে নেমেই বাম দিকে থেকে ক্রস করেন তিনি। তবে তা নিজের গ্লাভসে নেন ইয়াসিন বাউনু। ম্যাচের ৫৮ মিনিটে বাম দিকে থেকে বাড়ানো বলে হেড করেন গনচালো রামোস। তবে তা চলে যায় পোস্টের বাইর দিয়ে। এরপর ৬৩ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে শট করেন ব্রুনো ফার্নান্দেজ। তবে তা অল্পের জন্য চলে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে।
ম্যাচের ৬৮ মিনিটে ব্রুনো ফার্নান্দেজ বল বাড়ালেও তা মাথা ছোঁয়েতে ব্যর্থ হলে গোল পাওয়া হয় না পর্তুগালের। ম্যাচের ৭০ মিনিটে বাম দিক থেকে ফ্রি কিক পায় পর্তুগাল। তবে তা কাজে লাগাতে পারেনি তারা। এরপর ম্যাচের ৭৩ মিনিট থেকে টানা তিন কর্নার পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হয় পর্তুগাল। ম্যাচের ৭৮ মিনিটে মরক্কো কাউন্টার অ্যাটাকে গেলেও তা থেকে সুবিধা করতে পারেনি তারা।
ম্যাচের ৮২ মিনিটে রোনালদোর পাস থেকে শট করেন জোও ফেলিক্স। তবে তা অসাধারণ সেভে দলকে রক্ষা করেন ইয়াসিন বাউনু। এরপর ম্যাচের ৮৪ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে ফ্রি কিক পায় পর্তুগাল। তবে তা থেকে কোন সুবিধা করতে পারেনি তারা। ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে ডি বক্সের ভেতর থেকে শট করেন রোনালদো। তবে তা আবারও অসাধারণ সেভ করেন ইয়াসিন বাউনু। ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ে ওয়ালিদ চেদীরা। এতে ১০ জনের দল হয়ে পড়ে মরক্কো।
গোলের আশায় আরও বেশ কিছু আক্রমণ করে পর্তুগাল। তবে গোল করতে ব্যর্থ হয় তারা। শেষ পর্যন্ত আর কোন গোল না হলে এক গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে মরক্কো। আর এতে আফ্রিকার প্রথম দেশ হিসেবে বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে পৌঁছে যায় মরক্কো। অন্যদিকে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হয় পর্তুগালকে।
ইবাংলা/টিএইচকে
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.