বেনাপোল বন্দর দিয়ে রপ্তানিকৃত মাছের ট্রাক থেকে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে বিপুল পরিমাণের স্বর্ণ উদ্ধার হওয়ায় ট্রাকের ড্রাইভার ও আমদানিকারকের প্রতিনিধিকে আটকের প্রতিবাদে অনিদিষ্ঠকালের জন্য রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ ঘোষণা করেছেন পেট্রাপোল বন্দর ব্যবহারকারি বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
ফলে, শনিবার সকাল থেকে রপ্তানি বাণিজ্যের সকল ধরণের কর্মকান্ড বন্ধ রয়েছে। তবে আমদানি বাণিজ্যসহ বেনাপোল বন্দর ও কাস্টমসের সকল ধরণের পণ্য লোড-আনলোড কার্যক্রম স্বাভাবিক নিয়মে চলছে।
আরও পড়ুন>>>সিরাজগঞ্জে মসজিদের জমি নিয়ে দু’গ্রুপের সংঘর্ষ
জানা যায়, ইতিমধ্যে পেট্রাপোল বন্দর ব্যবহারকারি বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা হয়রানীমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্তে মুক্তিসহ পেট্রাপোল বন্দরের প্রবেশমুখে ২টি স্ক্যানার মেশিন স্থাপনের দাবিতে দফায় দফায় বিএসএফ, পুলিশ, কাস্টম, বন্দরসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেছেন। সেখানে আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় এ কর্মবিরতির ডাক দেন ভারতীয় বন্দর ব্যবহারকারী এসকল সংগঠন।
এদিকে রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ থাকায় বেনাপোল বন্দর এলাকাসহ আশেপাশের দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে জনদূর্ভোগ বেড়েছে। রপ্তানিকারকদের পন্যবাহী ট্রাক রাস্তার উপর দাড়িয়ে থাকায় পন্যবাহী ট্রাক প্রতি বিপুল পরিমাণের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন রপ্তানিকারকরা। বলছেন, এভাবে পণ্যবোঝাই ট্রাক রাস্তার উপর দাড়িয়ে থাকলে ট্রাকের ভাড়া প্রতিদিনই বাড়ছে। সেসাথে নাইটগার্ড ও বন্দর ভাড়াতো আছেই।
আরও পড়ুন>>>প্রয়োজনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তন: আইনমন্ত্রী
বেনাপোল কাস্টমস ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং (সিএন্ডএফ) এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান ভোরের কাগজ প্রতিনিধিকে জানান, গত ১৮ মার্চ সাতক্ষীরার মোস্তফা অরগানিক নামক একটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ৩ টন তেলাপিয়া মাছ রপ্তানি করেন ভারতে। সেখানে পণ্য খালাসের সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাছবাহী ওই ট্রাক থেকে ৪ কেজি ওজনের ৪০টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করেন ভারতের পেট্রাপোল ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা।
এ ঘটনায় বাংলাদেশি ট্রাক চালক সুশঙ্কর দাস ও ভারতীয় আমদানিকারকের প্রতিনিধি সুব্রত রায় লাল্টু নামে এক সিএন্ডএফ এজেন্ট কর্মচারিকে আটক করেছেন বিএসএফ। পরে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে মামলাসহ বনগাঁ থানায় প্রেরণ করেন।
আরও পড়ুন>>>সাত মাস পর রেমিট্যান্স ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল
এ ঘটনায়, মিথ্যা মামলা থেকে তাদেরকে মুক্তিসহ পেট্রাপোল বন্দরের প্রবেশমুখে ২টি আধুনিক স্ক্যানার মেশিন স্থাপনের দাবিতে অনির্দিষ্ঠকালের কর্মবিরতির ডাক দেন ভারতীয় বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠন। এতে এপথ দিয়ে বন্ধ হয়ে যায় ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে রপ্তানি বাণিজ্য। তবে আমদানি বাণিজ্য স্বাভাবিক রয়েছে। বেনাপোল বন্দর ও কাষ্টমসের সকল কাজ সচল রয়েছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক (ট্রাফিক) আব্দুল জলিল জানান, ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের বিভিন্ন সংগঠনের ডাকা কর্মবিরতিতে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। তবে আমদানি বাণিজ্য স্বাভাবিক রয়েছে। বিষয়টি ভারতীয় কর্তৃপক্ষের বলে জানান তিনি।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে স্বর্ণ চোরাকারবারিরা সহজ পন্থায় রপ্তানি পণ্যের মধ্যে করে ভারতে পাঁচার করছে স্বর্ণ। মাঝে মধ্যে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভারতের পেট্রাপোল পুলিশ ও বিএসফ সদস্যরা দু’একটি স্বর্ণের চালান আটক করায় তারা রপ্তানি বাণিজ্যটাকে একটু ঝুকিপূর্ণ মনে করছে। যেকারণে রপ্তানী পণ্যবাহী প্রত্যেকটি ট্রাক ওপারের প্রশাসনের নজরদারিতে থাকায় দিনদিন পণ্য রপ্তানিতে জটিলতা দেখা দিচ্ছে।
ইবাংলা/ টিএইচকে
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.