নোয়াখালী সদর উপজেলার ৭নং ধর্মপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৭ নেতাকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম।
এর আগে, গত মঙ্গলবার ২০ ডিসেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম স্বাক্ষরিত এক পত্রে সদর উপজেলার ৭নং ধর্মপুর ইউনিয়নপরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী এডভোকেট ছিদ্দিকুর রহমান সাবুর নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আর্মি মো. জামাল উদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক ও বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী ইব্রাহিম খলিল কোম্পানীকে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক পদবী থেকে অব্যহতি প্রদানসহ দলের সদস্য পদ থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া একই অভিযোগে আরো ৫ নেতাকে সাংগঠনিক পদবী থেকে অব্যাহতি প্রদানসহ দলের সদস্য পদ থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়।
আরও পড়ুন…নোয়াখালীতে বিএনপির গণমিছিলে পুলিশের বাধা
দলের সাংগঠনিক পদবী থেকে অব্যাহতি পাওয়া ও সদস্য পদ থেকে বহিষ্কারের জন্য সুপারিশ প্রাপ্ত হওয়া অপর ৫ নেতা হলেন, ধর্মপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলম মাস্টার, মোহাম্মদ উল্যাহ কোম্পানী, বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী মাঞ্জুরুল হাসান মঞ্জু, ১নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি ইমাম উদ্দিন মাস্টার ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক মিরাজ উদ্দিন।
এ বিষয়ে জানতে ৭নং ধর্মপুর আওয়ামী লীগের অব্যাহতি প্রাপ্ত সভাপতি আর্মি মো. জামাল উদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক ও বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী ইব্রাহিম খলিল কোম্পানীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেনি।
নৌকার প্রার্থী এডভোকেট ছিদ্দিকুর রহমান সাবু বলেন, দল এবং দলীয় প্রতীকের বিরুদ্ধে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় অংশ নেয়ায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ৭জনকে দলীয় পদবী থেকে অব্যহতি দিয়ে সদস্য পদ থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সুপারিশ করা হয়। আমার বিশ্বাস দলের নেতাদের মতো ইউনিয়নের জনগণও তাদেরকে প্রত্যাখান করবে।
নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে দলীয় প্রার্থী এবং দলীয় প্রতীক নৌকার বিরুদ্ধে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়া এবং বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, আগামী ২৯ ডিসেম্বর ধর্মপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধী চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ও সাধারণ সদস্যরা। প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন সাধারণ মানুষও।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী চেয়ারম্যান এডভোকেট ছিদ্দিকুর রহমান সাবুর নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল (খলিল কোম্পানী)। তার প্রতীক আনারস। নির্বাচনে দলের ইউনিয়ন সভাপতি আর্মি মো. জামাল উদ্দিন দলীয় প্রার্থীর নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে সরাসরি বিদ্রোহী প্রার্থী ইব্রাহিম খলিলের আনারস প্রতীকের পক্ষে সভা-সমাবেশ, গণসংযোগ ও উঠোন বৈঠকে অংশ নিয়ে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে আনারস প্রতীকে ভোট চাচ্ছেন।
আরও পড়ুন…বরগুনায় বিএনপির গণ-মিছিলে পথে পথে পুলিশের বাঁধা
তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, আলম মাস্টার, মোহাম্মদ উল্যাহ কোম্পানী, ইমাম উদ্দিন মাস্টার ও মিরাজ উদ্দিন। মাঞ্জুরুল হাসান মঞ্জু নিজেই বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ভোট করছেন। তাই তাদের সাতজনকেই দলের সাংগঠনিক পদবী থেকে অব্যাহতি দিয়ে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়।
ইবাংলা/জেএন/২৪ডিসেম্বর, ২০২২
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.