গাজীপুর সিটি করপোরেশনে চলছে ভোটগ্রহণ। এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৩৩৩ জন প্রার্থী। তার মধ্যে আটজন মেয়র, ৭৯ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর এবং ২৪৬ জন লড়ছেন সাধারণ কাউন্সিলর পদে। দেশের সব থেকে বড় এই সিটি করপোরেশনে ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। দিনব্যাপী ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন তারা। তবে এদিন বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোট দিতে গিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন অনেকে। শতভাগ ইভিএম নির্ভর এই নির্বাচনে ফিঙ্গারপ্রিন্টে দেখা দিয়েছে ধীরগতি। ফলে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন ভোটাররা।
এদিকে বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সকালে কেন্দ্রে গিয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্ট না মেলায় ভোট দিতে পারেননি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আজমত উল্লা খানের বড় ভাই আব্দুর রহমান খান (৭৭)। অবশ্য ভোট দিতে এসে একই বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে নৌকার প্রার্থীকেও।
আরও পড়ুন>> ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে, অনিয়ম হলে ব্যবস্থা: ইসি আলমগীর
এই বিষয়ে আজমত উল্লা খান বলেন, বড় ভাইয়ের ভোট দিতে একটু ঝামেলা হয়েছে। স্মার্ট কার্ড আনতে গেছে। সেটি আনলেই ভোট দিতে পারবে। একইসঙ্গে কোনো ভোটারের যদি আঙুল ম্যাচ না করে তাহলে স্মার্ট কার্ড দিয়ে তিনি ভোট দিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন সিটির এই মেয়র প্রার্থী।
আজমত উল্লা খানের ব্যক্তিগত সহকারী (অস্থায়ী) শাহজাহান তপন বলেন, আজমত উল্লা খানের বড় ভাইয়ের বয়স প্রায় ৭৭ বছর। এজন্য আঙুলের ছাপ না মেলায় ভোট দিতে সমস্যা হয়েছে। তবে পরে স্মার্টকার্ড দিয়ে তিনি ভোট দিয়েছেন।
অন্যদিকে গাজীপুরে সিটি করপোরেশনে নির্বাচন নিয়ে কোনো অভিযোগে নেই বলে জানিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন। তবে ইভিএমে ধীরগতিতে ভোট হচ্ছে জানিয়ে কিছুটা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি। গাসিকের এই মেয়র প্রার্থী বলেন, ভোট দিতে গিয়ে ইভিএম ব্যবস্থায় ধীরগতি দেখা যাচ্ছে। অনেকেই ভোট দিতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ছেন।
সরেজমিনে ঘুরে প্রতিবেদকরা জানিয়েছেন, সকাল থেকে সুষ্ঠুভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন ভোটাররা। তবে কারও কারও ফিঙ্গারপ্রিন্ট না মেলায় ভোট প্রয়োগে দেরি হচ্ছে। কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্র সাথে থাকলে ফিঙ্গারপ্রিন্ট না মিলেলেও তারা ভোট দিতে পারছেন।
গাসিকে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড রয়েছে। ভোটকেন্দ্র রয়েছে ৪৮০টি। যার মধ্যে মোট ভোট কক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি। তবে ৪৮০টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৫১টিকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আর সেই ঝুঁকি মোকাবিলায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
আরও পড়ুন>> ঢাকায় বসে সিসি ক্যামেরায় গাজীপুরের ভোট দেখছে ইসি
এদিকে ঢাকা থেকে সিসি ক্যামেরায় গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন মনিটরিং করা হচ্ছে। আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের পঞ্চম তলায় কন্ট্রোল রুমে ভোটগ্রহণের শুরুর সময় সকাল ৮টা থেকে ভোট মনিটরিং করা হচ্ছে। এই নির্বাচন ৪ হাজার ৪৩৫টি সিসি ক্যামেরায় ভোটগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
১৮টি ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ডের মাধ্যমে একই সঙ্গে ৪৬৬টি সিসি ক্যামেরায় ৪৬৬টি ভোট কক্ষ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। প্রতি ডিসপ্লে ১০ সেকেন্ড পরপর অটো রোটেড করে এভাবে ৪ হাজার ৪৩৫টি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা দ্বারা ভোটগ্রহণ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
সিটি নির্বাচনে অস্থায়ী ভোট কক্ষ রয়েছে ৪৯১টি। প্রতিটি ভোট কক্ষে একটি করে আর কেন্দ্র প্রতি দুটি করে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। নির্বাচনে এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে ভোটগ্রহণ চলবে।
ইবাংলা/এসআরএস
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.