রাষ্ট্রপতি পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু।রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে আল্লাহকে স্মরণ করলেন আওয়ামী লীগের এই উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য।
রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে ওবায়দুল কাদেরসহ আওয়ামী লীগের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতাকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন কমিশনে গিয়ে নিজের সই করা মনোনয়নপত্র জমা দেন চুপ্পু।পরে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের একের পর এক অনুরোধের মধ্যে তিনি একটি বাক্য উচ্চারণ করে বলেন, ‘সবই আল্লাহর ইচ্ছা।’
এদিকে মনোনয়নপত্র জমার আনুষ্ঠানিকতা শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, দলের প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতি পদে মো. সাহাবুদ্দিনকে মনোনীত করেছেন।সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তাদের মনোনীত প্রার্থীই হচ্ছেন পরবর্তী রাষ্ট্রপতি, এটি মোটামুটি নিশ্চিত। বিরোধী দল জাতীয় পার্টি প্রার্থী না দেওয়ার কথা আগেই জানিয়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুন…দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ১৯ ফেব্রুয়ারি
মনোনয়নপত্র যাচাই হবে ১৩ ফেব্রুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৪ ফেব্রুয়ারি। সংসদ ভবনে ভোট গ্রহণ হবে ১৯ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। অবশ্য রাষ্ট্রপতি পদে একক প্রার্থী হলে ভোটের প্রয়োজন হবে না। সে ক্ষেত্রে ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রার্থিতা প্রত্যাহারের দিনেই একক প্রার্থীকে রাষ্ট্রপতি পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।
সংবিধান অনুয়াযী, রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ থেকে ৫ বছরের জন্য পদে অধিষ্ঠিত থাকেন। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দ্বিতীয় মেয়াদ পূর্ণ হচ্ছে আগামী ২৪ এপ্রিল। পরপর দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হয়েছেন তিনি। দেশের সংবিধান অনুযায়ী, তার আর রাষ্ট্রপতি হওয়ার সুযোগ নেই। এ কারণে নতুন কাউকে দেখা যাবে তার জায়গায়। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত ১৭ জন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এই নির্বাচনের মাধ্যমে ১৮তম ব্যক্তি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিন আহমদ চুপ্পু দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেবেন।
সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী, আগামী ২৩ এপ্রিলের মধ্যেই ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেবেন মো. সাহাবুদ্দিন আহমদ চুপ্পু। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২৩ এপ্রিল।
উল্লেখ্য, পাবনার সন্তান মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর জন্ম ১৯৪৯ সালে। ছাত্রজীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণকারী সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) ক্যাডার হিসেবে যোগ দেন। বিচারকের বিভিন্ন পদে চাকরি শেষে ২৫ বছর পর ২০০৬ সালে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসর নেন।
আরও পড়ুন…ভূমিকম্পের মাত্রা ৮’র ঝুঁকিতে বাংলাদেশ
২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পরপরই আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর উপর হামলা হয়। যাতে হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের ঘটনা ঘটে। পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ওসব ঘটনার তদন্তে কমিশন’ গঠন করেন, যার প্রধান ছিলেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ইবাংলা/টিএইচকে
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.