দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বুধবার (৪ জানুয়ারি) লেনদেনের নতুন আরেকটি বোর্ড চালু হচ্ছে। অলটারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড (এটিবি) বা বিকল্প লেনদেন বোর্ড নামের নতুন এ বোর্ডের যাত্রা শুরু হচ্ছে নতুন দুটি প্রতিষ্ঠান নিয়ে। প্রতিষ্ঠান দুটি হলো ব্রোকারেজ হাউস লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ ও প্রাণ অ্যাগ্রো লিমিটেড।
নতুন লেনদেন বোর্ডের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম। ডিএসইর ওয়েবসাইটে এটিবি নামে আলাদা উইন্ডোতে থাকবে এ বোর্ড। এর আগে এসএমই বোর্ড নামে ডিএসইতে আলাদা একটি বোর্ড চালু হয়েছিল।
আরও পড়ুন…ফেনীতে ভোক্তা অধিকার আইনে ১ বছরে ৪১ লাখ টাকা জরিমানা
এটিবিতে লংকাবাংলা সিকিউরিটিজের প্রতিটি শেয়ারের লেনদেন শুরু হবে ১৪ টাকা ৯০ পয়সায়। প্রতিষ্ঠানটির মোট শেয়ারসংখ্যা ২৪ কোটি ৮৩ লাখ ৬৮ হাজার ৩২৬। এর মধ্যে ৯২ শতাংশের বেশি শেয়ারের মালিকানা লংকাবাংলা ফিন্যান্সের হাতে। ৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে লংকাবাংলা ফিন্যান্সের সহযোগী প্রতিষ্ঠান লংকাবাংলা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের হাতে।
ডিএসই সূত্রে জানা যায়, বাকি ৩ শতাংশ শেয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির হাতে। লেনদেন শুরুর প্রথম ৩০ কার্যদিবসে মধ্যে নিজেদের হাতে থাকা শেয়ারের মধ্য থেকে ১০ শতাংশ শেয়ার বাজারে বিক্রি করবে লংকাবাংলা ফিন্যান্স। এর মধ্যে প্রথম দুই দিনে এটিবিতে লংকাবাংলা সিকিউরিটিজের শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ করে বাড়তে পারবে।
আর তৃতীয় কার্যদিবস থেকে বাড়তে পারবে প্রতিদিন ৫ শতাংশ। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ২০১০ সালে শেয়ারবাজার ধসের আগে প্রথম ব্রোকারেজ হাউস হিসেবে লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার উদ্যোগ নেয়। ওই সময় প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি কিছু শেয়ারও বিক্রি করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছ থেকে শেয়ার ছাড়ার অনুমতি পায়নি।
আরও পড়ুন…মির্জা ফখরুল-আব্বাসের জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন রাষ্ট্রপক্ষের
সম্প্রতি ডিএসই এটিবি চালুর উদ্যোগ নিলে লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ সেখানে তালিকাভুক্ত হওয়ার আগ্রহ দেখায়। সেই সুবাদে দেশের শেয়ারবাজারে লংকাবাংলা সিকিউরিটিজই হলো শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রথম ব্রোকারেজ হাউস।
এ ছাড়া এটিবিতে তালিকাভুক্ত হওয়া প্রাণ অ্যাগ্রো লিমিটেডের বন্ডের প্রতি ইউনিটের দাম ১০ লাখ টাকা।
সেই হিসাবে এটির একটি ইউনিট কিনতেই আগ্রহী বিনিয়োগকারীদের ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। তবে ডিএসই–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এটিবি বোর্ডে তালিকাভুক্ত হলেও প্রাণ অ্যাগ্রো বন্ডের নিয়মিত লেনদেন হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ, বন্ডটির পুরোটাই বহুজাতিক বিমা কোম্পানি মেটলাইফ বাংলাদেশের হাতে। তাই মেটলাইফের পক্ষ থেকে বন্ডটি বিক্রির উদ্যোগ নিলেই কেবল এটির লেনদেন হবে এটিবিতে।
বিএসইসি সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে বন্ড ছেড়ে ২১০ কোটি টাকা পুঁজি সংগ্রহ করে প্রাণ অ্যাগ্রো লিমিটেড। ওই বন্ডের পুরোটা কিনেছে মেটলাইফ বাংলাদেশ। এককভাবে বেসরকারি কোনো কোম্পানির বন্ডে মেটলাইফ বাংলাদেশের এটিই সর্বোচ্চ বিনিয়োগ। আবার ব্যাংক খাতের বাইরে বেসরকারি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের বন্ডের মাধ্যমে একটি বিমা কোম্পানির কাছ থেকে এককভাবে এ পরিমাণ অর্থ সংগ্রহের উদাহরণও খুব বেশি নেই।
আরও পড়ুন…নিজ অস্ত্রের গুলিতে বিজিবি সদস্যের আত্মহত্যা
বন্ড হচ্ছে একধরনের ঋণপত্র। এ ঋণপত্র বিক্রি করে এক প্রতিষ্ঠান অন্য প্রতিষ্ঠান ও সম্পদশালী ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে ব্যবসার প্রয়োজনে। যারা বন্ডে বিনিয়োগ করে, তাদের নির্ধারিত হারে সুদ দেওয়া হয়। এই সুদহারকে কুপন রেটও বলে। মেয়াদি বন্ডের ক্ষেত্রে মেয়াদ শেষে বিনিয়োগকারী তার বিনিয়োগ করা মূল অর্থ ফেরত পায়।
ইবাংলা/জেএন/৪ জানুয়ারি, ২০২৩
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.