সোনালী ব্যাংকের পাঁচ কোটি ১৯ লাখ টাকা আত্মসাতের দুর্নীতির মামলায় ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হুমায়ুন কবিরসহ নয়জনকে ১৭ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সরকারি কর্মচারি হয়েও ‘বিশ্বাসভঙ্গ, সম্পত্তি আত্মসাৎ, প্রতারণা ও অপরাধে সহায়তা করার দায়ে’ তাদের এ সাজা দেওয়া হয়েছে। রোববার (১১ ডিসেম্বর) ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ দায়রা জজ আদালতের বিচারক ইকবাল হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন…ক্ষমতাধর নারীর তালিকায় শেখ হাসিনা ৪২তম
১৭ বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, সোনালী ব্যাংকের তৎকালীন উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মাইনুল হক, নির্বাহী কর্মকর্তা (সাময়িক বরখাস্ত) মোহাম্মদ আব্দুল মতিন, উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. সফিজ উদ্দিন, সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. কামরুল হোসেন, মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ননী গোপাল নাথ, প্যারাগন প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের এমডি মো. সাইফুল ইসলাম রাজা, পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন ও মন্ডল ট্রের্ডাসের স্বত্ত্বধিকারী মো. মকবুল হোসেন।
এদের প্রত্যেককে দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় ১০ বছর এবং ৪২০ ও ১০৯ ধারায় সাত বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দুই ধারার সাজা একত্রে চলবে বলে আদালত রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ আসামিদের ১০ বছর কারাভোগ করতে হবে।
আদালত এছাড়া মামলায় সোনালী ব্যাংকের সাবেক উপ-মহাব্যবস্থাপক শেখ আলতাফ হোসেনকে একটি ধারায় ৫ বছর এবং অন্য ধারায় ৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। দুই ধারার সাজা একত্রে চলবে বলে তাকে ৫ বছর কারাভোগ করতে হবে। রায় ঘোষণার সময় আসামি মাইনুল হক, সফিজ উদ্দিন, শেখ আলতাফ ও কামরুল হোসেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
এলিসা দুদকের আইনজীবী মীর আহমেদ আলী সালাম সাংবাদিকদের বলেন, দণ্ডিতরা ব্যাংকের নীতিমালা অগ্রাহ্য করে প্রতারণার মাধ্যমে মালামাল রপ্তানি না করেই ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে ‘ব্যাক টু ব্যাক এলসি’ খুলে ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা প্যারাগান প্রিন্টিংয়ের নিজস্ব হিসাবে (অ্যাকাউন্টে) জমা দেখিয়ে আত্মসাৎ করেন।
প্রসঙ্গত, হল মার্ক ঋণ কেলেংকারির ঘটনায় মোট ৩৮টি মামলা হয়। এর মধ্যে ৩টি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়। বাকি ৩৫টি মামলায় ৬২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। সোনালী ব্যাংকের একটি শাখা থেকে হল-মার্ক গ্রুপ জালিয়াতির মাধ্যমে আড়াই হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সময় হুমায়ুন কবীর এ ব্যাংকের এমডি ও সিইওয়ের দায়িত্বে ছিলেন। ইতিমধ্যে তিন মামলায় হুমায়ুন কবীরকে ৪২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বিচারের শুরু থেকেই এই আসামি পলাতক রয়েছেন। এছাড়া আরও কয়েকজন কর্মকর্তার বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে।
ইবাংলা/জেএন/১১ ডিসেম্বর, ২০২২
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.