২০২৩ সালের প্রথম দিনে, সারা বিশ্বের মানুষ একসাথে নতুন বছরের প্রথম সূর্যের রশ্মিকে স্বাগত জানায় এবং যৌথভাবে শান্তি ও উন্নয়নের জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেয়। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং আগের দিন বিশ্ববাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। তিনি তাঁর শুভেচ্ছাবার্তায় জোর দিয়ে বলেন, আজকের চীন বিশ্বের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত এবং আগামীকালের চীন আরও উন্নত হবে। তিনি বিশ্বের শান্তি, সৌন্দর্য, ও সুখ কামনা করেন।
বিশ্ব ভালো থাকলে চীন ভালো থাকবে, চীন ভালো থাকলে বিশ্ব ভালো থাকবে-এটাই চীনের সরল কিন্তু গভীর বিশ্বদৃষ্টি। গত বছর চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ২০তম জাতীয় কংগ্রেস সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়। একে বিদেশী গণমাধ্যমগুলো ‘চীনের জন্য বছরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা’ হিসাবে আখ্যায়িত করে।
২০তম জাতীয় কংগ্রেস চীনকে সার্বিকভাবে উন্নত সমাজতান্ত্রিক দেশ হিসেবে গড়ে তোলার পথে একটি নতুন যাত্রাস্বরূপ; এটি একটি উন্নত ভবিষ্যতের জন্য বিশ্বের সাথে চীনের হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করার একটি নতুন সূচনাবিন্দু।
আরও পড়ুন…নড়াইলে জাতীয় সমাজসেবা দিবস পালিত
গত বছর চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হিসাবে তার অবস্থান বজায় রাখে। এ সময় দেশটির জিডিপি ১২০ ট্রিলিয়ন ইউয়ান ছাড়িয়ে গেছে বলে আশা করা হচ্ছে। গেল বছর দারিদ্র্যবিমোচনের সাফল্যের পথ ধরে চীন গ্রামীণ পুনরুজ্জীবনের পথে দৃঢ়পদে সামনে এগিয়েছে; চীনা মহাকাশকেন্দ্রের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে; তৃতীয় বিমানবাহী রণতরী “ফুচিয়ান” সাগরে ভেসেছে।
নিজস্ব প্রযুক্তিতে দেশে তৈরি প্রথম সি-৯১৯ বৃহৎ বিমানের আনুষ্ঠানিক হস্তান্তর সম্পন্ন হয়েছে; পাইহ্যথান হাইড্রো পাওয়ার স্টেশন সম্পূর্ণভাবে চালু হয়েছে। ২০২২ সালে, যখন বিশ্ব অর্থনীতি মন্দার মধ্যে ছিল, চীনের অর্থনীতি স্থিতিস্থাপকতা, দুর্দান্ত সম্ভাবনা ও প্রাণশক্তি দেখিয়েছে। চীনের অথর্নীতি এখনও বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সবচেয়ে শক্তিশালী চালিকাশক্তি।
গত বছর মহামারী বারবার আঘাত হেনেছে; ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট আঘাত হেনেছে বিশ্বব্যাপী। কিন্তু চীন এই অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে, যা সবার জন্য সহজ ছিল না। এ সময় মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ একটি নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করে।
গত বছর আঞ্চলিক সার্বিক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (আরসিইপি) থেকে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হয়।
বছরের প্রথম ১১ মাসে ১৪টি আরসিইপি সদস্যদেশের চীনের সঙ্গে আমদানি ও রপ্তানি বেড়েছে ৭.৯ শতাংশ। চীন‘জীববৈচিত্র্য কনভেনশন’-এর কপ১৫-এর সভাপতিদেশ হিসেবে,‘ খুনমিং-মন্ট্রিল বিশ্ব জীববৈচিত্র্য কাঠামো-র জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়। বহুপাক্ষিকতার পক্ষে চীন বরাবরের মতোই ছিল সোচ্চার; মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গঠনের কাজ আরও সামনে এগিয়েছে।
২০২৩ হবে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ২০তম জাতীয় কংগ্রেসের চেতনা সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়নের প্রথম বছর এবং একটি আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দেশ হিসেবে চীনকে গড়ার নতুন যাত্রা শুরু হওয়ার প্রথম বছর। এই বছর চীন সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের ৪৫তম বার্ষিকী পালন করবে এবং এ বছরই “বেল্ট অ্যান্ড রোড” উদ্যোগ দশম বছরে পদার্পণ করবে।
প্রেসিডেন্ট সি জোর দিয়ে বলেছেন, আগামীর চীনে, সংগ্রাম অলৌকিক ঘটনা সৃষ্টি করবে, ঐক্য থেকে শক্তি আসবে, এবং তরুণদের ওপর আশা রাখা যাবে।
আরও পড়ুন…নড়াইলে সেনাপ্রধান এর শীতবস্ত্র বিতরণ
নতুন বছরের ঘণ্টা বেজেছে, নতুন বছরের রোদ সারা বিশ্বে ঝলমল করছে। অদম্য ও দৃঢ়চিত্ত চীনা জনগণ চীনকে আগামীর জন্য আরও উন্নত করবে। চীন বিশ্বকে সাথে নিয়ে জয়ী হবে; বিশ্বের সমৃদ্ধি ও উন্নয়নে আরও ইতিবাচক শক্তি যোগাবে। সূত্র: স্বর্ণা,সিএমজি।
ইবাংলা/জেএন/২ জানুয়ারি, ২০২৩
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.