নিজের পথচলা সহজ ছিল না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অনেক চড়াই-উৎরাই, ঘাত-প্রতিঘাত, গুলি, বোমা, গ্রেনেড হামলা, অনেক কিছুর মুখোমুখি হতে হয়েছে আমাকে। তারপরও আমি হাল ছাড়িনি। যার ফলে আজকে বলতে পারি বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
রোববার (১১ জুন) সকালে নিজ কার্যালয়ের শাপলা হলে এক অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এদিন মাধ্যমিক থেকে স্নাতক (পাস) ও সমমান পর্যায়ের অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও টিউশন ফি বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ-২০২৩ এর সেরা মেধাবী পুরস্কার এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কলার অ্যাওয়ার্ড-২০২২ শিক্ষার্থীদের মধ্যে তুলে দেন সরকারপ্রধান।
আরও পড়ুন>> খালেদা জিয়া সুস্থ হলে বাকি সাজা খাটতে হবে: আইনমন্ত্রী
বিএনপির সময় ক্যাম্পাসে ছিল সেশনজট, অস্ত্রের ঝনঝনানি। বোমা গুলির শব্দ না শুনে ছাত্র-ছাত্রীরা ঘুমাতে পারতো না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর শিক্ষাঙ্গনে আর এমন অবস্থা নাই।
নিজের প্রত্যয় ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি আজ আশাবাদী এদেশকে আর কেউ পেছনে টেনে নিয়ে যেতে পারবে না। আবার অন্ধকার যুগে নিয়ে যেতে পারবে না। গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত আছে বলেই এদেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
শিক্ষা বিস্তারে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেখানে আমাদের স্বাক্ষরতার হার ৪৫ শতাংশ ছিল সেটাকে আমরা ৬৫.৫ শতাংশে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছি। তবে আবার আট বছর পর অর্থাৎ ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০০৯ সালে যখন সরকার গঠন করি তখন তখন আবার আমরা সেই পুরনো জায়গায় ফিরে গেছি। আবার সেই ৪৫ ভাগে চলে গেছি। ৪৫ না আরও একভাগ কম। যাই হোক তারপর আমরা উদ্যোগ নিই। সেই সাথে সাথে শিক্ষা নীতিমালা প্রণয়নের জন্য আবার নতুন করে পদক্ষেপ নিই এবং আমরা প্রথম শিক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন করি।
শিক্ষাখাতে বঙ্গবন্ধুর অবদান তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর একটা কথা তিনি বলতেন যে দারিদ্র বিমোচনের জন্য শিক্ষাই হচ্ছে মূল হাতিয়ার। শিক্ষা ছাড়া একটা জাতি দারিদ্রমুক্ত হতে পারে না। তাই তিনি ড. কুদরতই খুদাকে প্রধান করে একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করে দেন। যাতে করে আমাদের দেশে বাস্তবমুখী শিক্ষা প্রণয়ন হয় এবং দেশের প্রতিটি মানুষ যেন শিক্ষার আলো পায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রায় ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষাকে তিনি (বঙ্গবন্ধু) জাতীয়করণ করে দেন। মেয়েদের শিক্ষা অবৈতনিক করে দেন, স্কুল-কলেজগুলো আবার পুনরায় চালু হয়। শিক্ষার অর্থ ব্যয়কে তিনি মনে করতেন এটা একটা বিনিয়োগ। এদেশের মানুষ শিক্ষিত হবে, উন্নত জীবন পাবে, এটাই ছিল তার একমাত্র স্বপ্ন। আমরা তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে আজকে কাজ করে যাচ্ছি।
আরও পড়ুন>>ঢাকাসহ ৮ বিভাগেই ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস
বিএনপি শাসনামলের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বিএনপির সময় ক্যাম্পাসে ছিল সেশনজট, অস্ত্রের ঝনঝনানি। বোমা গুলির শব্দ না শুনে ছাত্র-ছাত্রীরা ঘুমাতে পারতো না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর শিক্ষাঙ্গনে আর এমন অবস্থা নাই।
আমি আজ আশাবাদী এদেশকে আর কেউ পেছনে টেনে নিয়ে যেতে পারবে না। আবার অন্ধকার যুগে নিয়ে যেতে পারবে না। গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত আছে বলেই এদেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
সবদিক থেকে দেশ এগিয়ে গেলেও স্বাস্থ্যখাতের গবেষণায় আমরা পিছিয়ে রয়েছি মন্তব্য করে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের গবেষণার ক্ষেত্রে এখন আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা কৃষিতে যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছি। কিন্তু বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে আমরা এতটা করতে পারছি না। বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে আরও গবেষণার প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।
শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব পরিবর্তনশীল, এই পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে আমাদের তাল মিলিয়ে চলতে হবে। আজকে প্রযুক্তির যুগ, বিজ্ঞানের যুগ, গবেষণার যুগ। আমি ২১ বছর পর যখন ক্ষমতা পেলাম, তখন আমি শিক্ষাকে বেশি গুরুত্ব দিলাম। একটা প্রজেক্ট নিয়েছিলাম নিরক্ষরমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলব। শিক্ষার্থীরাই শুধু শিক্ষা পাবে তা না, বয়স্করাও যাতে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে, এক একটা জেলাকে নিরক্ষরমুক্ত ঘোষণা দিয়ে অনেকটা সফল হয়েছিলাম। পাঁচ বছর পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল তারা এ প্রকল্প বাদ করে দেয়।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
ইবাংলা/এসআরএস
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.